লাউয়াছড়া বন ঘুরে: প্রতিবছর কয়েক লাখ পর্যটক লাউয়াছড়া আসেন। ইউরোপ-আমেরিকা থেকেও আসেন অনেক পর্যটক-গবেষক।
এভাবেই নিজেদের প্রিয় বন নিয়ে কথা বলছিলেন গাইড ইউসুফ। তিনিসহ ১০-১২জন গাইড আছেন লাউয়াছড়ায়। বনরক্ষী কিংবা কর্মকর্তাদের পর তারাই বনের অলিগলি ভালো চেনেন। লাউয়াছড়া কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটির আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে গাইড হিসেবে সেবা দেন ইউসুফ, মানিক, আহাদরা।
গাইড সেবা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তারা বলেন, আমরা চাই ইকো ট্যুরিজমের বিকাশ ঘটানো হোক লাউয়াছড়ায়। তাহলে প্রাণী-জীববৈচিত্র্য সবকিছুই রক্ষা হবে। তখন মানুষ গাছ-গাছালি-প্রাণী সবই চিনবে। তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করবে।
গাইড সেবা থাকলেও কোনো প্রচারণা নেই তাদের। তাই অনেকে জানেনই না যে গাইড নিয়ে ঘোরা যায়। বনে ঢুকতে টিকিট কাউন্টার থেকে তাদের সঙ্গে চুক্তি করতে হয়। বনে মূলত তিনটি ট্রেইলে হাঁটা যায়। ১ ঘণ্টা, ২ ঘণ্টা ও ৩ ঘণ্টা। প্রথম ট্রেইলে ৩শ, দ্বিতীয় ট্রেইলে ৪শ ও তৃতীয় ট্রেইল ঘুরে দেখানোর জন্য গাইডরা নেন ৫শ টাকা। দলের সদস্য কোনো বিষয় নয়।
বন বিভাগ থেকে তারা সবাই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে নিজেদের একটি আইডি না থাকা, কোনো ওয়েবসাইট না থাকা এবং প্রচারণার ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ জানতে পারে না বলে অভিযোগ তাদের। তবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ট্রিপ অ্যাডভাইজারে তাদের বেশ কিছু রিভিউ আছে বলে জানালেন। ইউসুফ আবার অনর্গল ইংরেজি বলতে পারেন। তাই বিদেশিরা এসে তাকেই খোঁজেন।
বনে ঘুরতে আসা পর্যটক প্রসঙ্গে গাইড মানিক বলেন, এখানে মূলত তিন ধরনের পর্যটক আসেন। প্রথমত গবেষকরা। তারা অনেককিছু জেনে, নিয়ম মেনে চলেন। দ্বিতীয় ধরনের পর্যটক আসেন যারা বন্যপ্রাণি দেখতে আসেন। আর এক শ্রেণির আসেন যারা মূলত বখাটে। তারা এসে চিল্লাচিল্লি করে বনের পরিবেশ নষ্ট করেন।
নিয়ম না জানায় পর্যটকরা বনের প্রাণী দেখতে পান না বলে জানান গাইডরা। তাদের মতে, গাইড নিয়ে ঘুরলে তারা পর্যটকদের জানিয়ে দেন কখন, কীভাবে প্রাণী দেখা যাবে, কি করবেন না- এসব। তবে খুব সকাল এবং বিকেল উল্লুকসহ বিপন্ন সব প্রাণী দেখার মোক্ষম সময় বলে জানান তারা।
লাউয়াছড়ায় ঘোরার বিকল্প কোনো উপায় ছিলো না। গাইড থাকায় এখন বন দেখার অনেক সুযোগ আছে বলে ধারণা তাদের। তবে ইউনিফর্ম ও আইডি কার্ড থাকলে গাইড চিনতে কারও ভুল হবে না। কেউ প্রতারণার শিকার হবেন না। তবে সবার আগে একটি ওয়েবসাইট খোলার দাবি জানান তারা। তাহলে পর্যটকরা গাইডদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসতে পারবেন।
নিয়মিত পর্যটকদের বাইরে বিভিন্ন ট্যুরিস্ট এজেন্সির গাইড হিসেবেও কাজ করেন এসব প্রশিক্ষিত গাইডরা। লাউয়াছড়া গেলে প্রবেশমুখে কাউন্টারে গাইডদের খোঁজ করে সঙ্গে নিলে বন ঘোরা আনন্দ হতে পারে অন্য মাত্রার।
**বানর-বেবুন-অজগর মানে না রেলের চাকা
**গাড়ির চাকায় পিষে যায় লাউয়াছড়ার প্রাণীপ্রাণ
**এক লেবুর দাম হাজার টাকা!
** সবুজের বুকে মোহময় শার্ফিন
** কাছাড়িয়া হাওরের পথে পথে-৪ (শেষ পর্ব)
** ছবিতে হাছন রাজার স্মৃতিবিজড়িত বসতবাড়ি
** ‘কি ঘর বানাইমু আমি শূন্যের মাঝার’
** কাছাড়িয়া হাওরের পথে পথে-৩
** কাছাড়িয়া হাওরের পথে পথে-২
** হাওরের হাঁসে হাসি
** কাছাড়িয়া হাওরের পথে পথে-১
** মায়ার বাঁধনে মায়া, সঙ্গী জেমস-মনা
** এবার আসছে গৌরাঙ্গের সাত লেয়ারের জুস
** সবুজের বুক চিরে চেনা নতুন শ্রীমঙ্গল
** নাগা মরিচের আরও ছবি
** সাদা-কালো নাগা মরিচে গিনেস রেকর্ডের ঝাল
** তবু থেকে যায় সাতরঙা চায়ের রহস্য
** রাতদুপুরে সবুজবোড়ার রাস্তা পারাপারের দুঃখ
** পর্যটকবান্ধব নয় সিলেট-শ্রীমঙ্গলের ট্রেন
** চুলা নেই পূর্বাঞ্চলের কোনো ট্রেনের ক্যান্টিনে
বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৬
এএ