চাঁপাইয়ের ম্যাঙ্গো ট্যুরিজম একসময় এগোচ্ছিলো না আবাসন সংকটের কারণে। ভালো হোটেল-মোটেল বা রেস্তোরাঁ ছিল না একেবারেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, কানসাট, সোনা মসজিদ প্রভৃতি এলাকার বড় বড় আম বাগান ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পর্যটকদের সব রকমের সুযোগ-সুবিধা দিতে তারা প্রস্তুত। প্রশাসন যদি এগিয়ে আসে তাহলে তারাও সব রকম সহযোগিতা করবে।
হেক্টরের পর হেক্টর জায়গাজুড়ে এ জেলায় আমবাগান। রয়েছে শতবর্ষী আম গাছের বাগানও। ব্রিটিশ আমলেও সেসব আম গাছ এখন আম দিচ্ছে। বাগানগুলোর সৌন্দর্যও অবর্ণনীয়। সাজানো বাগানগুলোতে ঝুলছে লোভনীয় আম। যতদূর চোখ যায় বাগান ছাড়া অন্য কিছু দেখা যায় না। এছাড়া আম পাড়া, পরিচর্যা, ফ্রুটব্যাগিং, রপ্তানি প্রক্রিয়া, রাত্রিকালীন পাহারা- সব মিলিয়ে দেখার রয়েছে অনেককিছু। সঙ্গে এ জেলায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী সোনা মসজিদ, ইলা মিত্রের বাড়ি, সিল্ক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর থেকেই জেলা প্রশাসন চেষ্টা করছে ট্যুরিজম উইক করার। যেখানে ট্যুরিস্টরা এসে বাগানে থাকবে-খাবে, বাগান থেকেই আম কিনবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। ব্যবসায়ীরাও এতে সহযোগিতা করছেন। এ বছর ঈদের পর ট্যুরিজম উইক ঘোষণা হতে পারে।
ম্যাঙ্গো ট্যুরিজম নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ম্যাঙ্গো সিটি হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ব্র্যান্ডিং করছি। নতুন আইডিয়া আসছে। রোজার পর আমরা ট্যুরিজম উইক ঘোষণা করবো। এছাড়া অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।
পর্যটনের প্রসারের জন্য পর্যটন করপোরেশনকে এরইমধ্যে ৬২ একর খাসজমি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, চাঁপাইয়ের পর্যটন নিয়ে সরকারিভাবে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। ধীরে ধীরে এটা সম্পন্ন হবে। প্রাথমিকভাবে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে ওই জমিতে একটি ওয়াচ টাওয়ার ও একটি ম্যাঙ্গো মিউজিয়াম করার। ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছে গেছে। আগামী অর্থবছরে কাজ শুরু হবে। সেখানে পর্যটকদের জন্য যথেষ্ট বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকবে।
‘আবাসন সংকট কাটাতে সার্কিট হাউসসহ সরকারি আবাসনগুলোতে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে থাকার। মহারাজপুরে গড়ে উঠছে চারতলা একটি আম বাজার। সেখানে আম কেনার পাশাপাশি পর্যটকরা যেন থাকা-খাওয়াসহ অন্য সুযোগ-সুবিধাও পায় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বছরখানেকের মধ্যেই এটা চালু হবে। ’
এই বাজার কেন্দ্র করে ই-কমার্স ব্যবসাও বাড়বে বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক।
মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, সোনা মসজিদ এলাকায় যে পর্যটন মোটেল দুর্ঘটনার জন্য বন্ধ ছিল সেটি আবার সংস্কার করা হচ্ছে। খুব শিগগির চালু হয়ে যাবে। পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টর থেকেও যদি বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসেন তাহলে আরও ভালো হবে। আম ব্যবসায়ীদের নিয়ে তাদের সহযোগিতায় ম্যাঙ্গো ট্যুরিজম আরও এগিয়ে নেওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪০ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৮
এএ/এইচএ/