ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

শ্রমিকদের উদ্যোগে চলছে ত্রিপুরার দ্বারিকাপুরের চা বাগান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
শ্রমিকদের উদ্যোগে চলছে ত্রিপুরার দ্বারিকাপুরের চা বাগান ছবি- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বাগানকে বাঁচিয়ে রেখে অনেকের কাছেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ত্রিপুরার দ্বারিকাপুরের চা বাগানের শ্রমিকরা। 

আগরতলা: নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বাগানকে বাঁচিয়ে রেখে অনেকের কাছেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ত্রিপুরার দ্বারিকাপুরের চা বাগানের শ্রমিকরা।  

ত্রিপুরা রাজ্যের প্রাচীন চা বাগানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি খোয়াই জেলার কল্যাণপুর ব্লকের দ্বারিকাপুর চা বাগান।

বাগানটির বয়স ৬০ বছরেরও বেশি।
 
প্রথমে বাগানটির মালিক ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের এক ব্যবসায়ী। তবে প্রায় ৮ বছর আগে বাগানটি ‘স্যানপ্লান্ট’ নামক একটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প সংস্থা কিনে নেয়। নতুন মালিকপক্ষ কয়েক বছর বাগানটিকে ভালোভাবে পরিচালনা করলেও ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে স্যানপ্লান্ট গোষ্ঠী বাগানের প্রতি আগ্রহ হারায়। তখন থেকে শ্রমিকদের বেতন ভাতা দেওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় ছিলনা।
 
২০১৩ সালে ভারতজুড়ে ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলে অন্যসব ক্ষুদ্র সঞ্চয় সংস্থার সঙ্গে স্যানপ্লান্ট গোষ্ঠীর মালিকপক্ষও পালিয়ে যায়।  

তখন থেকেই শুরু হয় বাগানের শ্রমিকদের কঠিন চ্যালেঞ্জ, কি করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেঁচে থাকবেন এই ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়েন শ্রমিকরা।  

এমন অবস্থায় শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নেন, নিজেরা বাগানের পাতা তুলে সমবায় করে পাতা বিক্রির অর্থ নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে নেবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা কাজ শুরু করেন। এখনো সমবায়ের মাধ্যমে কাজ করছেন তারা।
 
বর্তমানে বাগানে মোট ৪৫ জন শ্রমিক রয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুব ভালো ভাবে না হলেও খেয়ে বেঁচে আছেন বলে বাংলানিউজকে জানান বাগান পরিচালক রামপ্রসাদ কুর্মি। পাশাপাশি রাজ্য সরকারও বাগান শ্রমিকদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। নানা সময় ভারত সরকারের গ্রামীণ রোজগার যোজনায় কাজ দেওয়া হচ্ছে বাগানের শ্রমিকদের।  

বছরের বেশীরভাগ সময় তারা কচি পাতা বিক্রি করেন। আর শুকনো মৌসুমে যখন বাগানের পাতা তোলা বন্ধ থাকে তখন অন্য কাজ করে পরিবারের ভরণ-পোষণ করেন।  

রাম প্রসাদ কুর্মি আরও জানান, বাগানের শ্রমিকদের মজুরি থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডে রুপি সঞ্চয় রাখা হয়েছিল একটা সময়। এখন মালিকপক্ষের খোঁজ নেই। তাই শ্রমিকরা তাদের সঞ্চিত রুপি তুলে আনতে পারছেন না। যদি রুপিগুলো পাওয়া যেতো তবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আরও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারতেন।  

শ্রমিকরা এভাবে যদি সময়মতো উদ্যোগী না হতো তবে বন্ধ হতো বাগানটি। শ্রমিকদেরকে পরিবার নিয়ে নতুন কাজের জন্য ঘুরতে হতো। এ উদ্যোগের জন্য বাগানের শ্রমিকরা অনেকেরই প্রশংসা পেয়েছেন। সেই সঙ্গে অন্যান্য শ্রমিকদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
এসসিএন/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।