ঢাকা, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

সৌদি আরব

মরুভূমিতে সবজি চাষে ভাগ্য বদল শাহ আলমের

মোহাম্মদ আল-আমীন, সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২২ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৬
মরুভূমিতে সবজি চাষে ভাগ্য বদল শাহ আলমের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আল-খারিজ থেকে ফিরে: বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলা সদরের নতুন কোষপাড়া এলাকার বেলায়েত আলী সরকারের বড় ছেলে শাহ আলম সরকার। মরুভূমির বুকে সবজি চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন তিনি।



১৯৮৯ সালে এসএসসি আর ১৯৯১ সালে ঝিনাইদহ কৃষি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর চরমপন্থীদের অত্যাচারে দেশ ছাড়েন শাহ আলম।

চরমপন্থীদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে ১৯৯১ সালে পাড়ি জমান মরুভূমির দেশ সৌদি আরবে। সৌদি আরবে এসে সামান্য বেতনে কাজ নেন একটি মাজরাতে (কৃষি খামার)। হাল ছাড়েননি শাহ আলম।

বেশ কয়েক বছর অল্প বেতনে কাজ করে কফিলের (স্পন্সর) কাছ থেকে সামান্য জমি ভাড়া নিয়ে নিজেই শুরু করেন চাষাবাদ। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি শাহ আলম সরকারকে।

বর্তমানে শাহ আলমের ভাড়া নেওয়া জমির পরিমাণ ৭০ হেক্টর (প্রায় ১২০ বিঘা)। এই জমিতে চাষ হচ্ছে বেগুন, লাউ, সিম, মরিচ, ক্যাপসিকাম, সুদানী ফুল, কুচা সহ রকমারী সবজি।

শাহ আলমের বর্তমান কৃষি খামারটি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ‘আল খারিজ’ নামে জায়গায় অবস্থিত। সেখানে আরও বেশ কিছু কৃষি খামার রয়েছে যার অধিকাংশই পরিচালনা করছে বাংলাদেশিরা।

এক সময় অন্যের অধীনে সামান্য বেতনে কাজ করা শাহ আলমের বর্তমান শ্রমিকের সংখ্যা ৪৫ এর বেশি। এবং এর অধিকাংশই বাংলাদেশি।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় শাহ আলম বলেন, ‘আমার এখানে কাজ করা শ্রমিকের অধিকাংশই বাংলাদেশি। শুধু তাই নয়, ক্ষেত্র বিশেষ অন্য দেশের শ্রমিকের চাইতে বাংলাদেশিদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ। বাংলাদেশিদের ভিসা চালু হলে বাংলাদেশ থেকে আরও কিছু শ্রমিক নেওয়ার কথাও জানান শাহ আলম।

তিনি আরও বলেন, এখানে কাজ করা অনেক বাংলাদেশিরই ইকামা ছিল না। সৌদি বাদশার সাধারণ ক্ষমার সময় নিজের পকেটের টাকা দিয়ে সবাইকে বৈধ করেছি। কারণ একটাই, বাংলাদেশিরা খুব সহজে সব কাজ আয়ত্বে আনতে পারে। তারা কাজে ফাঁকি দেয় না। যোগ করেন সফল এই সবজি চাষি।

স্কুল পড়ুয়া দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে আল খারিজে বসবাস করা শাহ আলমের আয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মুচকি হেসে তিনি বলেন, এমনিতে খরচ অনেক। তার ওপর বেড়েছে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম। সব খরচ বাদ দিলে বছরে কোটি টাকার মতো সেভ করতে পারি।

উৎপাদিত পণ্যের বিপণন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের গাড়িতে করে রিয়াদের সবচেয়ে বড় পাইকারি সবজির বাজার আজিজিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে পাইকারি বিক্রি হয় তার খামারের সবজি।

বাংলাদেশ থেকে স্বল্প খরচে শ্রমিক নেওয়া গেলে এই খামারের ব্যবসাকে আরও কয়েকগুণে উন্নীত করা সম্ভব। তাই এই ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন শাহ আলম সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৬
পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সৌদি আরব এর সর্বশেষ