গাছ তো নয়, যেন একেকটি মহীরুহ। শতবর্ষী মহাদ্রুমের প্রসারিত শাখা-প্রশাখায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে চারপাশ।
‘বাংলাদেশে চিকিৎসা নেই’- পাঠক ও বিশেষজ্ঞ প্রতিক্রিয়া
‘দাক্ষিণাত্যে গাছ-পালা সর্বত্র প্রচুর। হায়দারাবাদ, চেন্নাই, ত্রিবান্দ্রারাম এবং বিদর্ভ নগরেও সুপ্রাচীন বৃক্ষের উপস্থিতি আপনার নজর কাড়বেই। ’ -ড্রাইভার ফ্র্যান্সিস কন্নড় জাতির লোক। ধর্মে খ্রিস্টান। চলনসই ইংরেজি জানে। আমার থাকার হোটেলের মাধ্যমে রফা করে তাকে নিয়েছি সারা দিনে গাড়িতে পুরো শহর ঘুরিয়ে দ্রষ্টব্য স্থানগুলো দেখানোর জন্য। পরের দিন তার গাড়িতেই প্রাচীন রাজধানী টিপু সুলতানের মহিশুর এবং তার পরদিন কর্ণাটকের গ্রামীন জীবনের নানা দিক দেখতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দিকে যাওয়াও কথা পাকা হয়েছে তার সঙ্গে।
বেঙ্গালুরু দেখতে দেখতে ফ্র্যান্সিসের কথায় অবাক হলাম না। বরং সম্মত হলাম। যত্ন ও পারিপাট্যে বাগান সাজাতে কোনও কার্পণ্যই করা হয় নি। তবে অনেক নগরের পাশে তার মুখ থেকে ‘বিদর্ভ’ নগরের কথা শুনে অবশ্যই রোমাঞ্চিত হলাম। কবি জীবনানন্দ দাশের সুখ্যাত ‘বনলতা সেন’ কবিতায় ‘বিদর্ভ’ নগরের উল্লেখ আছে। নগরটি এখন অন্ধ প্রদেশ ভেঙে বেরিয়ে আসা নতুন রাজ্য তেলেঙ্গানার রাজধানী। হায়! দক্ষিণ ভারতের কেউ কি জানে, দূরতর বাংলাদেশের এক কবি তাদের নগরের কথা বলেছিলেন।
তবুও ফ্র্যান্সিসকে বললাম, ‘পুরো ডেকান বা দক্ষিণ ভারতেই বৃক্ষের প্রাধান্য আছে, তবে কেন এককভাবে শুধু বেঙ্গালুরুকে ‘গার্ডেন সিটি’ বলা হচ্ছে?’
‘ঠিকই বলেছেন। শুধু গাছের জন্য বেঙ্গালুরু শ্রেষ্ঠত্ব পায় নি। পেয়েছে সে গাছগুলোকে সুপরিকল্পিতভাবে রক্ষা করার জন্য এবং বিচিত্র ধরনের লতা-গুল্ম-পুষ্পের মাধ্যমে নান্দনিক ও আকর্ষণীয় বাগান সাজানোর জন্য। ’ উত্তর দিলেন ফ্র্যান্সিস। আমিও নির্দ্বিধায় একমত হলাম।
খুবই সত্য কথা। বাড়ির আঙিনায়, দোকানের কোণে, শহরের আইল্যান্ডগুলোতে এক চিলতেও ফাঁকা জায়গা পাওয়া যাবে না। সর্বত্র সবুজ। বর্ণিল ফুল ও পাতার মেলা। জনাকীর্ণ পাঁচ রাস্তার মোড়ের আইল্যান্ডে আস্ত এক কচি বাঁশ ঝাড় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। এমনটি এক বা দুই জায়গায় হয় নি। হয়েছে প্রতিটি স্থানে, কোণে, শহরের সর্বত্র। এবং বাগানচর্চার কাজটি সম্পন্ন হয়েছে পরিকল্পিত ও ভারসাম্যের সঙ্গে।
