তৎকালীন ক্যাম্প দু’টিতে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন বিভু রঞ্জন চ্যাটার্জী। ভারতীয় সেনাবাহিনীর আর্টিলারি শাখার অফিসার মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ক্যাপ্টেন চ্যাটার্জী নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন।
৪২ বিঘা জায়গাজুড়ে ক্যাম্প দু’টি তৈরি হয়েছিল। এর বেশির ভাগ ছিল সরকারি খাস জমি। কিছু জমি ছিল ক্যাপ্টেন চ্যাটার্জীর নিজের। যুদ্ধ শেষে লাল সবুজের পতাকার বাংলাদেশের জন্মের পর মুক্তিযোদ্ধারা নিজ নিজ বাড়ি চলে যান। তখন পড়ে থাকে ক্যাম্পের ফাঁকা ঘরগুলো। কিন্তু ক্যাপ্টেন চ্যাটার্জী ক্যাম্প ছেড়ে যাননি। যুদ্ধের সময় তার জন্য মাটির দেওয়ালের একটি কুঁড়েঘর তৈরি করা হয়েছিল, সেই ঘরেই তিনি থেকে যান। পরিবারের সদস্যরা রাজধানী আগরতলায় চলে গেলেও ক্যাপ্টেন সেখানে থেকে যান।
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সেখানে থাকেন বলে বাংলানিউজকে জানান তার ছেলে রাজীব চ্যাটার্জী। ক্যাম্পের আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও জানান বৃদ্ধ বয়সে তিনি ছোট কুঁড়েঘরের মধ্যে সারাদিন শুয়ে-বসে কাটিয়ে দিতেন।
আরও পড়ুন
** ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আমার বাবার অবদান আছে’
তবে ক্যাম্প দু’টির বেশির ভাগ জায়গা এখন স্থানীয় এলাকাবাসী দখল করে নিয়েছে। ক্যাম্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখনো ক্যাপ্টেনের কুড়েঘরটি রয়েছে। বাকি চার দিক ঢেকে আছে রাবার বাগানে। রাজীব চ্যাটার্জী জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা বাগানগুলো দখল করে নিয়েছে।
ক্যাপ্টেনের পরিবারের সদস্যদের দাবি, সরকার যেন এলাকাটি দখলদারদের কাছ থেকে মুক্ত করে এখানে চ্যাটার্জীসহ এ ক্যাম্প থেকে যুদ্ধে গিয়ে যেসব মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে একটি পার্ক তৈরি করা হোক। তা হলে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা বাংলাদেশের জন্মের জন্য এ ক্যাম্পসহ সেই সময় স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের আন্তরিক সহযোগিতার কথা জানতে পারবেন।
সরকার যদি বেদখল জমি অধিগ্রহণ করে তবে ক্যাপ্টেনের নিজস্ব যে জমি রয়েছে তাও তারা তুলে দেবেন পার্ক তৈরির জন্য। রাজীব চ্যাটার্জী বলেন, তাদের কাছে জমির দলিল রয়েছে। এখানে পার্ক স্থাপনের বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা ত্রিপুরা রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ঞু দেববর্মার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জায়গাটি পরিদর্শন করে প্রস্তাবের বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবেন বলে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
এসসিএন/আরবি/