ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরায় পরীক্ষামূলক ড্রাগন ফলের চাষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
ত্রিপুরায় পরীক্ষামূলক ড্রাগন ফলের চাষ ত্রিপুরায় পরীক্ষামূলক ড্রাগন চাষ। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): ড্রাগন ফল, নাম শুনে সহজেই অনুমেয় ফলটির আদি ভূমি চীন। এর বৈজ্ঞানিক নাম হিলোসেরাস আনডেটাস। এটি ক্যাকটাস প্রজাতির ফল। চীন ছাড়াও বর্তমানে ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশসহ আরও কিছু দেশে ড্রাগন ফল চাষ করা হচ্ছে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মাটিতেও প্রাথমিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়েছে। 

যদিও এখনও ত্রিপুরা রাজ্যের চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে এই ফলের চাষ শুরু করেননি। তবে ত্রিপুরা পশ্চিম জেলার অন্তর্গত লেম্বুছড়ার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচার রিসার্চ (আইসিএআর) খামারে পরীক্ষামূলকভাবে গত দুই বছর আগে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়েছে।

সংস্থাটির উদ্যান বিভাগের কৃষি বিজ্ঞানী বিশ্বজিৎ দাস জানান, সামান্য জৈবসার অথবা অল্প পরিমাণে রাসায়নিক সার যেমন ইউরিয়া মাটিতে মিশিয়ে দিলে এ গাছগুলো দ্রুত বেড়ে ওঠে। লাগানোর প্রথম বছর থেকেই ফুল আসতে শুরু করে। ড্রাগন গাছে ফল আসে কাণ্ডের একেবারে শীর্ষভাগে।  

ড্রাগন ফল।  ছবি: সংগৃহীত

পরাগায়ন সমস্যার কারণে ফুলের চেয়ে ফল কম ধরে। তবে নিয়ম অনুযায়ী এর পরাগায়নে সাহায্য করলে প্রচুর ফল আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এই কৃষি বিশারদ।  

ড্রাগন ফুলের পরাগায়ণ হয় সন্ধ্যার পর। এসময়, ফুলের পরাগায়নে সাহায্য করতে হয় চাষিকে। সাধারণত গ্রীষ্মকালে এই ফল চাষ করা হয়। তাপমাত্রা কম থাকলে ফুলই আসেনা এই গাছে। তবে বিশেষ পদ্ধতিতে তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারলে এ ফল চাষে লাভবান হতে পারেন চাষিরা।  

বিশ্বজিৎ জানান, কাঁটাযুক্ত গাছগুলো ৯ থেকে ১০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। গাছ বেড়ে ওঠার সময় বাঁশ, কাঠ বা লম্বাজাতীয় কোন কাঠি খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। এতে গাছ সোজা হয়ে বেড়ে ওঠে। আইসিএআর সেন্টারে গাছগুলোর পেঁচিয়ে ওঠার জন্য চট ও লোহার পাত ব্যবহার করা হয়েছে। ডালপালাগুলো সুন্দরভাবে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে খুঁটির ওপর পুরনো টায়ার ও চাকা ব্যবহার করা হয়েছে।  

মোটা খুঁটিতে একসঙ্গে তিন থেকে চারটি গাছও রোপণ করা যায়। শুষ্ক মৌসুমে চটগুলোতে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হলে আর্দ্রতা বজায় রাখতে সুবিধা হয়। গাছগুলোর কোনো পাতা হয়না। সবুজ কাণ্ডেই ফুল ও ফল হয়। মোটামুটি দুই থেকে তিন বছর গাছগুলো বেঁচে থাকে বলে জানালেন কৃষিবিদ বিশ্বজিৎ দাস।

ত্রিপুরায় ড্রাগন ফল চাষ।  ছবি: বাংলানিউজ 

আইসিএআর থেকে রাজ্যের চাষিদের ড্রাগন ফল চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কি-না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এখনও চাষিদের চারা ও বীজ বিতরণ শুরু হয়নি। শিগগিরই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তবে অনেকেই কৃষি সেন্টার থেকে চারা নিয়ে শখের বশে ছাদ ও বাগানে চাষ করছেন বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।  

বিশ্বজিৎ মনে করেন, সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ফলচাষে কৃষকদের আগ্রহী করা গেলে ত্রিপুরায় ড্রাগন ফল চাষাবাদ সম্ভব। রাজ্যটির মাটি ও আবহাওয়া এ ফল চাষে উপযোগী। বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগনের চাষ হলে অর্থনৈতিকভাবেও এগিয়ে যেতে পারবেন ত্রিপুরা রাজ্যের চাষিরা।   

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এসসিএন/কেএসডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।