ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বিরোধী দলের এমপিদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩
ত্রিপুরার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বিরোধী দলের এমপিদের

আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আক্রান্তদের দেখতে এসে নিজেরাই হামলার শিকার বিরোধী এমপিদের এক প্রতিনিধি দল। শনিবার (১১ মার্চ) আগরতলায় সংবাদ সম্মেলন করে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা এবং তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন তারা।

২০২৩ নির্বাচনের আগে এবং বিশেষ করে ভোটের ফল প্রকাশের পর ত্রিপুরা রাজ্যজুড়ে ব্যাপক সন্ত্রাস সংগঠিত হচ্ছে। বিরোধী কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের উপর এই আক্রমণ চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। কর্মী সমর্থক ও সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণের পাশাপাশি তাদের বাড়িঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হচ্ছে। এমনকি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।

রাজ্যের এই বর্তমান পরিস্থিতি সরে জমিনে খতিয়ে দেখার জন্য কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের ৮সদস্যের একটি যৌথ সংসদীয় দল শুক্রবার আগরতলায় আসেন। এলেন বিরোধী কংগ্রেস ও বামেদের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল। লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদরা রয়েছেন। এরা হলেন লোকসভার সাংসদ পি আর নটরাজন, সাংসদ গৌরব গগৈ, রাজ্যসভার সাংসদ বিনয় বিশ্বম, সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, সাংসদ রঞ্জিতা রঞ্জন, সাংসদ এ এ রহিম, সাংসদ এলারাম করিম এবং সাংসদ আব্দুল খালিক।

এই দলটি তিন ভাগে ভাগ হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্তদের দেখতে বেরিয়ে যান। তারা যখন বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন একাধিক জায়গায় তাদের উপর দুষ্কৃতির দল আক্রমণ চালায়। তারা কোনোমতে রক্ষা পেলেও তাদের একাধিক গাড়ি ভেঙ্গে ফেলে দুষ্কৃতির দল বলে অভিযোগ জানান।

রাজ্যের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে ত্রিপুরা অবগত করার লক্ষ্যে শনিবার এই প্রতিনিধি দলটি রাজভবনে গিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজ্যপাল সত্য দেওনারায়ণ আর্যর সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, আক্রমণের গঠনা বন্ধ করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে যাতে সরকার দাঁড়ায় এই আহ্বান তারা রাজ্যপালের কাছে রাখেন। রাজ্যপাল তাদের কথা মনোযোগের সঙ্গে শুনেন এবং এই বিষয়ে সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে তাদের আসার দিয়েছেন।

রাজ্যপাল ভবন থেকে বেরিয়ে এই প্রতিনিধি দলটি রাজ্য অতিথিশালায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এই সংবাদ সম্মেলনে তারা তাদের সফরের সম্পর্কে বিস্তারিত সংবাদ মাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম সারির বাম নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, এই কিছুদিনের নির্বাচনী সন্ত্রাসের জন্য ত্রিপুরা রাজ্যে এক হাজারেরও বেশি পরিবার আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের দেখতে এসে এমপিরা আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্যের ক্ষমতাশীন দল বিজেপি ৩৩ থেকে ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা জনগণের ভোটে পরাজিত কারণ বেশিরভাগ মানুষ তাদের ভোট দেননি। জনগণের ভোটে পরাজিত হওয়ায় তারা আতঙ্কিত। তারা ক্ষমতায় থাকলেও মানুষ তাদের পাশে নেই এই আতঙ্ক থেকে তারা মানুষের উপর আক্রমণ শুরু করেছেন।  

সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন, রাজ্যের সাংবিধানিক  প্রধান রাজ্যপাল হয়তো গোটা বিষয় সম্পর্কে অবহিত নন, বা তিনি ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হতে চান না। সেদিন তার সঙ্গে দেখা করে প্রতিনিধি দলের তরফে একটি দাবি সনদ রাজ্যপালের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান। সারা রাজ্যপালের কাছে দাবি জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ক্ষতির হিসেব করার জন্য একটি সর্বদলীয় টিম তৈরি করে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে হবে। অবিলম্বে আক্রান্তদের যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আর একটি পরিবারের উপর আক্রমণ হবে না সরকারকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

তারা বিষয়টি পার্লামেন্টে উত্থাপন করবেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির গোচরে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান। তাদের সফর শেষে এদিনই তারা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩
এসসিএন/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।