বৈরি আবহাওয়ার দরুণ এখন শরতকালে হিমেল হাওয়ার অনুভূতি ও শিউলি ফুলের ঘ্রাণ কম পাওয়া গেলেও স্বচ্ছ নীল আকাশে চলছে তুলার মতো মেঘের আনাগোনা। নদীর তীরে তীরে ফুটে উঠেছে কাশফুল।
শরৎ মানেই উৎসবের ঋতু। বাঙালি হিন্দুর অন্যতম বড় উৎসব দুর্গা পূজা ছাড়াও এ ঋতুতেই উদযাপিত হয় বিশ্বকর্মা পূজা, কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা ও শ্যামা পূজা। এসব ঘিরে এরই মাঝে ত্রিপুরার বিভিন্ন অঞ্চলে ক্লাব থেকে শুরু করে কুমারপাড়াগুলো প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সরেজমিনে রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম নোয়াবাদী এলাকার কুমারপাড়ায় গেলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত দেখা যায়।
এ মৌসুমে প্রতিমার কাজকর্ম সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিমা শিল্পী নারায়ণ রূদ্রপাল বাংলানিউজকে জানান, ৩৫ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত তিনি। বংশপরম্পরায় এ পেশায় আগমন তার। এ বছর এখন পর্যন্ত মোট ১৪টি দুর্গা প্রতিমার অর্ডার এসেছে বলে জানান এ শিল্পী। অর্ডার ছাড়াও তিনি প্রতিমা তৈরি করে থাকেন বলে জানান।
এবারের মৌসুম ঘিরে গত চৈত্রমাস থেকেই দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন নারায়ণ। এরই মাঝে অর্ডারের ৮০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ। এখন শুধু প্রতিমার শরীরে আঙুল লাগানো, রঙ করা ও শাড়ি, গয়না পরানোর কাজ বাকি আছে। পূজা কমিটির হাতে প্রতিমা তুলে দেওয়ার আগে এ কাজগুলি করবেন বলে জানান তিনি।
দুর্গার পাশাপাশি মনসা ও আসন্ন বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষেও প্রতিমা বানানোর কাজ চলছে কুমার পাড়াজুড়ে। এ বছর ১৫ হাজার রুপি থেকে ৫০ হাজার রুপি মূল্যের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন নারায়ণ। প্রতিবছরই পূজার সংখ্যা ও প্রতিমার মূল্য কিছুটা বাড়ছে বলে জানান তিনি। মোট ছয় শিল্পী প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এ কাজ করছেন।
প্রতিমা গড়ে সংসার চলে কিনা জানতে চাইলে নারায়ণ বলেন, সারাবছরই কোনো না কোনো প্রতিমা তৈরির কাজ করেন তিনি। লাভ হয় বলেই সব মিলিয়ে ভালোভাবেই পরিবার নিয়ে বেঁচে আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯
এসসিএন/এইচজে/এইচএ