ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরায় চলছে গড়িয়া উৎসব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৮
ত্রিপুরায় চলছে গড়িয়া উৎসব গড়িয়া উৎসব-ছবি-বাংলানিউজ

আগরতলা: গড়িয়া মূলত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের অন্যতম উৎসব। শনিবার (২১ এপ্রিল) ত্রিপুরাজুড়ে উদযাপন হচ্ছে গড়িয়া পূজা ও উৎসব। আগরতলাসহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে এই পূজা। 

প্রতি বছর বৈশাখ মাসের প্রথম দিন থেকে পাড়ায় পাড়ায় গড়িয়া প্রতিমা নিয়ে ঘুরেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। গড়িয়া দেবতা নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সময় গান গাওয়া হয়।

সারাদিন গড়িয়া দেবতাকে এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন এপাড়া-ওপাড়ার মানুষ গড়িয়া দেবতার এই শোভাযাত্রায় যোগ দেয়। তবে খেয়াল রাখা হয় গড়িয়া দেবতার ছায়া যাতে কারও শরীরে না পড়ে। এতে ওই ব্যক্তির অমঙ্গল হয় বলে রীতি রয়েছে।  

সন্ধ্যায় পাড়ার কোনো একটি বাড়িতে গড়িয়া দেবতাকে নিয়ে যাওয়া হয় বিশ্রামের জন্য। তবে তাকে ঘরের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয় না। বাড়ির উঠানেই রাখা হয়। রাতে গড়িয়া দেবতার সঙ্গের সব লোকের খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করেন এলাকাবাসী। এভাবে চলে টানা ছয়দিন। সব শেষে বৈশাখ মাসের ৭ তারিখ গড়িয়া দেবতার পূজা দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়।  

গড়িয়া মূলত গনেশ দেবতা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ককবরক ভাষায় তাকে গড়িয়া বলা হয়। বাঁশের একেবারে আগার অংশ, জুমের চাল, তাঁতে বোনা রিশা, কার্পাস তুলা ও চরকায় কাটা সুতো দিয়ে গড়িয়া দেবতার মূর্তি তৈরি করা হয়। গড়িয়া দেবতার যে জায়গায় পূজা দেওয়া হয় তার সীমানাও বাঁশের কারুকাজ করে বেড়া দেওয়া হয়।

পূজার উপকরণের মধ্যে অন্যতম হলো বাড়িতে তৈরি ভাতের মদ, দেশি মোরগ, মুরগির ডিম, বিন্নি চাল দিয়ে তৈরি এক বিশেষ ধরনের পিঠা এবং নিরামিষ সবজি ভাত।  

এই পূজার পুরহিতকে বলা হয় অচাই। তাকে সহযোগিতা করার জন্য আরও কয়েকজন লোক থাকেন। তারা নতুন কাপড় পরে সবার জন্য মঙ্গল কামনা করেন। সেইসঙ্গে জুমে যাতে ভালো ফসল উৎপাদিত হয় তারও প্রার্থনা করা হয় পূজায়। পরিবারের সদস্যদের মঙ্গলের জন্য একসঙ্গে মোরগ বলি দেওয়া হয় আবার কারও নামে মানত করে তার নামেও গড়িয়া দেবতার কাছে মোরগ বলি দেওয়া হয় বলে বাংলানিউজকে জানান অচাই বুধুরাই।  

আগে গড়িয়া পূজায় পাঠা এমনকি মোষ বলিরও প্রচলন ছিলো। তবে এখন বেশিরভাগ পূজাতে মোরগ ও কবুতর বলি দেওয়া হয়।  

সন্ধ্যায় পূজায় দেওয়া মদ খান সবাই মিলে ও নাচ-গান করেন।  

গড়িয়া পূজা উপলক্ষে প্রতি বছর আগরতলার অভয়নগর এলাকায় একদিনের মেলার আয়োজন করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, ২১ এপ্রিল, ২০১৮
এসসিএন/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।