ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

জ্বলছে আসাম, বিজেপি নেতাদের বাড়িঘরে হামলা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
জ্বলছে আসাম, বিজেপি নেতাদের বাড়িঘরে হামলা

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের জনগণ। ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি পাস হওয়ার পর থেকেই আসামের বিভিন্ন জায়গায় সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়।

ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের জেরে এরই মাঝে কাশ্মীরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সেনাবাহিনীর কিছু ইউনিটকে আসামে সরিয়ে আনা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট সেবা।  

পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজধানী গুয়াহাটিতে কারফিউ জারি করা হলেও, তা ভেঙে রাস্তায় নেমে এসেছে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা দোকানপাট ও যানবাহনে আগুন দেয়। বেশ কয়েকটি রেলস্টেশনেও ভাঙচুর চালানো হয়।  

রয়টার্স জানায়, বিক্ষোভকারীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়ালসহ বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতার বাড়িঘরে হামলা করেছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।  

এদিকে চলমান এ বিক্ষোভ থামাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আশ্বাসবাণীও কাজে আসছে না। বরং বিক্ষোভকারীরা ডিব্রুগড়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের একটি দফতরে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের। দফতরের বাইরে বেশ কয়েকটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলেও দাবি তাদের।  

এরই মাঝে সাধারণ আন্দোলনকারীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ‘অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ (আসু) ও কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস)। সাধারণ মানুষকে ঘর ছেড়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছে তারা।  

ক্রমে ক্রমে বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করায় বেশ কিছু সংস্থা আসাম বিমান বন্দর থেকে নিজেদের একাধিক ফ্লাইট বাতিল করেছে। রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচলও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।  

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আসামবাসীর উদ্দেশে টুইট করেছেন নরেন্দ্র মোদী। আসামি ভাষায় তিনি লেখেন, সিএবি নিয়ে আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। কেউ আপনাদের অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না।

অন্যদিকে মোদির টুইটের প্রতিক্রিয়ায় তাকে কটাক্ষ করে পালটা টুইট করেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। কংগ্রেসের ওই টুইটে বলা হয়, আমাদের আসামিয়া ভাইবোনেরা আপনার এই আশ্বাসবার্তা পড়তে পারবেন না মোদিজি। আপনি হয়তো ভুলে গেছেন, তাদের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধ বিল প্রসঙ্গে বিজেপি বলছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যেই এ আইন তৈরি করা হয়েছে।

কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসসহ ভারতের বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল বিতর্কিত এ বিলের বিরোধীতা করছে। বিভিন্ন মুসলিম দলের নেতারাও বিলটির তীব্র সমালোচনা করছে।  

আসামে এই আইনের প্রতিবাদকারীদের বক্তব্য, এ বিলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসামে আরও বেশি সংখ্যক বাঙালি হিন্দুর যাওয়ার পথ খুলে দেওয়া হয়েছে। এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় অহমীয়া জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাভাষী জনগণের বিরোধ চলছে সেখানে।
 
এদিকে বৃহস্পতিবার নাগরিকত্ব বিলের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে। সুপ্রিম কোর্টের কাছে পেশ করা এ আবেদনে তারা বলে, এই আইনটি ভারত সংবিধানের সাম্য, মৌলিক অধিকার ও জীবনের অধিকার সংক্রান্ত বিধানগুলোকে ভঙ্গ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।