বেঙ্গালুরু শহর একদম সমতল নয়। ডেকান বা দাক্ষিণাত্যের ভূমিরূপের কারণে হালকা একটি পাহাড়ি ভাব আছে শহরটির। টিলা আছে ছোট ছোট। আশ্চর্য্য! সেগুলোকে কেটে বা ছেঁটে ফেলার প্রশ্নই হয়ত কেউ তোলে না। নগরের ল্যান্ডস্কেপের মৌলিকত্ব রক্ষা করে সাজানো হয়েছে বাগান, দালান, নগর-বিন্যাস। বৃক্ষ রোপিত হয়েছে ভূমিবৈশিষ্ট্যের আলোকে। কোথাও ঝাউ গাছের প্রাধান্য। কোথাও লম্বা ধরনের গাছের সারি। কোথাও প্রসারিত কাণ্ডের বৃক্ষ। যেমন জায়গায় যেমন গাছ মানাবে, তেমনই রোপিত হয়েছে। দেখতেও হয়েছে সেগুলো চমৎকার।
বেঙ্গালুরু শহরের ভূমি ও জায়গাকে বৃক্ষ-বান্ধব এবং প্রকৃতিময় করতে সত্যিই গভীর চিন্তা-ভাবনা করেছেন উদ্যোক্তারা। নগরময় মানানসই গাছের নান্দনিক বাহার সুপরিকল্পনা, দরদ ও যত্নের প্রমাণবহ। খোলা ময়দান বা উদ্যানে বট, অশত্থ ইত্যাদি দিগন্ত প্রসারিত বৃক্ষের সারি। অপেক্ষাকৃত কম জায়গায় পাম, খেজুর, নারকেল ধরনের ঊর্ধ্বমুখী গাছ। আর সামান্য জায়গা পাওয়া গেলে নানা রকমের ফুলের কেয়ারি করা বাগান। সাথে লাগসই লতা-গুল্মের ঝোঁপ। অর্কিড, ম্যানিপ্ল্যান্ট, পাতাবাহার আকীর্ণ আছে পুরো নগর জুড়ে। মনে হতেই পারে যে, আস্ত শহরটিই যেন সবুজে সেজেছে। টলমল উজ্জ্বল সবুজ আচ্ছাদনের সঙ্গে বহুবর্ণা লতা, পাতা আর ফুলের মিশেলে সমগ্র পরিবেশটিই বড় মনোরম হয়ে আছে।
শান্ত, স্বিগ্ধ ও নৈঃশব্দময় মগ্ন প্রকৃতির মাঝখান দিয়ে চলছে আধুনিক জীবনের শত আয়োজন। আকাশচুম্বী অট্টালিকা আর হাজার হাজার গাড়ির মিছিল। আগেই জেনেছি, বেঙ্গালুরু কেবল ভারতেরই নয়, সমগ্র বিশ্বের মধ্যেই গতিবেগের দিক থেকে প্রথম। বেঙ্গালুরুকে বলা হয়, গতি ও বাগানের শহর। যান্ত্রিক নগরজীবনে প্রকৃতি ও আধুনিকতার এমন ভারসাম্যপূর্ণ সহাবস্থান সত্যিই দুর্লভ। বেঙ্গালুরু অতীব যোগ্যতা ও পরঙ্গমতায় নগরায়ন ও প্রকৃতিকরণের মধ্যস্থিত ভারসাম্যের কঠিন ও জটিল কাজটি সম্পন্ন করে মানুষের জীবনকে করেছে পরিবেশ-বান্ধব, প্রকৃতি-ঘনিষ্ঠ, স্বাস্থ্যকর ও ঝলমলে।
বেঙ্গালুরুর বাগিচাগুলোর দিকে তাকিয়ে ভাবি, ভারতে পরিকল্পিত বাগান বা উদ্যানের উদ্যোক্তা মুঘলরা। মুঘলরা এদেশে সঙ্গে করে এনেছিলেন গুলিস্তান বা বাগানের ধারণা। আরও এনেছিলেন নন্দনকলা, সৌন্দর্য্য ও শিল্পের নানা আয়োজন। ইরান ও মধ্য এশিয়ার সৌন্দর্য্যশীলতা ভারতের ভূমি ও সমাজে ছড়িয়ে দিলেও সবাই সেটা রক্ষা করতে পারে নি; বরং শিল্প-ঐতিহ্য নস্যাৎ করে ফেলেছে। কিন্তু দক্ষিণ ভারত তা চমৎকারভাবে সুরক্ষিত রাখতে পেরেছে। পেরেছে বললে খুবই কম বলা হবে। বরং বলা ভালো, দক্ষিণ ভারত বাগান ও বৃক্ষায়নের ঐতিহ্যকে ব্রত হিসেবেই ধারণ করেছে এবং আরও উৎকর্ষ সাধন করতে সক্ষম হয়েছে।
একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এবং অবশ্যই অনুসরণযোগ্যও বটে। কর্ণাটকের সর্বত্র, বিশেষত বেঙ্গালুরুতে বৃক্ষ, লতা, গুল্মকে কেবল চোখের দেখার জন্যই গ্রহণ করে নি মানুষ, ব্যবহারিক-প্রায়োগিক জীবনেও সঙ্গী করে নিয়েছে। গ্রামীণ সমাজের চিরায়ত জীবনে বৃক্ষ, পুষ্প, পত্র, পল্লব, লতা, গুল্ম ইত্যাদির বহুমুখী ও ভেষজ প্রয়োগ পরবর্তীতে আমার নিজেরই দেখার সুযোগ হয়েছিল। সেসব যথাসময়ে আলাদাভাবে বলা যাবে। বেঙ্গালুরু শহরের অভিজ্ঞতাটাই আগে বলা যাক।
দুপুরের আহারের সময় উদ্ভিদের ভেষজ গুণাবলি থেকে উপকৃত হওয়ার দৃষ্টান্ত নিজের চোখে দেখতে পেলাম। নগরীর গল্ফ কোর্টের পাশেই আইটিসি ( ইন্ডিয়ান ট্যুরিজম করপোরেশন)-এর তারকাখচিত হোটেলের বিরাট এরিয়া পেরিয়ে এক মাঝারী মানের হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে গিয়ে অভিনব দৃশ্যের দেখা পেলাম।
প্রশস্ত ডাইনিং রুমে থরে থরে খাবার সাজানো। বিশাল বিশাল খাবারের ট্রে ও পাত্রের উপরিভাগে ধনে-পাতা, পুদিনা পাতা এবং আরও নানা নাম না জানা পাতা কুচি কুচি করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ট্রে এবং পাত্রগুলোও রাজসিক। নানা কারুকার্য এবং শিল্পকর্মে সুসজ্জিত। সালাদের আইটেমগুলো কাঁচা ও কচি নানা জাতের পাতার প্রাধান্যে ভরপুর।
ডাইনিং ঘরময় উদ্ভিদের মন-কাড়া সুবাদ। এতেই শেষ হয় নি। খাবারের বিপরীত দিকের টেবিলে মিছিলের মতো কাঁচের জাগে খাওয়ার পানি সাজানো। স্বচ্ছ কাঁচের মধ্য দিয়ে দেখা যাচ্ছে, ভেতরের পানিতে ভাসছে নানা জাতের লতা ও পাতা। যার যেমন ইচ্ছা, তিনি তেমন পানি পান করছেন। ততক্ষণে ড্রাইভার থেকে গাইডে রূপান্তরিত ফ্র্যান্সিস আমাকে পুদিনার সঙ্গে স্থানীয় জাতের কয়েকটি উদ্ভিদের পানি মিশিয়ে পান করালেন। ভীষণ সুভাস এবং টক-ঝাল স্বাদ। বাইরের বাতাসের ঠাণ্ডা থেকে সুরক্ষার জন্য নাকি এই পানি কাজে লাগবে, বললেন ফ্র্যান্সিস। কথাটা সত্য।
বাইরের শীত-হেমন্তের মতো হালকা শীতল বাতাসের প্রভাব শরীর বা কণ্ঠে কোনও আছর করতে পারে নি। আবহাওয়া আর বাতাস এতোটাই সুশীতল যে অনেকেই হাফ-হাতা স্যোয়েটার পরেছেন। বিশেষ করে যারা মোটর সাইকেল চালাচ্ছেন, তারা মোটা কাপড় পরিধান করেছেন বাতাসের বেগ থেকে বাঁচার জন্য।
