কালাপুর, শ্রীমঙ্গল ঘুরে: শৈশবটা কেটেছে অর্থনৈতিকসহ নানা টানা-পড়েনে। তাই পড়াশোনাটাও বেশি দূর এগোয়নি।
কৃষক বাবার সংসারের হাল ধরতে যুব উন্নয়ন অধিদফতরে পশু চিকিৎসার ওপর ছয় মাসের একটি প্রশিক্ষণ নেন ফারুক আহমেদ।
এরপর নিজের গ্রাম মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিলের পাড়ের বরুনা হাজীপুরে ফার্মেসি খোলেন তিনি। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ পশুপাখির চিকিৎসা করেই সংসারের হাল ধরেন ওই সময়ের তরুণ ফারুক।
কিন্তু পুঁজির অভাবে দোকানে ওষুধ তুলতে না পারায় তখনও চলচিলো না সংসার। এরমধ্যে বিয়ে করেন, সংসারে আসে নতুন মানুষ। সব মিলিয়ে কোনোমতে চলে যাচ্ছিলো।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউএসএইড-এর অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারি সংস্থা ক্লাইমেট-রেজিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড লাইভলিহুডস (ক্রেল) প্রকল্পের অধীনে সাতদিনের একটি প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
বললেন, যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর গ্রামের বাজারেই একটি ফার্মেসি দিই। কিন্তু তখন পুঁজির অভাবে ওষুধ তুলতে পারিনি। যা আয় হতো, তা দিয়েই সংসার চালাতে হতো।
‘তবে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পশু চিকিৎসা নিয়ে সাতদিনের একটি ট্রেনিং দেয় ক্রেল। মাঠ পর্যায়ে হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়ার পর প্রায় ২০ হাজার টাকার ওষুধও দেওয়া হয়। ওষুধ বিক্রি ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে পশুর চিকিৎসা দেওয়ায় আমার সংসারে অনেকটা স্বচ্ছলতা এসেছে। ’
বাংলানিউজকে পশু চিকিৎসক ফারুক আহমেদ বলেন, প্রতিদিন ফার্মেসিতে মানুষ রোগাক্রান্ত পশু নিয়ে আসেন কেউ বাড়িতে যেতেও অনুরোধ করেন। তবে ক্রেলের কোনো সদস্যের কাছ থেকে পরামর্শ ফি নেওয়া হয় না।
‘আয় সব মিলিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১০ হাজার টাকা হয়। যা দিয়ে তিন সন্তানের পড়াশোনা ও পরিবারের খরচ চালাই। এখন ঋণও নেই। ’
আলাপ-চারিতায় ফারুক জানান, তরকা (অ্যানথ্রাক্স) বাদলা গলাফুলাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত পশুর চিকিৎসার পরামর্শ নিতে তার কাছে আসেন মানুষ। দূর-দূরান্ত থেকেও আসেন অনেকে।
জানা যায়, বাইক্কা বিলে প্রজনন মৌসুমে মা মাছ ও মাছের পোনা না ধরতে জেলেসহ তাদের পরিবারের সদস্যের জন্যে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ক্রেল।
এরমধ্যে যুব উন্নয়ন অধিদফতরের আওতায় মোবাইল ফোন সার্ভিসিং, লাইভলিহুড সার্ভিস প্রোভাইডার (এলএসপি) এবং নারীদের শো পিছ তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
মৎস্য সম্পদের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে ও জলাভূমি সংরক্ষণের জন্যে বিকল্প পেশায় আয় বাড়াতে শ্রীমঙ্গলের ৫ নং কালাপুর ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে সংস্থাটির।
প্রকল্পের লাইভলিহুড ফেসিলেটর সৈয়দ ইজাজ আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, প্রজনন মৌসুমে জলাভূমিতে মা মাছ এবং পোনা না ধরতে কালাপুর এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। এখনও প্রতি সপ্তাহে হয়। প্রচারণা চালানো হয় প্রাথমিক স্কুলেও।
তাদের এ প্রচারণায় সচেতন হয়েছেন বাইক্কা বিল পাড়ের মানুষেরাও। এখন আর তারা মা মাছ ধরেন না, মারেন না মাছের পোনাও।
স্থানীয় হাজীপুর গ্রামের জেলে আবদুল মতিন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এই মৌসুমে মাছ ধরি না। এ সময়টায় ফুচকা বিক্রি করি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৬
এমএ/
**আগর থেকে আতর
**‘যন্ত্র-দেয়াল’ ভাঙছে সিলেটের ‘ওসমানী শিশু উদ্যান’
** এখনও সময় জানায় আমজাদের সেই ঘড়ি
**পর্যটন বর্ষের প্রচারণা নেই মাধবকুণ্ডে
** ঝরনার পাহাড়ে ফাটল, সতর্ক হোন
**জাফলং পর্যটনে বাধা ‘সড়ক’
**অযত্নে-অবহেলায় আদিত্যপুর গণকবর
**যাত্রীর ইয়ার্ডে পাবলিকের কার পার্কিং
** ফাংশন নেই শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে
** সন্ধ্যে হতেই দোকান উঠে যায় বানিয়াচং বাজারে
** দু’টি পাতার একটি কুড়ির নিচেই অন্ধকার
** পর্যটনে আকর্ষণ তারাও
** স্বচ্ছ লেকে লাল শাপলার নিমন্ত্রণ
** ‘মৌলভীবাজার রুটের অধিকাংশ যাত্রীই পর্যটক’