শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): নিজের সন্তানের মতো করেই সযত্নে খাইয়ে-দাইয়ে-আগলে রাখার পরে এসে গেলো বিদায় দেওয়ার পালা।
হোক না মাত্র ৪৫ দিন! তবু এ ক’দিনে নিজের সন্তান জায়গা দখল করে ফেলেছিলো বিলুপ্ত প্রায় চারটি গন্ধগোকূল ছানা।
গত ৬ জুন মৌলভীবাজার সদর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের মৃণাল মিয়া চারটি গন্ধগোকূলের ছানা উদ্ধার করে। এই ছানাগুলোকে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিলে কিছুদিন নিজের কাছে রেখে লালন-পালন করতে চান এমন অনুরোধ জানান ফটোগ্রাফার তানিয়া খান।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এই স্তন্যপায়ী গন্ধগোকূল প্রাণীকে ‘বিপন্ন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দো’র অনুমতিক্রমে তিনি ছানাগুলোকে নিজের বাসায় এনে সন্তানের আদরে বড় করে তোলেন।
বুধবার (২০ জুলাই) সকালে চারটি গন্ধগোকূল ছানাকে মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বাংলানিউজকে তার অভিজ্ঞতার জানান তানিয়া খান। তিনি বলেন, যখন এই ছানাগুলোকে নিয়ে আসি তখন ওদের ওজন ছিলো ৬০ গ্রাম থেকে একশ’ গ্রামের মধ্যে। ৪৫ দিন লালন-পালনের পর তাদের ওজন হয় ২শ’ থেকে ৪শ’ গ্রাম। চারজন সারাদিন ছোটাছুটি করতো। ওদের থাকার জন্য বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঘর বানানো হয়েছিলো।
তিনি বলেন, জঙ্গল থেকে ওদের জন্য খাবার আনতাম। কাউফল, ডুমুর, চাপালিশ প্রভৃতি। এছাড়াও কলা, আম, পাকা পেঁপেও খেতে দিতাম। এই চারটি ছানা আমার সন্তানের মতো ছিলো। বিদায় দেওয়ার কথা ভাবলেই চোখ ভিজে যেতো। এখন ওরা অনেকটা বড় হয়েছে, নিজেদের খাবার নিজেরাই সংগ্রহ করতে পারবে।
গন্ধগোকূল বা তাল খাটাশ, ইংরেজি নাম Asian palm civet। এরা বাদামি-ধূসর বা ধূসর-কালো রঙের হয়ে থাকে। ফসলের ক্ষতিকর পোকা-মাকড় খেয়ে এরা কৃষকের উপকার করে। বর্তমানে এটি বিপন্ন তালিকাভুক্ত প্রাণী।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
বিবিবি/এএটি/এটি
**পরপারে পুনর্মিলনের বিশ্বাসের ‘গদনা’
** ‘খনার বচন’ যে অফিসে!
** সন্তান নিয়ে ‘মুন্নি’ এখন একা!