বেঙ্গালুরুর বাগান-ঐতিহ্য পুষ্ট করতে মুঘল-পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ও ইংরেজরাও কম দায়িত্ব পালন করেন নি। বরং সাহেবরা বাগানচর্চাকে আরও ঊর্বর করেছেন। বলা ভালো, ভাস্কো-ডা-গামার পথ অনুসরণ করে ইউরোপীয়রা দক্ষিণের সমুদ্র পথে স্রোতের মতো ভারতে আসতে গিয়ে প্রথমেই দক্ষিণের এলাকগুলোর মুখোমুখি হন। দক্ষিণাত্যে এ কারণেই খ্রিস্টান সংখ্যা বেশি। মুসলমানদের বসতিও বেশ মজবুত এজন্য যে, আরও আগে আরব মুসলিম বণিকরা চীন দেশ পর্যন্ত যেতে মালাবার উপকূলে যাত্রা বিরতি করতেন। এমন বিরতি তারা চট্টগ্রাম বা আরাকানেও করতেন বলে ইতিহাস জানাচ্ছে। যে কারণে এসব এলাকায় প্রাচীন মুসলিম বসতি রয়েছে। পরবর্তীতে যেমনভাবে বেড়েছে খ্রিস্টান বসতি।
বেঙ্গালুরের সেন্ট জোসেফ স্কুল ও গির্জা দেখলাম ১৫৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই প্রাচীন ঐতিহ্য লেগে আছে স্কুল কম্পাউন্ডের ভেতরের দালানের নকশা আর কাঠামোয় এবং বৃক্ষায়নে। ভেতরের বিরাট প্রাঙ্গণে শত শত প্রাচীন বৃক্ষ। সত্যিই পড়ার মতো স্থান বলতে যা বোঝায়, তেমনই প্রকৃষ্ট সেই পরিবেশ।
শহরটিতে মনে হয়, টাকা পয়সা নয়, বৃক্ষরাজিই সম্মান ও ঐতিহ্যের প্রতীক। বহু প্রতিষ্ঠান গেটের কাছে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, ‘উই হ্যাভ ১০০ ভ্যারাটিজস অব ১০০০ ট্রিজ। ’ তাদের কাছে যে ১০০ ধরনের ১০০০ গাছ আছে সেটা গর্বের সঙ্গে জানাতেও কসুর করছেন না। প্রতিষ্ঠানের বয়স ও প্রাচীনত্ব ভেদে গাছের ধরন ও সংখ্যা পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু বৃক্ষবিহীন নেংটো হয়ে বসে নেই কেউই! আছেন ছায়া-সুনিবিড় প্রকৃতির সমান্তরালে।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই প্রাচীন, খানদানি ও বিস্তৃত। বিরাট প্রাঙ্গণ নিয়ে মসজিদ আর চার্চ দেখতে পেলাম। হনুমানের বিশালাকায় মূর্তি নিয়ে রয়েছে বহু মন্দির। মন্দিরের দেওয়ালে অপূর্ব কারুকার্য। রামায়ণ, মহাভারতের নানা ঘটনা আকর্ষণীয়ভাবে উৎকীর্ণ দেখতে পেলাম। কোর্ট-কাচারিগুলোও ব্রিটিশ আমলের লাল দালানে দিব্যি এখনো টিকে আছে। টালির ছাদ দেওয়া অসাধারণ স্থাপনাগুলোর চারদিকে খোলা জায়গা। এবং অবশ্যই সেখানে বৃক্ষ আর বাগানের অনিন্দ্য আয়োজন। র্
গলফ খেলার মাঠটি দেখার সুযোগ হলো। অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম। যেন বা প্রাকৃতিক কার্পেট দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। বিশাল মাঠের মাঝে মাঝে গাছ ও উদ্যান। দেখতে দেখতে সত্যিই চোখ জুড়িয়ে গেল। পাশেই স্টেডিয়াম। বেশ আধুনিক কিন্তু প্রকৃতি বান্ধব। রাহুল দ্রাবিড়, উত্থাপা ইত্যাদি বহু খেলোয়াড়ের জন্মভূমি কর্ণাটক ক্রিকেটে বেশ এগিয়ে।
