ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ফুল চাষে জীবনের চাকা ঘুরেছে ইন্দ্রজীতের

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২০ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৯
ফুল চাষে জীবনের চাকা ঘুরেছে ইন্দ্রজীতের ফুলের পরিচর্যা করছেন ইন্দ্রজীৎ। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা: ফুল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন, পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন অন্যদের জন্যেও। মানুষটির নাম ইন্দ্রজীৎ দেবনাথ (৩৬)। তাকে দেখে এখন ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকেই।

ভারতের ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে প্রায় ১০৯ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ জেলার শান্তিরবাজারের প্রত্যন্ত গ্রাম কুশরঘাট। এ গ্রামেরই এক গরীব ঘরের সন্তান ইন্দ্রজীৎ।

শত কষ্টের মধ্যেও ২০০৫ সালে স্নাতক পাস করেন তিনি। কিছুদিন সরকারি চাকরির জন্য এদিক-ওদিক ঘুরেছেন। অবশেষে ২০০৮ সালে বাড়ির পাশের এক টুকরো জমিতে গোলাপ চাষ শুরু করেন তিনি।

সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় ইন্দ্রজীৎ দেবনাথের।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামে ধানসহ বিভিন্ন সবজি চাষ হলেও কেউ কোনোদিন ফুল চাষের কথা ভাবেননি, তাই আমার এ উদ্যোগ নিয়ে হাসাহাসি শুরু করেন সবাই। এ সময় পাশে দাঁড়ায় রাজ্যের কৃষি দফতর।

‘গোলাপ চাষ করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছিলো তার পুরোটাই আমাকে ফেরত দেয় কৃষি দফতরের বগাফা মহকুমা অফিস। পাশাপাশি ফুল চাষের ব্যাপারে নানা পরামর্শ দেন তারা। ’

ইন্দ্রজীৎ বলেন, আমার বাগানে গাঁদা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস, অর্কিডসহ মোট পাঁচ ধরনের ফুলের চাষ হয়। শীতকালে চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফুলও চাষ করা হয়।  

প্রায় ৫ বিঘা জমিতে গড়ে উঠেছে ইন্দ্রজীতের ফুলের বাগান। এরমধ্যে কিছু জমি নিজের ও বাকি অংশ লিজ নেওয়া। তার সঙ্গে ৫-৬ জন লোক সারা বছরই বাগানে কাজ করেন বলে জানান ইন্দ্রজীৎ দেবনাথ।

ইন্দ্রজীতের বাগানের ফুল।  ছবি: বাংলানিউজ

ফুল কোথায় বিক্রি করেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন বাজারের ফুলের দোকানে বিক্রি করা হয়। এছাড়া, পাইকারী ব্যবসায়ীরা বাগান থেকেই ফুল কিনে নিয়ে যান।  

ফুল বিক্রি করে কী পরিমাণ আয় হয়? এ প্রশ্নের জবাবে ইন্দ্রজীৎ বলেন, আগে কম হলেও এখন প্রতিবছর ৪ থেকে ৫ লাখ রুপির ফুল বিক্রি হয়।  

একজন সাধারণ সরকারি কর্মচারীর চেয়ে ইন্দ্রজীতের আর্থিক অবস্থা বেশ ভালো। ফুল চাষ শুরুর সময় যারা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো, এখন তারাই আসছেন ফুল চাষে সহায়তা ও পরামর্শের জন্য। তবে আগের কথা  মনে না রেখে তাদের যথাসাধ্য সহায়তা করেন বলে জানান এ সফল ফুলচাষী।

বেকার যুবকদের উদ্দেশে ইন্দ্রজীৎ বলেন, সরকারি চাকরির জন্য চেষ্টা করবেন ঠিক আছে, এর পাশাপাশি ফুল বা সবজি চাষ করলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। এমনও হতে পারে, অনেকেই সরকারি চাকরির চিন্তা আর না করে কৃষিকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নেবেন।

ইন্দ্রজীতের বাবা কৃষি দফতরের এগ্রিকালচার সুপারিনটেনডেন্ট দেবাশীষ পাল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সবসময় ইন্দ্রজীৎকে পরামর্শসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করছি। তাকে দেখে এলাকার আরও ৪-৫ জন ফুল চাষ শুরু করেছেন। কৃষি দফতর চেষ্টা করছে যেনো, আরও বেশি মানুষ ফুল চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হন। এক্ষেত্রে ইন্দ্রজীৎ তাদের জন্য যোগ্য দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৯
এসসিএন/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।