ত্রিপুরা রাজ্যে কীভাবে আগর উৎপাদিত হচ্ছে এবং চাষীরা প্রাকৃতিকভাবে যেন অধিক পরিমাণ আগর পেতে পারেন তার জন্য গবেষণা করছেন আসাম রাজ্যের জোরহাট এলাকার ভারত সরকারের রেইন ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কীটপতঙ্গ বিভাগের গবেষক ড. নিজারা বরঠাকুর।
নিজারা বরঠাকুর বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আগর মূলত দু’টি পদ্ধতিতে গাছে হয়ে থাকে।
প্রথম পদ্ধতিতে অর্থাৎ কীটের আক্রমণের ফলে যে আগর তৈরি হয় তার গুণগতমান খুব ভালো এবং এর মূল্য অনেক বেশি বলে জানান ড. নিজারা বরঠাকুর।
এই গবেষক জানান, এই কীটের নাম নিউরোজিরা কনর্ফাটা। মূলত আগর চাষীদেরকে কীটের মাধ্যমে গুণগত মানসম্পন্ন আগর পাওয়া যায় এই বিষয়টি তিনি বুঝিয়ে দেন। ত্রিপুরা রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে আগর গাছ জন্ম নিলেও সব জায়গার আগর একই মানের হয় না। তবে এখন কীভাবে অন্য জায়গা থেকে কীট এনে আগরের মান বাড়ানো করা যায় তা নিয়ে তারা গবেষণা করছেন এবং তাদের গবেষণার ফল আশাব্যঞ্জক। এমনকি তারা গবেষণাগারে এই কীটদের প্রজনন ঘটিয়েছেন। এখন তিনি এগুলো গাছে প্রতিস্থাপন করে গুণগত মানসম্পন্ন আগর উৎপাদন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ গবেষক জানান, ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তিনি আগর বাগানগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন ও দেখছেন কোন বাগানে কী ধরনের আগর উৎপাদিত হচ্ছে। উত্তর জেলার কদমতলা এলাকায় কিছু কিছু বাগানে কীটের মাধ্যমে আগর উৎপাদিত হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ জায়গায় এখন দ্রুত উৎপাদনের জন্য চাষীরা নেইলিং পদ্ধতি ব্যবহার করছে। কীটের মাধ্যমে আগর উৎপাদন খুব একটা কঠিন কাজ নয়। যেসব বাগানে আগর গাছে কীট পাওয়া যায়, এই পূর্ণবয়স্ক গাছগুলো যখন কাটা হয় তখন একটু সাবধানতা অবলম্বন করে পোকাগুলো নষ্ট না করে তিন চারটা করে পোকা একেকটি আগর গাছে গর্ত তৈরি করে ঢুকিয়ে দিলেই তারা নিজেরা গাছের ভেতর আঁকাবাঁকা টানেল তৈরি করে। সেই সঙ্গে বংশবিস্তার করে এর ফলে গাছে প্রাকৃতিক আগর উৎপাদিত হয়। এর মূল্য অনেক বেশি।
তিনি আরও জানান, তার গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য হলো- কী করে আগর গাছে উন্নত মানের প্রাকৃতিক আগর উৎপাদন করা যায়। যার মূল্য নেইলিং করা আগরের চেয়ে বেশি। আসামের বিভিন্ন জায়গায় চাষীদেরকে তারা প্রাকৃতিক আগর উৎপাদনের লাভজনক দিক বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি আশাবাদী আগামী দিনে ত্রিপুরা রাজ্যের আগর বাগানগুলোতেও ব্যাপকভাবে প্রাকৃতিক ভাবে আগর উৎপাদিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৯
এসসিএন/এইচএডি/