কিছুদূর এগিয়ে ‘রাজভবন’ পেলাম। ছিমছাম আয়োজন। অথচ আয়োজনটি বড় প্রকৃতি-ঘেঁষা। দেখতে মনে হয়, বনের মাঝখানে ভুল করে একটি বাড়ি ঢুকে গেছে। তার মানে, বন-বনানী-প্রকৃতিকে হনন করে স্থাপনা নির্মাণ হয় নি। আধুনিকায়ন হচ্ছে না বনের প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাহ্য করে। বরং সব কিছুই করা হচ্ছে, প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানের ভিত্তিতে।
এটা ঠিক যে, শহরের আধুনিক অংশ নবনির্মিত ঝাঁ-চকচকে, স্টিল ফ্রেম আর বাহারী কাঁচের সমন্বয়ে বহুতল দালানের সম্প্রসারণ হচ্ছে এবং সেখানে বৃক্ষায়ন কম। প্রাচীন বৃক্ষ নতুন জায়গায় পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাগান সাজিয়ে সে অভাব দূর করা হয়েছে। প্রতিটি কমপ্লেক্সের চারপাশ, ভেতর-বাহির বাগান দিয়ে এমনভাবে ভরে দেওয়া হয়েছে যে, আধুনিক নগরায়নকেও আগ্রাসন মনে হবে না। মনে হবে প্রকৃতির সহযাত্রী।
কর্ণাটকে এলে রাজধানী বেঙ্গালুরু না এসে উপায় নেই; শহরের অবস্থানটি ‘আসতেই হবে’ পর্যায়ে। আর বেঙ্গালুরু এলে কোথায় কোথায় আসতেই হবে, তা ভাবলে খেই হারিয়ে ফেলতে হয়। একটি নয়, একাধিক জায়গার খোঁজ পেলাম। আধুনিক ও ঐতিহাসিক অনেক কিছুই ছড়িয়ে রয়েছে চারপাশে। শহর আর গ্রামের দিকে ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক জায়গাগুলো যত বেশি সম্ভব দেখে রাখার পরিকল্পনায় নোট ও ছবি নেওয়ার কথা ভেবে রাখলাম।
ভারতের উত্তর অংশ আর্য প্রাধান্যের কারণে আর্যাবর্ত নামে পরিচিত হলেও দক্ষিণাংশের মানুষ মূলত দ্রাবিড় জাতিভুক্ত। ইংরেজ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর হায়দার আলি ও টিপু সুলতানের বহু স্থাপনা আর স্মৃতি ছড়িয়ে আছে মহানগরের নানা প্রান্তে। আছে অনেক অসাধারণ প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা, শিল্পকলা, সংস্কৃতিতে যারা পালন করছেন অনন্য ভূমিকা।
এই তথ্যটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ যে, ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান ও মর্যাদাজনক জাতীয় পুরস্কারগুলো সবচেয়ে বেশি পেয়েছেন কন্নড় ভাষার লেখক, কবি, সাহিত্যিক, বৃদ্ধিজীবীরা। অতএব, কেবল প্রকৃতি, পরিবেশ বা বাইরের দিকটিই নয়, বরং উন্নত, অগ্রসর, প্রকৃতিপরায়ণ রাজ্যটির চেতনার জায়গাটিও খুঁজে বের করা জরুরি। সংক্ষিপ্ত সফরে সেটা পরিপূর্ণভাবে করা না গেলেও যতটুকু সম্ভব করতেই হবে। বিভিন্ন সংস্কৃতি-সমাজ-সভ্যতার ইতিবাচক দিকগুলোকে অনুধাবণ করাও তো প্রগতির নামান্তর।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৭
জেডএম/