ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

শিগগিরই ত্রিপুরায় গড়ে উঠছে প্রথম কৃষি পর্যটন কেন্দ্র

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২১
শিগগিরই ত্রিপুরায় গড়ে উঠছে প্রথম কৃষি পর্যটন কেন্দ্র পাম গাছ।

আগরতলা, (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা রাজ্যের প্রথম এগ্রোটুরিজম তথা কৃষি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠছে আগরতলার নাগিছড়ায়। এই এলাকার উদ্যান গবেষণাকেন্দ্রের রেড পাম অয়েল বাগানে গড়ে তোলার হবে এটি।

রাজ্যের পর্যটন এবং কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী প্রণজীৎ সিংহ রায় নিজে এই জায়গাটি ঘুরে দেখেছেন।

ভোজ্য তেলের মধ্যে জনপ্রিয় একটি হচ্ছে পাম তেল। বিশ্বজুড়ে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এমনকি প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশেও দিন দিন আম তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মূলত পাম গাছের ফল থেকে পাম তেল তৈরি করা হয়।  
বিশ্বজুড়ে এর চাহিদার কথা চিন্তা করে হাজার ১৯৮১ সালে ত্রিপুরা সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অন্তর্গত উদ্যান এবং ভূমি সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালিত আগরতলার পার্শ্ববর্তী নাগিছড়া এলাকার উদ্যান গবেষণাকেন্দ্রের প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে রেড অয়েল পাম গাছ লাগানো হয়েছিলো।  

এই গাছগুলির এখন বিশাল আকার ধারণ করেছে। ত্রিপুরা রাজ্যের আবহাওয়া ও জলবায়ু পাম গাছ চাষের যথেষ্ট উপযুক্ত তাই ত্রিপুরা রাজ্যে পাম গাছের বাণিজ্যিক চাষ সম্ভব এবং প্রচুর পরিমাণে পাম তেল উৎপাদন হবে। কিন্তু এরপরও ত্রিপুরা রাজ্যে এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে পাম তেল উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি, এর কারণ হচ্ছে যেখানে পাম গাছের বাগান থাকবে তার আশেপাশের এলাকায় পাম ফল থেকে তেল প্রক্রিয়াকরণ করার একটি কারখানা থাকা জরুরি।  

কারণ পাকা ফল গাছ থেকে পাড়ার পর যত দ্রুত সম্ভব এগুলিকে প্রক্রিয়াকরণ করে তেল বের করে নিতে হয়। ফলের মধ্যে রস থাকা অবস্থায় যে পরিমাণ পাম তেল পাওয়া যায় তা শুকিয়ে গেলে তেলের পরিমাণ কমে যায় তাই গাছ থেকে ফল পাড়ার পর যত দ্রুত সম্ভব এগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে নিতে হয়। কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্যে পাম তেল বের করার কোনো কারখানা স্থাপিত হয়নি তাই বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ সফল হয়নি বলে বাংলানিউজকে জানান নাগিছড়ার উদ্যান গবেষণাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ।  

পাম চাষের অন্যতম আরও একটি শর্ত হচ্ছে জল সেচ। নিয়মিত গাছের গোড়ায় পানি দিতে হয়। কিন্তু উদ্যান গবেষণাকেন্দ্রের এই প্লটে আগের পানি সেচের ব্যবস্থা ছিল না। এরপরও গাছগুলি এখন যথেষ্ট বড় হয়েছে এবং সুন্দর একটি প্রাকৃতিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই বাগান কে ঘিরে এগ্রোট্যুরিজম কেন্দ্র স্থাপনের একটি দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে।  

সম্প্রতি কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী প্রঞ্জিত সিংহ রায় কৃষি গবেষণাকেন্দ্র পরিদর্শনের পাশাপাশি এই পাম বাগান ঘুরে দেখেছেন। তিনি এই জায়গাটিতে এগ্রো ট্যুরিজম কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এতে করে এই জায়গাটির উপযুক্ত ব্যবহার হবে, সরকারের বাড়তি রাজস্ব আদায় হবে, আশেপাশের এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সবমিলিয়ে দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত পাম গাছের বাগান বাস্তবিক অর্থে কাজে লাগবে। এগুলো ট্যুরিজম পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন একটি দিক। পরিত্যক্ত পাম বাগানকে কাজে লাগিয়ে এমন একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুললে তা ত্রিপুরা শহর অন্যান্য এলাকার মানুষদের কেউ আকৃষ্ট করবে এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২১
এসসিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।