মিলান (ইতালি) থেকে: দেশেই ছিলো বাইং হাউজ। সংস্কৃতি চর্চাতেও ছিলেন এগিয়ে।
এখন স্ত্রীকে নিয়েই সেই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার নিরন্তর সংগ্রামে ঢাকার রামপুরার মাহবুব আলম (৩৬) ও শিউলী আক্তার (৩০) দম্পতি। ১২ লাখ টাকা খরচ করে এ দেশে আসেন মাহবুব।
পশ্চিম ইউরোপের এ দেশটিতে এখনো চলছে অার্থিক খরা। কমে গেছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। যে কারণে এখানকার প্রবাসীদের অনেকেই দেশ ছাড়ছেন। উন্নত জীবন যাপনের জন্যে পাড়ি দিচ্ছেন যুক্তরাজ্যে।
তাই ভালো বেতন বা কাজের জন্যে প্রচণ্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হচ্ছে এখানে কাজের সন্ধানে আসা অভিবাসী প্রবাসীদের। ব্যতিক্রম নন মাহবুব আলম দম্পতি। এখানে টিকে থাকার জন্যে প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হয় এই দম্পতিকে। একাধিক কাজ করতে হয় পালাক্রমে।
একটি ফার্মেসিতে সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা কাজ করে পান ৩'শ ইউরো। একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করেও পান ৩'শ ইউরো। আর একটি কাজ থেকে পান দেড়'শ থেকে ১'শ ৯০ ইউরো।
অন্যদিকে তার স্ত্রী শিউলী আক্তার (৩০) দেশেই কাজ করতেন একটি মুঠোফোন কোম্পানির গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে। ইতালিতে একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করেন শেফ হিসেবে। বেতন হাজার ইউরো।
এই দিয়েই বাড়ি ভাড়া,সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ করে হাতে সঞ্চয় থাকে খুবই কম। তার ওপর দেশে ব্যবসায় ধস আর টানা লোকসানের বোঝা টানতে হয় প্রবাসে বসেই। এমনিতে অভিবাসন ব্যয়েই চলে গেছে মোটা অংকের টাকা। তার ওপর দেশের লোকসানের ঘানি টানতে টানতেই দিশেহারা এই দম্পতি।
ইতালিতে সংকুচিত হয়ে পড়েছে কাজের সুযোগ। কাজের তুলনায় কর্ম প্রত্যাশীর সংখ্যাটা এখানে অনেক বেশি। যে কারণে এখানে প্রতিষ্ঠিত প্রবাসীরা উন্নত জীবন ও নাগরিক সুবিধার আশায় ছুটছেন যুক্তরাজ্যে। আর সাধারণ প্রবাসীদের অনেকেই একটু বেশি অর্থ আয়ের জন্যে ছোটেন সুইজারল্যান্ডে।
সব মিলিয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি এই দম্পতি। আসলে যেন এই দম্পতিই ইতালিতে অনেক প্রবাসীর জীবন সংগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৬
আরআই