ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরার নো ম্যানস ল্যান্ডে চা বাগানের পরিকল্পনা

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৮
ত্রিপুরার নো ম্যানস ল্যান্ডে চা বাগানের পরিকল্পনা চা বাগান। বাংলানিউজ (ফাইল ফটো)

আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারের আর্থিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে 'নো ম্যানস ল্যান্ডে' চা বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের অবস্থার উন্নতির পাশাপাশি গাঁজা চাষও শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। 

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তুষ সাহা এমনটাই জানিয়েছেন।  

ত্রিপুরার তিনদিকে রয়েছে বাংলাদেশ।

পূর্বে আসাম ও মিজোরাম রাজ্যের সীমান্ত। এ সীমান্তের বেশির ভাগ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে। আর বাকি অংশের কাজ চলছে।

সন্তুষ সাহা বলেন, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুসারে সীমান্তের শূন্য পয়েন্ট থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ মিটার ভেতরে ভারতের ভূমিতে কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে। কাঁটা তারের বেড়ার বাইরের দিক থেকে শূন্য পয়েন্ট পর্যন্ত জায়গাকে ‌নো ম্যানস ল্যান্ড বলে।  

আইন অনুযায়ী, এই শূন্য পয়েন্ট এলাকায় বাড়ি-ঘর বা উঁচু গাছপালা থাকতে পারবে না। তবে সীমান্তের যেসব এলাকা নিচু ও সমতল সেই এলাকার জমির মালিক ধান ও সবজি চাষ করছেন। কিন্তু সমস্যা হলো উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো ত্রিপুরার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে পাহাড় ও টিলা ভূমি। এতে সীমান্তের কাঁটা তারের বেড়ার বাইরে বিশাল অংশ উচু জমি পতিত পড়ে আছে। সীমান্ত বেড়ার বাইরের পতিত জমিতে ত্রিপুরার চা উন্নয়ন নিগম চা বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছে। এসব জমির মালিকদের ইতোমধ্যে চা গাছ লাগানোর জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তুষ সাহা।  ছবি: বাংলানিউজসন্তুষ আরও বলেন, রাজ্যের সিপাহীজলার অন্তর্গত কৈয়াঢেপা এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে বেশ কিছু জমিতে ক্ষুদ্র চা চাষিদের চা বাগান রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় পতিত জমিতে চা বাগান করার জন্য কিছু আইনি বিষয় রয়েছে। এজন্য ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ গৃহ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।  

সীমান্ত এলাকার জমিতে চা চাষ করার দুটি উপকারিতা রয়েছে উল্লেখ করে সন্তুষ বলেন, সীমান্ত এলাকার গরীব মানুষদের পতিত জমিতে চা চাষ করলে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে। পাশাপাশি সীমান্তের বহু এলাকার জঙ্গলে নিষিদ্ধ গাঁজা চাষ করে কিছুলোক। তারাও গাঁজা চাষ ছেড়ে চা চাষের সঙ্গে যুক্ত হবে। যদিও রাজ্যের বর্তমান সরকার গাঁজাসহ মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করছে।

খুব সহজেই মানুষ চা চাষের প্রতি আকৃষ্ট হবে কারণ একটি চা গাছ লাগানোর দুই বছরের মধ্যে চা পাতা তোলার যোগ্য হয়ে উঠে এবং গাছের বয়স চার বছর হলে তা থেকে পূর্ণমাত্রায় চা পাতা তোলা সম্ভব হয়। আর একটি গাছ থেকে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ বছর পর্যন্ত চা পাতা পাওয়া যায়। যে ব্যক্তি চা বাগান করবে তার পরবর্তী প্রজন্মও একই বাগানের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে বলেও জানান সন্তুষ সাহা।  

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮
এসসিএন/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।