ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

ল্যাংড়ার চেয়েও সুস্বাদু হবে বারি আম-১২

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৮
ল্যাংড়ার চেয়েও সুস্বাদু হবে বারি আম-১২ গাছে ঝুলে আছে বারি আম-১২। ছবি: মবিনুল ইসলাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে: প্রতিটি আমের ওজন হবে তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ গ্রাম। হবে ল্যাংড়ার চেয়েও সুস্বাদু। এটি নাবি জাতের (দেরিতে ফলন) হওয়ায় আগস্টের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত ফল আহরণ করা যাবে। প্রতিবছরই ফলন দেবে এ প্রজাতির আম গাছ।

বারি আম-১২ সম্পর্কে এমন কথাই শোনালেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হামিম রেজা। তিনি বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র নিয়মিত বিভিন্ন ফল নিয়ে গবেষণা করে আসছে।

তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অর্থনীতি আম নির্ভর হওয়ায় এখানে এ ফল নিয়ে গবেষণাই বেশি হয়।

হামিম রেজা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ৮টিসহ বিভিন্ন জেলার আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র এ পর্যন্ত ১১টি আমের জাত অবমুক্ত করেছে। আমগুলো উচ্চ ফলনশীল, অধিক স্বাদযুক্ত ও আমের ভক্ষণযোগ্য অংশ বেশি। এছাড়া আমগুলোই উল্লেখযোগ্য রোগবালাইমুক্ত এবং এতে পোকা আক্রমণও হয় না।

বারি আম-১২ নিয়ে খুবই উল্লসিত কৃষিবিদ হামিম রেজা। তিনি বলেন, আমগাছের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একবছর পরপর ফলন দেওয়া। ‍কিন্তু এটি প্রতিবছরই ফলন দেবে। তাছাড়া আগস্টের শেষ পর্যন্ত দেশে কোনো আম পাওয়া যায় না। বারি আম নাবি জাতের হওয়ায় এর থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত ফল আহরণ করা যাবে। ফলে আমচাষিরা ভাল মূল্য পাবেন। গাছে ঝুলে আছে ল্যাংড়া আম।  ছবি: মবিনুল ইসলামহামিম রেজা বলেন, এ জাতটি এখনও অবমুক্ত হয়নি। এটির ইভ্যালুয়েশনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। একমাসের মধ্যে ইভ্যালুয়েশন টিম এখানে আসবে। আবেদন গৃহীত হলে এ জাতের আমটি বারি আম-১২ নামে অবমুক্ত (রিলিজ) হবে।

তিনি গবেষণার বর্ণনায় বলেন, নতুন আমের জাত তৈরিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমরা জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করি। অনেক সময় বিদেশ থেকেও জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেটি এককভাবে অথবা দেশি কোনো ভাল জাতের আমের সঙ্গে ক্রস করে। যদি এটি আমাদের দেশের অধিক ইফেক্টিভ হয় তাহলে সেটি নিয়ে দীর্ঘসময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জাতটি অবমুক্ত করা হয়।

আবার কোনো কোনো সময় চান্স সিডলিংয়ের মাধ্যমে নতুন জাত তৈরি হয়। চান্স সিডলিং সম্পর্কে তিনি বলেন, একটি গাছে প্রত্যেকটি বীজই স্বতন্ত্র। বীজ থেকে উৎপন্ন সব গাছ প্রায় কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যের হয়। কোনো কোনো বীজ থেকে উৎপন্ন আম গাছ প্রাকৃতিকভাবেই অন্যদের থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যের হয়ে ওঠে। যদি জাতটি অধিক কার্যকর হয় তবে এ জাতটি আলাদা করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নতুন জাত অবমুক্ত করা হয়। এটিই চান্স সিডলিং। বারি আম-১২ ল্যাংড়া জাতের আম থেকেই চান্স সিডলিংয়ের মাধ্যমে পাওয়া।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৯ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৮
এমআই/এইচএ/

...

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।