নেপাল মন্দিরের শহর। এখানকার মন্দিরের স্থাপত্যের খ্যাতি জগত জুড়ে।
টিকিট কেটে মন্দিরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে একটি স্বচ্ছ পানির জলাধারে মানুষের জটলা। জলাধারের মাঝখানে বুদ্ধমূর্তি। লোহার রেলিং দিয়ে গোলাকার আকৃতিতে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। মনের ইচ্ছা-বাসনা পূরণ করতে মূর্তির সামনে রাখা লোহার পাত্রকে টার্গেট করে পয়সা ফেলছেন অনেকেই। পাত্রের মধ্যে পয়সা ফেলতে পারলে যে মানত করা হবে; তা পূরণ হবে এই বিশ্বাস বিশ্বাসীদের। স্থানীয় বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে উৎসাহী হয়ে পযর্টকরা মানত করতে একের পর এক পয়সা ফেলছেন।
মন্দির জুড়ে ঘোরাফেরা করছে ছোট-বড় অনেকগুলো বানর। পযর্টকদের দেখে তারা যেন আরো বেশি লাফালাফি করছে। এমনকি ভয় দেখাতেও ব্যস্ত দেখা গেল। এর মধ্যে কেউ দাঁত কেলিয়ে বাদাম চিবুচ্ছে। এই মন্দিরটি পযর্টকদের কাছে হনুমান মন্দির নামেও পরিচিত। মন্দিরে প্রবেশের দু’টি পথ। একটি সাড়ে তিনশ’ সিঁড়ি ডিঙ্গিয়ে, অন্যটি একেবারে গাড়ি নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে একটু হাঁটা পথ।
শম্ভুনাথ মন্দিরে প্রবেশে সার্ক ভুক্ত দেশের পযর্টকের জন্য ফি ৫০ রুপি। অন্য দেশের পযর্টকদের জন্য ২০০ রুপি।
স্থাপত্যের ধরনে শম্ভুনাথ মন্দির বেশ পুরনো। মূল মন্দিরের আগে ছোট বড় অসংখ্য মন্দির ও কারুকার্যখচিত স্থাপনা। কোনোটা হনুমান, কোনোটা বুদ্ধমূর্তির মন্দির। মূল মন্দিরে ওঠার সিঁড়ি পাথরের। বিশালাকার স্তূপের ওপর চৌকো কাঠামো, তার ওপর গোলাকার বলয়ে গড়া স্বার্ণালি রঙের মন্দির চূড়া। চৌকো অংশের চারপাশে আঁকা বুদ্ধের চোখ।
মূল মন্দির ঘিরে মন্দির জুড়ে রয়েছে অসংখ্য পিতলের ঘণ্টা। পিতলের ঘন্টাগুলোও বিশ্বাসীদের মনের ইচ্ছা পূরণের মাধ্যম। লাইনে দাড়িয়ে ঘণ্টা বাজিয়ে মূল মন্দিরে গিয়ে পূজা দেয় তারা।
দিনটা ছিল হোলি উৎসবের। রঙ মেখে পূজা দিতে এসেছেন ভক্তরা। পযর্টকদেরও জমজমাট ভিড়। মন্দির চত্বরে অসংখ্য দোকানপাট। বেশিভাগ দোকান অলঙ্কারের। পাথর,ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি অলঙ্কারগুলোতে রয়েছে ধর্মীয় অনুভুতি ও ঐতিহ্যের ছাপ। আছে পূজার সরঞ্জাম।
পাহাড়ের চূড়ায় মূল মন্দির। সেখান থেকে পাহাড় ঘেরা পুরা কাঠমান্ডু ভ্যালি দেখা যায়। রেলিং দিয়ে বাঁধানো মন্দিরের চূড়া থেকে কাঠমান্ডুর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঘরবাড়িগুলোকে দেখা যায় খুপরি ঘরের মতো।
ত্রিশ মিনিট অবস্থান করে হাতে সময় কম থাকায় বেড়িয়ে পড়ি। এর পরের গন্তব্য আরেক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা পাঠান দরবার।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
এমসি/জেডএম/