ঢাকা, রবিবার, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮ রমজান ১৪৪৬

খেলা

থেমে নেই ব্লাটার, থেমে নেই সমালোচনা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৫
থেমে নেই ব্লাটার, থেমে নেই সমালোচনা

ঢাকা: ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-ফিফা’র সভাপতি হিসেবে ফের জয়ী হয়েছেন সেপ ব্লাটার। পঞ্চম মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার দৌড়ে ব্লাটার জর্দানের প্রিন্স আলি বিন আল হুসেইনকে হারিয়েছেন।

তবে, জয়ী হলেও বিতর্কিত ব্লাটারকে নিয়ে আলোচনার চেয়ে সমালোচনাটাই হচ্ছে বেশি।

প্রথমবার ৫৮ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন ব্লাটার। এবার ৬৪ শতাংশ ভোট পেয়ে পঞ্চমবারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন ব্লাটার। গতবার ছিল ৯১ শতাংশ। আর ২০০২ সালে ৭১ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে ফিফা সদস্যভূ্ক্ত ২০৭ দেশের মধ্যে মাত্র ৬৬ সদস্য তাকে মনোনীত করে। ফলে, ফুটবলে তার একক আধিপত্য আবারও প্রমানিত হলো।

নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে কোটি কোটি ডলার ঘুষ কাণ্ডে গ্রেফতার হয় ফিফার সাত শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা। সেই সঙ্গে ঘুস কেলেঙ্কারির দায়ে আরো ১৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে ব্লাটার যতই নিজেকে নির্দোষ বলুক না কেন তা মানতে রাজি নন বিশ্ব ফুটবলের অনেকে।

ব্লাটারের জয়ের কাছে ‘ফুটবল হেরেছে’ বলে জানিয়েছেন পর্তুগালের সাবেক কিংবদন্তি ফুটবলার লুইস ফিগো।

আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে ব্লাটারের বিপক্ষে আমেরিকা, ইউরোপ বিরোধিতা করেছিল। তবে, আফ্রিকার আর এশিয়ার দেশ গুলোর বিপুল ভোটের কারণে ব্লাটারকে থামানো যায়নি। জয়ের পর বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি জানি এ পদের জন্য আমি সঠিক ব্যক্তি নই। কিন্তু কেউই সঠিক ব্যক্তি নয় এ পদের জন্য। নিজেই যেখানে ফিফার সর্বোচ্চ পদে থাকতে সাহস করেন না, সেখানে কি করে পঞ্চমবারের মতো সমালোচনা থাকার পরও নির্বাচিত হলেন ব্লাটার? এমন প্রশ্ন বিশ্ব ফুটবলে।

২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপ আর ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ নিয়েও কম সমালোচিত হন নি ব্লাটার। নিজের খামখেয়ালি পূর্ণ সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করতে তিনি নানা সময় সমালোচনার মুখে পড়েন। ইউরোপের লোক হয়ে যেমন ব্লাটার সেখানের দেশগুলো থেকে সাড়া পাননি, তেমনি এশিয়ার লোক হয়েও এশিয়া মহাদেশে উপেক্ষিত থেকে যান আল হুসেইন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গুলো বলছে, ব্লাটারের পেছনে কাজ করে চলেছে বিভিন্ন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান।

প্রায়ই বিতর্কজালে নিজেকে জড়ানো ব্লাটার এর আগে বলেছিলেন, আরও বেশি মহিলা খেলোয়াড় তৈরি করা উচিত। তাদের স্বল্প পোষাকে মাঠে নামানো হলে পুরুষ দর্শক আকৃষ্ট হয়ে মাঠে আসবে ও গণমাধ্যমে আলোচিত হবে। শুধু তাই নয় ব্লাটারের বিপক্ষে নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোট বানিজ্যে অর্থ প্রদানের মতো গুরুতর দোষ প্রমানিত হয়েছিল। এছাড়া আফ্রিকান ফুটবল কনফেডারেশন ও সোমালী ফুটবল ফেডারেশনের কাছ থেকে অর্থগ্রহনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এদিকে বাতাসে গুঞ্জন উঠেছে ব্লাটারের সভাপতি হওয়ার পর ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশন আসন্ন বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবে। এমনকি আমেরিকার বেশ কিছু স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ফুটবল অঙ্গনের মেগা ইভেন্ট বর্জন করবে।

জুরিখে অনুষ্ঠিত ফিফার ৬৫তম কংগ্রেসে ২০৯টি ভোটের মধ্যে ব্লাটার পান ১৩৩টি ভোট। ব্লাটারকে চ্যালেঞ্জ জানানো আল হুসেইন পান ৭৩টি ভোট। বাকি তিনটি ভোট বাতিল বলে গন্য হয়। ফিফা’র সভাপতি হওয়ার জন্য প্রথম দফা ভোটে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন ছিল। সেটি না হওয়ায় দ্বিতীয় দফা ভোটের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু, দ্বিতীয় দফা ভোটের কোনো সুযোগ না নিয়ে আল হুসেইন নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন। ফলে, পুনরায় ফিফা’র সভাপতি পদে বহাল থাকেন ব্লাটার।

নির্বাচনে জয় লাভের পর ব্লাটার বলেন, আপনারা আমাকে জানেন, নতুন করে আমার পরিচয় আর দিতে চাই না। সবাইকে ভোট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এখন থেকে ফিফার নতুন মিশন শুরু করতে আমি প্রস্তুত।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ৩০ মে ২০১৫
এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।