শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজ্যের রাজধানী আগরতলার প্রতিটি বাজারে খুচরা বিক্রেতা গ্রীষ্মের এ ফল বিক্রি করছেন। কেউ কেউ আবার ভ্যানে ফেরি করে তরমুজ বিক্রি করছেন।
আগরতলার প্রধান বাজার প্যারাডাইস এলাকার ফল বিক্রেতা স্বপন দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, গতবছরের চেয়ে এবার মৌসুমী তরমুজ ফলটা একটু দেরিতে এসেছে। কি কারণে এ বছর বাজারে তরমুজ দেরিতে এসেছে তা তিনি ঠিক করে বলতে পারেননি। বাজারে আসা তরমুজগুলো রাজ্যের উৎপাদিত নয়, তবে এগুলো আসছে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার এলাকা থেকে।
ফল বিক্রেতা নারায়ণ রায় বাংলানিউজকে জানান, গতবছরের তুলনায় এবছর তরমুজের দাম তেমন বাড়েনি। বিক্রি মোটামুটি ভাল। এখন গড়ে প্রতিদিন চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার রুপির বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আর ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে রাজ্যের চাষিদের তরমুজ বাজারে আসতে শুরু করলে মানুষ অনেক কম দামে খেতে পারবেন। এজন্য কেজি ১৫ থেকে ২০ রুপিতে নামে আসে বলেও জানান। গত দু’বছর ধরে রাজ্যে তরমুজ চাষ কম হচ্ছে, বলে তার মতো। এর কারণ কি রাজ্যের তরমুজ চাষি কি কমে যাচ্ছে? এই প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, এই ধরুণ তরমুজ চাষের সিজন দুই থেকে আড়াই মাস। এর মধ্যে বৃষ্টি বাদল হলে, শিলাবৃষ্টি হলে তরমুজের খুব ক্ষতি হয়। এসব করণে হয়তো কিছুটা কম চাষ হচ্ছে রাজ্যে।
তিনি আশঙ্কার সঙ্গে বলেন, এবার ইতোমধ্যে রাজ্যে যে পরিমাণ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তাতে রাজ্যের তরমুজ চাষ কতটুকু ভালো হবে তা নিয়ে চিন্তিত তিনি। ব্যবসায়ী নারায়ণের সঙ্গে কথা বলার সময় তার দোকানে তরমুজ কিনতে এলেন পৌড় প্রবীর দেব। তিনি সাড়ে তিন কেজি ওজনের একটি তরমুজ কিনলেন।
ওই ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সাধারণ মানুষ মৌসুমী ফলের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তবে এগুলো তো ভিন রাজ্যের, সবার রাজ্যের উৎপাদিত তরমুজের জন্য অপেক্ষায় আছে। কেন অন্য রাজ্যের ও রাজ্যের তরমুজের মধ্যে পার্থক্য কি? স্বাদে কি কোনো তারতম্য আছে না দামের কথা চিন্তা করে? প্রশ্ন শুনে তিনি হেসে বললেন দাম একটি বিষয় ঠিক। স্বাদেও হয়তো কোনো তফাত নেই তবে বিষয়টা হচ্ছে মানসিক শান্তি। তরমুজগুলো এতো দূর থেকে আসছে এজন্য হয়তো ৫-৬দিন সময় লাগে।
ব্যবসায়ীরা জানান, তারা রাজধানীর সিরাজগঞ্জ ও বটতলা পাইকারি আড়তদারদের কাছ থেকে তরমুজ কিনেন। বড় ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার ও অন্যান্য জায়গা থেকে রাজ্যে নিয়ে আসেন।
বটতলা বাজারের আড়তের মাখন সাহা বাংলানিউজকে জানান, এবছরে গরম কিছুটা দেরিতে পড়েছে তাই বাজারে তরমুজ আসতে সামান্য দেরি হয়েছে। তবে এখন খুব ভালো চাহিদা। প্রতিদিন প্রায় দুই ট্রাক তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। তারা পাইকারি ২০রুপি প্রতি কেজি বিক্রি করছেন। রাজ্যের তরমুজ বাজারে এলে সাময়িক সময়ের জন্য ভিন রাজ্যের তরমুজ আমদানি বন্ধ হবে। তবে এখন সারাবছরই বাজারে তরমুজ পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি। তবে অন্য সময় দাম কিছুটা বেশি থাকে বলেও জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৯
এসসিএন/এএটি