ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

তবু থেকে যায় সাতরঙা চায়ের রহস্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
তবু থেকে যায় সাতরঙা চায়ের রহস্য ছবি: আসিফ আজিজ- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লাউয়াছড়া অভয়ারণ্য থেকে: সাত লেয়ার চা আবিষ্কার হয়েছে বেশ আগেই। সেটা রমেশের হাত ধরে।

কিন্তু সেই সাত লেয়ারকে সাতরঙে রূপান্তরের কারিগর গৌরাঙ্গ বৈদ্য। এমনটাই দাবি তার।

 

শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া অভয়ারণ্যেরে গৌরাঙ্গের চায়ের কথা কে না জানে। দেখতে দেখতে একযুগ পূর্ণ হতে চলেছে সাতরঙা চায়ের।

 

লাউয়াছড়া বনবিটের অফিস সংলগ্ন টিলার উপরের দোকানে ছোট্ট একটি ঘর। সেখানে সাধারণের প্রবেশ সংরক্ষিত। সামনে থেকে অর্ডার পড়লে ভিতরে খবর যায় কত রঙের চা হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুত করেন গৌরাঙ্গ।


রহস্যটা সবাই জানে না বলেই সবাই এটা বানাতে পারে না। এমনটাই ভাবতেন আগে। তবে সম্পর্কের খাতিরে এবার দেশ-বিদেশে বিখ্যাত এ চায়ের উপকরণ অকপটে বলে দিলেন। ঢোকালেন তার বিশেষ ঘরে।

ঢুকে দেখা গেলো একটি টেবিলে সাতটি বড় আকারের মগে রাখা সাত রঙের তৈরি চা। তবে ঠাণ্ডা। গ্লাসে পুরো প্রস্তুত হলে তবেই বিশেষ উপায়ে করা হবে গরম। শ্রীমঙ্গলে সবচেয়ে ভালো ও স্পষ্ট সাতরঙা চা তৈরির দাবিদার গৌরাঙ্গ একে একে তৈরি করে দেখাতে লাগলেন তার ক্যারিশমা।


প্রথম স্তর অর্থ্যাৎ সবার নিচের স্তরে রঙে রয়েছে আদা আর গ্রিন টির মিশ্রণ। রং একটু হালকা।


দ্বিতীয় স্তরটি লিকার বা লাল চায়ের। সঙ্গে চিনি।


চা, চিনি, দুধের সমন্বয়ে আমরা যে দুধ চা পান করি সেটিই রয়েছে তৃতীয় স্তরের চায়ে।


এ স্তরটি গ্রিন টি দিয়েই তৈরি। তবে এর সঙ্গে রয়েছে দুধ মেশানো। এটিই বিশেষত্ব।


সাধারণ গ্রিন টি বলতে যা বোঝায় তাই রয়েছে পঞ্চম স্তরে। সঙ্গে শুধু চিনি মিশ্রণ।


ছয় নম্বর স্তরটি শুধুই লেবুপানির। একেবারে শ্রীমঙ্গলের বিখ্যাত জারা লেবু দিয়ে তৈরি।


সব শেষ অর্থাৎ সবার উপরের স্তরে রয়েছে হাল কালারের গ্রিন টি।

সব মিলে গ্রিন টি’র আধিক্য রয়েছে পুরো মেন্যুতে।

কি এমন রহস্য রয়েছে যে এটি সবাই তৈরি করতে পারে না? গৌরাঙ্গ হেসে বললেন, সেটিই রহস্য। সব তো বলে দিলাম। দেখবেন তবু সবাই তৈরি করতে পারবে না। এমনকি শ্রীমঙ্গলে এখন যারা তৈরি করছে তারা আমার তৈরি চায়ের ছবি টাঙিয়ে তাদের নিম্নমানের চা দিয়ে ব্যবসা করছে পর্যটকদের কাছে।

নিজে নিজে শেখার দাবি নিয়ে তিনি জানান, এ চায়ের এযুগ হতে চলেছে এ বছর। তাই বিকল্প স্বাদ দিতে সামনের কোরবানি ঈদে আসছে বিশেষ চমক। সে চমকের অগ্রিম খবর থাকছে পরের স্টোরিতে।

সব বলা ও দেখালেও মগে তৈরি করে রাখা মূল উপকরণগুলোর ছবি না দিতে অনুরোধ করলেন তিনি। আরও একটি জিনিস। সেটা মেশানোর পদ্ধতি। এবং সাতরঙে প্রস্তুত করতে মেশানো।

বললেন এটাই রহস্য। এটুকু না থাকলে বাঁচবো কি করে। সামনে যে নতুন পানীয় তৈরি করছি সেটাতে আশাকরি খাদ্যরসিক ও পর্যটকরা আগ্রহী হবে।

লাউয়াছড়া বনে ঢুকে গৌরাঙ্গের চা দেখার জন্য হলেও একবার যান সবাই। বিদেশিরা এলেও পান করতে ভোলেন না। প্রতি কালার ১০ টাকা হিসেবে বিক্রি হয় বিশেষ এ চা। আর এতে তার মাসিক আয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তবে খরচ গিয়ে সেটা নেমে আসে অর্ধেকে।



**রাতদুপুরে সবুজবোড়ার রাস্তা পারাপারের দুঃখ
**পর্যটকবান্ধব নয় সিলেট-শ্রীমঙ্গলের ট্রেন
**চুলা নেই পূর্বাঞ্চলের কোনো ট্রেনের ক্যান্টিনে

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