ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আগরতলা

খেজুরের রসের জন্য গাছিদের প্রস্তুতি শুরু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
খেজুরের রসের জন্য গাছিদের প্রস্তুতি শুরু খেজুরের রসের জন্য শুরু হচ্ছে গাছিদের প্রস্তুতি ছবি: সুদীপ চন্দ্র নাথ

আগরতলা: শীতের সকাল মানেই যেন কুয়াশার চাদর মোড়ানো চারপাশ আর কনকনে হাওয়ার দাপট। এমন সকালে লেপের উষ্ণতা আর বিছানার আদর ছেড়ে কে আর উঠতে চায়! অথচ ঠিক কাকভোরেই হিম-কুয়াশা আর কনকনে হাওয়ার কামড় সয়ে শিশিরভেজা এক খেজুরগাছ থেকে অন্য খেজুরগাছে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন গাছিরা। কেননা খেজুরের রস সংগ্রহের মোক্ষম সময় এটাই।

খেজুরের রস মানেই যেন নলেন গুড়। এই গুড়ের তৈরি রসগোল্লা, পায়েস, লালি, মোয়া, সন্দেশ শীতে খাদ্য রসিকদের প্রাণে আলাদা আনন্দ আর তৃপ্তি আনে।

হেমন্ত ঋতু এলেই হিমেল বাতাস বইতে শুরু করে। আর তখনই গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য আঁটঘাট বাঁধতে শুরু করে দেন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গাছিরাও এর বাইরে নন। অন্যবারের মতো এই হেমন্তেও প্রকৃতিতে হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করার পর থেকেই গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন।

যদিও অতীতের মতো খেজুরের রসের সেই সুদিন আর নেই। মানুষ প্রকৃতির বিনাশ ঘটাচ্ছে আর সেই সঙ্গে প্রকৃতির আশির্বাদও দিনে দিনে কমছে। খেজুরগাছের যে আধিক্য ছিল একসময়, এখন তা আর নেই।

বিশেষ করে রাজধানী আগরতলা ও আশেপাশের এলাকা থেকে অন্য সকল গাছের সঙ্গে খেজুর গাছের সংখ্যাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে এখনো রাজধানীর উত্তরাঞ্চলের খেজুরবাগান এলাকায় এখনো কিছু  খেজুরগাছ শিবরাত্রির সলতের মতো টিকে রয়েছে। শীতের শুরুতে এই এলাকায় বসবাসরত বিহারী অংশের মানুষ খেজুরগাছ চেঁছে, গাছে হাঁড়ি বসিয়ে রস সংগ্রহ করে তা বিক্রি করেন।

এবছরও দেখা গেল খেজুরবাগান এলাকায় গাছিরা গাছ চেঁছে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাবুরাম গোয়ালা এদেরই একজন।

গাছে গাছে এসব হাঁড়ি এক সময় ভরে উঠবে সুস্বাদু রসে; ছবি সুদীপ চন্দ্র নাথরোববার (১২ নভেম্বর) বাংলানিউজকে বাবুরাম জানালেন, খেজুর গাছ চেঁছে প্রস্তুত করে রেখেছেন। শহরে এখনো জাঁকিয়ে শীত পড়েনি। তাই গাছ থেকে রস এখনো খুব একটা বের খুব হচ্ছে না বললেই চলে। জাঁকিয়ে শীত পড়লে তবেই রস বের হবে। তবে আজকাল শহরাঞ্চলে শীতের স্থায়িত্বও অনেক কম। রসও তাই আগের চেয়ে অনেক কম পাওয়া যায়। ফলে এই রস থেকে নলেন গুড় খুব বেশি তৈরি করা যায় না। যে পরিমাণ রস পাওয়া যায় তার প্রায় পুরোটাই আজকাল তারা বিক্রি করে দেন। তার কথার প্রমাণ পাওয়া গেল মাত্র একটি গাছে কলসী ঝুলতে আর অনেকগুলি কলসী গাছের তলায় উল্টে রাখা আছে দেখে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
এসসিএন/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।