জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। এ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল যে আম তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
কৃষিজোন সংক্রান্ত সরকারি কোনো নির্দেশনা বা নীতিমালা আমাদের নেই। তাই আম চাষে বাধা নেই। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে খাদ্যের ভারসাম্য ঠিক থাকবে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে।
এ বিষয়ে কথা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা বলেন, গত তিন বছরে জেলায় আম চাষ বেড়েছে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে। ফলন ভালো হলে আমে লাভ বেশি। যদিও এখানকার জমিতে তিন ফসল হয়। তাই কৃষক ঝুঁকছে আম চাষে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একটি নতুন জমিতে আমের পাশাপাশি ধান বা অন্য ফসল চাষ করা যায় সাধারণত ৭-৮ বছর। এরপর ওই বাগানে অন্য কোনো ফসল হয় না। শুধু আম ছাড়া।
‘আমাদের দেশের খাদ্য নিরাপত্তার কথাও ভাবতে হবে। নাচোলের ওদিকে প্রচুর কৃষিজমি এখনও আছে। আমাদের কৃষিভিত্তিক জোনের কথা ভাবতে হবে। দিনাজপুরে যদি ধানের জমিতে আম চাষ না হয়, আর চাঁপাই যেহেতু আমের জন্য ভালো সেহেতু এখানে যদি আম চাষে বাধা না থাকে তাহলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সেটা সরকার নির্ধারণ করে দিতে হবে খাদ্য নিরাপত্তার কথা ভেবে। সরকার চাইলে সিলেট অঞ্চলের অনেক পতিত জমিকেও ব্যবহার করতে পারে। ’
আম চাষ বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আম চাষে ঝামেলা কম, লাভ বেশি। আর ধান বা অন্য চাষের জন্য দিনমজুর লাগে। এতে খরচের পাশাপাশি লোক পাওয়াও এখন কঠিন। এক বিঘা জমিতে যদি ১২ থেকে ১৪টি আট বছর বয়সী আম গাছ থাকে তাহলে চাষি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করতে পারে এক বছরে। যেটা অন্য কোনো চাষে সম্ভব নয়।
এছাড়া এ অঞ্চলে সেচ সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আম গাছে পানির ঝামেলা খুব কম। প্রাকৃতিক বৃষ্টিতেই হয়ে যায়। তাছাড়া স্বল্প লোক দিয়ে অনেক জমি চাষ করা যায়। কষ্টও অনেক কম। তাই এ অঞ্চলের চাষিরা বেশি ঝুঁকছেন আম চাষে।
এ প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান বলেন, জেলা পর্যায়ে এখনই কৃষিভিত্তিক জোন করার চিন্তা নেই। এটা করতে হবে কেন্দ্রীয়ভাবে কয়েকটি মন্ত্রণালয় নিয়ে। খাদ্যশস্য উৎপাদনের কথা মাথায় রেখে সরকার চাইলে কৃষিভিত্তিক জোন করতে পারে। তবে চাঁপাইতে এখনই এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৮
এএ/এইচএ/