টি হ্যাভেন রিসোর্ট (শ্রীমঙ্গল) থেকে: পর্যটন শিল্পকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজস্ব আয়ের খাত হিসেবে উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আফজাল হোসেন।
শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের টি হ্যাভেন রিসোর্টে বাংলানিউজের আয়োজনে ‘বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: সিলেটে পর্যটন’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, পোশাক শিল্পে যেমন শ্রম দিতে হয়, বিনিয়োগ করতে হয়, কিন্তু পর্যটন শিল্পে কিছুই দিতে হয় না। এই খাত থেকে শুধু রাজস্ব আসে। পৃথিবীর সবচাইতে বড় শিল্প হচ্ছে পর্যটন শিল্প। সবাই মিলে এক সঙ্গে কাজ করলে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে বিশ্বের এক নম্বর শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।
পর্যটন বোর্ডের ভূমিকা নিয়ে ড. আফজাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প নিয়ে পর্যটন বোর্ড কিছুই করছে না এটি একদম খাঁটি কথা। এখানে আসলে যারা আসেন তারা ঘটনাক্রমে আসেন। এখানে যারা আসেন তারা এক সময় পাট মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন, তারপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যান ঘটনাক্রমে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে আসেন। উনারা আসলে কিছুই জানেন না। পর্যটনকে প্রসারিত করতে হলে পর্যটনবান্ধব মন্ত্রণালয় সাজাতে হবে।
‘বাংলানিউজ যে প্রচেষ্টা হতে নিযেছে, এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে এবং অন্যান্য সব মিডিয়া এগিয়ে আসলে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প হবে বিশ্বের এক নম্বর পর্যটন শিল্প,’ যোগ করেন তিনি।
সকাল সাড়ে ৯টার পর বাংলানিউজের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেননের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এরপর বাংলানিউজের সিনিয়র আউটপুট এডিটর জাকারিয়া মন্ডল এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর আসিফ আজিজ ‘বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: সিলেটে পর্যটন’ বিষয়ক পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন। প্রেজেন্টেশনে তারা সিলেটে পর্যটন সংক্রান্ত বাংলানিউজে প্রকাশিত বিভিন্ন রিপোর্ট তুলে ধরেন।
তারা বলেন, যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেট পিছিয়ে পড়েছে। কিন্তু এখানে চট্টগ্রাম থেকে আমদানি ও রফতানি কম নয়। তাই পর্যটনের প্রসার ঘটাতে হলে আগে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে।
আলোচনায় সিলেট বিভাগের পর্যটন সম্ভাবনা ও সমস্যা নিয়ে কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। এতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট একদল বিশেষজ্ঞ। এছাড়াও ছিলেন পর্যটক ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারাও।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রাশেদুল হাসান, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূইয়া, সেভ দ্য হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের প্রধান সমন্বয়কারী আবদুল হাই আল হাদী, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম, সহযোগী অধ্যাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, আফজাল হোসেন, বন্যপ্রাণি গবেষক ও আলোকচিত্রী তানিয়া খান, পর্যটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার একেএম মোশাররফ হোসেন, সরীসৃপ গবেষক শাহরীয়ার সিজার রহমান ও ট্রাভেলার রিয়াসাদ সানভী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সপ্তডিঙা সরবরাহের পরিচালক সুলতান মোহাম্মদ ইদ্রিস লেদু, শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোবাশ্বির আলী মুন্না, সিলেট ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মো. ইউসুফ আলী, মানিক চাঁদ রুদ্র পাল, সৈয়দ রিফাত জামান রিজবী, ডিভিশনাল ট্যুর গাইড অ্যাসিয়েশনের খালেদ হোসেন, কামরান, আহাদ, শেখর রিজবী, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী, ক্রেলের রিজওনাল কোঅর্ডিনেটর (নর্থ ইস্ট জোন) মাজহারুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, ক্রেলের নর্থ ইস্ট জোনের কমিউনিকেশন অফিসার ইলিয়াস মাহমুদ, শ্রীমঙ্গল উদয়ন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবিতা দাসসহ আরও অনেকে।
দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজের এ অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় রয়েছে শ্রীমঙ্গল ইন, টি হ্যাভেন রিসোর্ট, ইস্পাহানি এবং সিলেটের নির্ভানা ইন ও সিলেট-শ্রীমঙ্গলের শুভানুধায়ীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৬
এমআই/এমজেএ/এসএম/এসএনএস/এমএ/এসএ/আইএ