ঢাকা, রবিবার, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ সফর ১৪৪৬

আগরতলা

ধনের দেবীর পূজায় মেতেছে ত্রিপুরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৭
ধনের দেবীর পূজায় মেতেছে ত্রিপুরা থরে থরে সাজানো লক্ষ্মী প্রতীমা। ছবি: সুদীপ চন্দ্র নাথ

আগরতলা:  হিন্দু শাস্ত্রে ধনের দেবী দুর্গার বড় কন্যা লক্ষ্মী। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, এবছর বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে তার পূজা। এ পূজাকে আবার কোজাগরী লক্ষ্মী পূজাও বলা হয়।

কোজাগরি অর্থ ‘কে জেগে আছো’। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, বছরের সবচেয়ে উজ্জ্বল রাত আশ্বিনের পূর্ণিমা তিথিতে ধনসম্পদ, প্রাচুর্য, সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধির দেবী লক্ষ্মী বিষ্ণুলোক হতে পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ‘কে জেগে আছো’ প্রশ্ন করেন।

তাই লক্ষ্মী পূজা ভক্তদের কাছে কোজাগরী পূজাও।

দুর্গার পূজা শেষ হতে না হতেই এখন ত্রিপুরা রাজ্য জুড়ে লক্ষ্মী আরাধনার প্রস্তুতি তুঙ্গে। এই পূজা প্রায় সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ করেন, তাই প্রতিটি বাজার ছেয়ে আছে পূজার উপকরণে। এই পূজাতে প্রয়োজন হয় ধানের শীষ, কাঁচা সুপারী, কলাপাতা, কলা গাছের খোল, আলপনাসহ আরো নানা সামগ্রী।

হাতে আাঁকা লক্ষ্মী।  ছবি: সুদীপ চন্দ্র নাথরাজধানী আগরতলার মহারাজগঞ্জ বাজার থেকে বটতলা, লেক চৌমুহনী, দুর্গা চৌমুহনী বা মঠ চৌমুহনী, এমন কি রাজ্যের অন্যান্য জেলার বাজারে এখন একই দৃশ্য।

রাজধানীর মহারাজগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা গেল, লক্ষ্মী দেবীর প্রতীমার ছড়াছড়ি। ছাঁচের প্রতিমা থেকে শুরু করে কাঠামো, নানা আকারের প্রতিমা রয়েছে। বিক্রেতারা জানান, প্রতিমার মূল্য ১শ' রুপি থেকে শুরু হয়ে আড়াই, তিন হাজার রুপি পর্যন্ত রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে যুগ যুগ ধরে চলে আসা গ্রাম বাংলার সরার উপর হাতে আকাঁ লক্ষ্মীর ছবি।

এক সরা বিক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, তিনি তিন আকারের সরার উপর আকাঁ ছবি নিয়ে এসেছেন, যেগুলোর মূল্য ১১০, ১৬০ ও ২২০ রুপি। তবে ১০ থেকে ২০ রুপি কমেও বিক্রি করছেন।

লক্ষ্মী পূজার উপকরণ।  ছবি: সুদীপ চন্দ্র নাথপ্রতি গোছা ধানের শীষ বিক্রি হচ্ছে ১০ রুপি করে, কাঁচা সুপারী চারটে ১০ রুপি। চালের গুড়ির আলপনার স্থান এখন দখল করেছে আলপনার স্টিকার, কোনো ঝঞ্ঝাট নেই, ঘরে বসিয়ে দিলেই হলো। আকার ও ডিজাইনের উপর নির্ভর করছে এগুলোর দাম। তবে পূজার সামগ্রীর অধিকাংশের দাম শুরু হচ্ছে ১০ রুপি থেকে।

একইভাবে অতীতের দাদী-নানীদের হাতের তৈরি নারকেলের সন্দেশ, চিড়া, মুড়ি, তিলের নাড়ু আজ বাজার অর্থনীতির কল্যাণে প্যাকেটজাত। এসব রেডিমেড সামগ্রী বিক্রিও হচ্ছে দেদার।

উৎসবের এই মৌসুমে শাকসবজি থেকে ফল, সব কিছুর অগ্নি মূল্য। কাঁচা পণ্যের দাম কেজি প্রতি ২০ থেকে ৪০ রুপি বেড়েছে। গরীব ও মধ্যবিত্ত অংশের মানুষের যেনো হাতে ছ্যাঁকা দিচ্ছে শাকসবজির অগ্নি মূল্য। তারপরও পকেটের কড়ির কথা চিন্তা না করে সবাই মেতেছেন লক্ষ্মী পূজার বাজারে। আয় যাইই হোক, তিনি যে ধনের দেবী। লক্ষ্মী দেবীকে রুষ্ট করতে চায় না ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা। তাই সব চিন্তা ঝড়ে ফেলে থলে হাতে বাজারে ছুটছেন গৃহকর্তারা, ফর্দ মিলিয়ে কেনাকাটায় ব্যাস্ত পূজার সামগ্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৭
এসসিএন/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।