নয়নাভিরাম ক্র্যাবি প্রথম দেখাতেই মেলে ধরলো তার অপরূপ রূপ-সুষমা। বাসস্টেশন থেকে নেমেই ট্যাক্সি করে হোটেলে।
চালকের কথামতো প্রথমে আন্দামানের বিশাল জলরাশির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা চিকেন আইল্যান্ডে থামল ইঞ্জিন নৌকা। আধাঘন্টা ভ্রমণের পর চোখের সামনে ভেসে ওঠে প্রকৃতির খেয়ালে গড়ে ওঠা দ্বীপটি। দেখতে মুরগীর মতো সবুজে ঘেরা দ্বীপটির চারপাশে আন্দামানের স্বচ্ছ জলরাশি। স্কুবা ডাইভিং-এর জন্য দ্বীপটি বিখ্যাত। বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের কোরাল সমৃদ্ধ পানিতে নেমে স্নরকেলিং করতে দেখা গেল।
চিকেন আইল্যান্ড থেকে ১০ মিনিটে আও নাং আইল্যান্ডে। এখানে বুক-পানি পার হয়ে এক দ্বীপ থেকে সাগরের মাঝ দিয়ে আরেক দ্বীপে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটা সত্যিই অসাধারণ।
দ্বীপটিতে নানা বর্ণের, নানা দেশের পর্যটকের দেখা মিলল। এর মধ্যে নোনা পানিতে শরীর ভিজিয়ে কেউ শুয়ে বই পড়ছে, কেউবা চড়া রোদে শরীর পুড়িয়ে নিচ্ছে; কেউবা আবার কায়াকিংয়ে ব্যস্ত। কেউ কেউ নানা ভঙ্গিতে ক্যামেরায় পোজ দিয়ে যাচ্ছে।
ক্র্যাবি ভ্রমণের দ্বিতীয় দিন অ্যাম্ফোই খলোং থমে অবস্থিত হট স্ট্রিম ওয়াটারফল ভ্রমণ। থাই সরকারের জাতীয়করণ করা এই ঝর্ণাটির দূরত্ব ক্র্যাবি শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার। ট্যাক্সি ব্যয়বহুল বিধায় মোটর বাইকেই যাত্রা। জিপিআরএস চালু করে মৃসণ সড়কে বাইকের পিছনে এক সঙ্গে দু:সাহসিক ও অসাধারণ অনুভূতির ভ্রমণ। দেড় ঘন্টায় গন্তব্যস্থলে।
২০ বাথ দিয়ে হট স্ট্রিম ওয়াটারফলে লোকজনকে প্রবেশ করতে দেখা গেল। গিজগিজ করছে মানুষ। সবুজ গাছ-গাছালি বেষ্টিত ওয়াটারফলে দর্শনার্থীর ভিড়ের মধ্যে শরীর ভেজানোর সুযোগ বের করাই দায়। এই প্রাকৃতিক ঝর্ণার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পাহাড়ের কোল থেকে গরম পানির ধারা নেমে আসছে। দর্শনার্থীরা ঝর্নার গরম পানিতে গা ভিজিয়ে ঠাণ্ডা পানিতে সাঁতরাতে পারেন। এজন্য ঝর্নার সঙ্গে ঠাণ্ডা পানির লাগোয়া জলাশয় রয়েছে। থাইল্যান্ডের ক্র্যাবি ছবির মতো এক স্বপ্নিল, অপরূপ শহর। এলাকাটি মুসলিম অধ্যুষিত হওয়ায় হালাল খাবার পেতে কোনো সমস্যা নেই। আন্দামান সাগরের সঙ্গে ক্র্যাবির সন্ধ্যাটা মনোমুগ্ধকর। ফল ও বিভিন্ন স্বাদের খাবার নিয়ে তীরে বসলে সমুদ্রের গর্জনের সঙ্গে রাস্তার ধারের রেস্তোরাঁ থেকে ভেসে আসা মিউজিক আপনাকে স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
জেএম/