ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরার মাটিতেও কফির সুঘ্রাণ

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২০
ত্রিপুরার মাটিতেও কফির সুঘ্রাণ কফি, ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): চা চাষ করে আগেই সফলতা দেখিয়েছে ভারতের অন্যতম পিছিয়ে থাকা রাজ্য ত্রিপুরা। আপেল ফলিয়েও দেখিয়েছে বিপ্লব।

আর আনারস তো পাড়ি জমিয়েছে বিদেশে। এসবের পর কফি চাষেও ঝুঁকছে রাজ্যটি। রাজধানী আগরতলার পার্শ্ববর্তী নাগিছড়া এলাকায় অযত্নে গড়ে উঠেছে একটি কফি বাগান। এতে ধরেছে প্রচুর পরিমাণ ফল।  

ভারতের দক্ষিণের রাজ্যগুলি কফি চাষের জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে কর্ণাটক এবং কেরল রাজ্যে প্রচুরসংখ্যক কফি বাগান রয়েছে। এই বাগানগুলিতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ কফি উৎপাদিত হয়। কফি বোর্ড অব ইন্ডিয়ার প্রধান কার্যালয়টিও রয়েছে কর্ণাটক রাজ্যে। শুধু দক্ষিণ ভারত কফি চাষের জন্য উপযুক্ত- যারা এই ধারণা নিয়ে আছেন তাদের ধারণা পাল্টে দিতে পারে ত্রিপুরার নাগিছড়া এলাকার কফি বাগান।

প্রায় গভীর জঙ্গলে বিশাল এলাকাজুড়ে কফি বোর্ড অব ইন্ডিয়ার তরফে বেশ কয়েক বছর আগে একটি কফি বাগান তৈরি করা হয়েছিল নাগিছড়া এলাকায়। বর্তমানে বাগানটির পরিবেশ দেখে মনে হবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাগানের চারদিকে তারের যে বেড়া দেওয়া হয়ে ছিল তা কবেই মরচে ধরে গেছে ভেঙে।  

বাগানের জঙ্গলও পরিষ্কার করা হয় না। তাই আশপাশে প্রচুর আগাছা জমে আছে, সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হচ্ছে না গাছগুলির। এরপরও গাছগুলিতে প্রচুর কফি ধরেছে। একাধিক দিন এ বাগানে গিয়ে কাউকে দেখতে পাওয়া যায়নি। শুধু এ বছরই বাগানে ফলন হয়েছে তা নয়। প্রতিবছরই যে এভাবে বাগানে বিপুল পরিমাণ কফি ধরে তার স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া যায় বাগানের চারপাশ দেখে। কারণ বাগান ও পার্শ্ববর্তী রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে ছোট ছোট কচি চারা রয়েছে এলোমেলোভাবে। এ থেকে বোঝা যায় বাগানে যে কফি উৎপাদিত হয় তা সংগ্রহ করা হয় না এবং এগুলি নিচে পড়ে ছোট ছোট চারা গাছের জন্ম হয়েছে।  

রাজধানী আগরতলা শহরে কফি বোর্ড অব ইন্ডিয়ার কোনো আঞ্চলিক অফিস নেই। তাই বাগানটি কবে গড়ে তোলা হয়েছে, কতটুকু জায়গাজুড়ে এই কফি বাগান ছড়িয়ে রয়েছে, এতে কত সংখ্যক কফি গাছ রয়েছে, কবে থেকেই গাছগুলিতে কফি ফলন হচ্ছে, উৎপাদিত কফি আহরণ করা হচ্ছে কিনা তার কোনো তথ্যই জানা সম্ভব হয়নি।

..

ইন্টারনেট থেকে কফি বোর্ড অব ইন্ডিয়ার ই-মেইল আইডি সংগ্রহ করে এ বিষয়ে প্রায় এক মাস আগে ই-মেইল পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো উত্তর আসেনি। তাই নাগিছড়ার কফি বাগানের অনেক তথ্যই সাধারণ মানুষের অজানা রয়ে গেলো।

ত্রিপুরার নাগিছড়া এলাকা কফি বাগান সম্পর্কে পশ্চিম আসনের এমপি প্রতিমা ভৌমিক জানান- ত্রিপুরায় যে কফি বাগান রয়েছে তা তিনি শুনেছেন। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য তার জানা নেই। তবে বিষয়টি ভারত সরকারের নজরে নিয়ে আসবেন বলে বাংলানিউজকে আশ্বাস দেন।  

তিনি আরো বলেন, যেহেতু ত্রিপুরা রাজ্যে কফি সফলভাবে চাষ হচ্ছে তাই কফি বোর্ড অব ইন্ডিয়া চায় যাতে আরো ব্যাপক আকারে চাষ করা হয়। তবে রাজ্যে উদ্যান ফসলে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। তাই তিনি বিষয়টি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করবেন বলেও জানান।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২০
এসসিএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।