প্লাস্টিকওসেনস ডট কম (plasticocens.com) সংস্থার জরিপে দেখা গিয়েছে যে, প্রতিবছর গোটা বিশ্বে প্রায় ৩শ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন করা হয়। এর প্রায় অর্ধেক প্লাস্টিক শুধুমাত্র একবার ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়ে থাকে।
জরিপে আরও দেখা গিয়েছে যে, প্রতিবছর মোট উৎপাদিত প্লাস্টিকের প্রায় আট মিলিয়ন টন প্লাস্টিক সমুদ্রের পানিতে গিয়ে মিশেছে। প্লাস্টিক দূষণের এই ভয়াবহ দিকটির কথা চিন্তা করে ভারত সরকার প্লাস্টিক ফ্রি ইন্ডিয়া মিশন হাতে নিয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো। বিশেষ করে একবারের ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বোতল যাতে দুই ব্যবহার করা না হয় । এক্ষেত্রে ত্রিপুরা রাজ্যের কারিগরদের বানানো বাঁশের বোতল একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। তাই খাদি বোর্ড অব ইন্ডিয়া আগ্রহ সহকারে ভারতজুড়ে এই বোতল ছড়িয়ে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ত্রিপুরা রাজ্য খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে জানান, সম্প্রতি খাদি বোর্ড অব ইন্ডিয়া চেয়ারম্যান বিনয় কুমার সাক্সেনা দুইবার রাজ্য সফরে এসে ছিলেন। তখন তিনি ত্রিপুরার বাঁশ কারিগরদের হাতে বাঁশের বোতল দেখে খুব খুশি হন। প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে এই বিতর্কে ভারতজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি।
পরে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ফিরে গিয়ে ত্রিপুরা রাজ্য খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদকে চিঠি পাঠিয়ে প্রাথমিকভাবে ত্রিপুরা থেকে দুই হাজার বাঁশের বোতল নিয়ে যাওয়ার জন্য অর্ডার দেন।
তার এই উদ্যোগে খুশি ত্রিপুরা রাজ্য খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদ বলেও জানান চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্য।
তিনি আরও জানান, রাজ্যের বাঁশ শিল্পের কারিগররা ওই বোতল বানাতে সক্ষম। তাই এই কাজের সঙ্গে যাতে বাকি কারিগররা যুক্ত হতে পারেন, সেজন্য ত্রিপুরা রাজ্য খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদ বৈঠক করে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা নেবে। এই বিষয়ে ত্রিপুরার গোমতী জেলার বাঁশশিল্পী গৌতম শীলের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।
তিনি জানান, তার সঙ্গে যদিও ত্রিপুরা রাজ্য খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদের সরাসরি কথা হয়নি। তবে তিনি এ খবর শুনে বেশ খুশি। কারণ এর ফলে ত্রিপুরা রাজ্যের বাঁশ শিল্পের কারিগরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। এজন্য তিনি ভারত সরকার এবং ত্রিপুরা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
বাঁশের তৈরি পানির বোতল ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়লে একদিকে ত্রিপুরার বাঁশের শিল্পের কারিগররা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। তেমনি বিশ্ব প্লাস্টিক সমস্যার হাত থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
এসসিএন/এএটি