পূর্ব খাসি পাহাড়ের এ মাওলিনং গ্রামকে বলা হয়, ‘ঈশ্বরের নিজস্ব বাগান’। ২০০৩ সালে এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয় মাওলিনংকে।
গ্রামের মানুষেরাই সমিতির মাধ্যমে এটিকে অনুকরণীয় গ্রামে পরিণত করেছেন, যেখানে পরিবেশবান্ধব পর্যটনের ব্যবস্থা রয়েছে। সকলের চেষ্টায়ই ছবির মতো গ্রামটি তৈরি সম্ভব হয়েছে।
পাশের গ্রাম রিওয়াইয়ের সঙ্গে মাওলিনং একটি জীবন্ত শেকড়ের সেতু দিয়ে সংযুক্ত। গ্রামে শিলাখণ্ডও চোখে পড়ে, যেগুলো একটির ওপর আরেকটি গায়ে গায়ে লেগে আছে।
মাওলিনং গ্রামের ক্ষেত্রে একটি প্রবাদ খুবই প্রচলিত। সেটি হলো- ‘প্রতিবেশীর হিংসায় মালিকের গর্ব’। কারণ, প্রত্যেক গ্রামবাসী মাওলিনং গ্রামের সদস্য হিসেবে নিজেদের নিয়ে গর্ববোধ করেন।
গ্রামটি পাহাড়ের ওপর থেকে ঢাল বেয়ে বেয়ে নিচে নেমে গেছে। গ্রামের পথ পাহাড় বেয়ে ওঠা-নামা করেছে। পথের ধারে বাঁশের তৈরি ডাস্টবিন রয়েছে। পাহাড় বেয়ে ওঠা-নামার সময় বাঁশের মাচায় একটু জিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। সেখানে চায়েও চুমুক দেওয়া যায়। সঙ্গে বিস্কুট বা হালকা নাস্তাও জুটবে।
এ গ্রামে শিক্ষার হার শতভাগ। আর পর্যটকদের সেবা দিতে অভিজ্ঞ ছেলে-বৃদ্ধ সকলেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার মতো ইংরেজিতেও দক্ষ।
মাওলিনংয়ে পর্যটকদের জন্যে রয়েছে রাত্রিবাসের সুবিধাও। ইউরোপীয়ানরা এখানে কয়েক সপ্তাহ কাটিয়ে চলে যান। নিরিবিলি এ সবুজ প্রকৃতিতে নিজেকে খুঁজে পেতে মাওলিনংকে যে কেউ বেছে নেবেন।
মাওলিনংয়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিস্তৃত বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল। মাওলিনং থেকে দেখা বাংলাদেশ অপরুপ, তাকিয়ে থাকা যায় অনেক সময় ধরে।
এ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা। শিশুরা চতুর্থ শ্রেণির মধ্যেই শিখে যায়, তাদের বাড়ির আশপাশ পরিস্কার রাখার প্রয়োজনীয়তা এবং কৌশল।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
এমএন/ওএইচ/এএসআর