ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ভারতের একমাত্র বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র ত্রিপুরার বিকেডিআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৯
ভারতের একমাত্র বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র ত্রিপুরার বিকেডিআই

আগরতলা (ত্রিপুরা): ভারতের একমাত্র বাঁশ ও বেত গবেষণা কেন্দ্র ‘বেম্বো অ্যান্ড কেইন ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট’ (বিকেডিআই) ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থিত। ১৯৭৪ সালে রাজধানী আগরতলার মূল শহর থেকে একটু দূরে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

গবেষণা কেন্দ্রে বাঁশের ও জালি বেতের চারা রোপণ, পরিচর্যা এবং বাঁশ প্রক্রিয়া করণের পাশাপাশি বাঁশের পণ্য তৈরি ও বিপণনের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। বিগত দশ বছর ধরে এ কেন্দ্রে ত্রিপুরা রাজ্যের পাশাপাশি ভারতের অন্য রাজ্যের লোকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

কেরালা, মধ্য প্রদেশ, ছত্রিশগড়সহ উত্তরপূর্ব ভারতের যে রাজ্যগুলিতে বাঁশ উৎপাদিত হয়, সেইসব রাজ্যে থেকেও অনেকে আসেন প্রশিক্ষণ নিতে।  

বিকেডিআইয়ের অধ্যক্ষ ড. অভিনব কান্ত বাংলানিউজকে জানান, বাঁশ দিয়ে তৈরি পণ্যগুলোকে পাঁচটি আলাদা ভাগ করে ১৫, ৩০ ও ৪৫ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণে কি করে হাতের পাশাপাশি মেশিন ব্যবহার করে সুন্দর সুন্দর সামগ্রী তৈরি করা যায় এবং নতুন নতুন ডিজাইন উদ্ভাবন করা যায় সে বিষয়ে শেখানো হয়।

তিনি আরও জানান, গত ২৪ মে থেকে এ কেন্দ্রে মধ্য প্রদেশের বেম্বো মিশনের সহায়তা, ন্যাশনাল বেম্বো মিশনের অধীনে এবং বিকেডিআই ত্রিপুরার উদ্যোগে ৩০ দিনের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। যা ২২ জুন পর্যন্ত চলবে। এবারের প্রশিক্ষণে মধ্যপ্রদেশের ১৫ জন ও ঝাড়খন্ডের ২০ জন প্রশিক্ষণার্থী রয়েছেন। মধ্য প্রদেশের প্রশিক্ষণার্থীরা মূলত বাঁশ ও বেতের জুয়েলারী সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ১২ জন নারী আর তিনজন পুরুষ।  

মধ্য প্রদেশের ইন্দোর থেকে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছেন মনিকা নরলৈ। তিনি বাংলানিউজকে জানান, এখানে আসতে পেরে তিনি খুব খুশি। কারণ এখানে এসে জানতে পেরেছেন যে, বাঁশ ও বেত দিয়ে কত সূক্ষ্ম কাজ করা সম্ভব। এখানে প্রথমে তাদেরকে বেত তৈরি শেখানো হচ্ছে। এরপর এটি দিয়ে কি করে জুয়েরালী তৈরি করতে হয় তা শেখানো হচ্ছে।  

তিনি আরও জানান, সংস্থার পরিবেশ খুব সুন্দর। এছাড়া সবচেয়ে বড় বিষয় প্রশিক্ষকরা তাদেরকে খুব সুন্দরভাবে যত্নসহকারে এসব কাজ শেখাচ্ছেন। ফলে তারা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।  

অঙ্কিত বর্মা নামে মধ্য প্রদেশের সৎনা এলাকা থেকে প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক যুবক তার অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বাংলানিউজকে জানান, তাদের রাজ্যেও বাঁশের জুয়েলারী তৈরি হয়েছে। তবে সেগুলো অতি সাধারণ ডিজাইনের। এখানে না এলে তিনি জানতেনই না যে, এমন সূক্ষ্ম কাজ হয়। এখানকার ডিজাইনের বাঁশের তৈরি গয়নাগুলো মধ্য প্রদেশের মানুষকে খুব আকৃষ্ট করবে।  

তিনি আরও জানান, মধ্য প্রদেশের বেম্বো মিশন তাদেরকে এখানে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠিয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে নিজ রাজ্যে ফিরে গিয়ে তিনি বাঁশের গয়না তৈরির পাশাপাশি অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দেবেন।

প্রশিক্ষক গায়েত্রী নম বাংলানিউজকে জানান, তিনি বহু বছর ধরে ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। এদের মধ্যে এই সকল সামগ্রী তৈরিতে মধ্য প্রদেশের প্রশিক্ষণার্থীদের খুব আগ্রহ। তিনি মূলত গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

আরেক প্রশিক্ষক গীতা ভৌমিক বাংলানিউজকে জানান, তিনি বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন রকমের ঝুড়ি তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন।  

এছাড়া ঝাড়খন্ড থেকে আসা ২০ প্রশিক্ষণার্থী বিভিন্ন ধরনের বাঁশের ঝুড়ি তৈরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। পাশাপাশি তাদের রাজ্যে কি ধরনের ঝুড়ি তৈরি হয় তাও তৈরি করে দেখাচ্ছেন তারা।  

সব মিলিয়ে বাঁশশিল্পকে রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে বেম্বো অ্যান্ড কেইন ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৯
এসসিএন/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।