তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস থেকে: মূল সড়ক থেকে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করা মাত্রই ভেতরকার খাবার ও পানীয়ের দোকানগুলোতে প্রায় সব পণ্যের মূল্য নির্দিষ্ট দামের চেয়ে পাঁচ টাকা বেশি। অনিয়ম হলেও ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে আসা বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা এটাই মেনে নিয়েছেন।
আর যাত্রীদের এ অসহায়ত্বকে ব্যবহার করছে অসাধু দোকানিরা। স্টেশনে আসা সাধারণ মানুষের কাছে বোতলজাত পানি ও পানীয়ের চাহিদা বেশি থাকায় এ দুই পণ্যে পাঁচ টাকা করে অহরহই বেশি নেয় তারা।
অথচ স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করে পশ্চিম দিকে কিছুটা এগুতেই দেখা মিললো বিনামূল্যে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাঘুরি করা বা ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের অনেকেই জানেন না এ ব্যবস্থার কথা।
সম্পূর্ণ জনস্বার্থে করা হলেও এ বিশুদ্ধ পানির বিষয়টি নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে নেই তেমন জানাশোনা। বিনামূল্যের পানি বিতরণের নির্দিষ্ট স্থানের পাশে অপেক্ষমাণ অনেককেই পান করতে দেখা গেলো বোতলজাত পানি।
স্টেশনে আসা যাত্রীদের জন্য এ পানির ব্যবস্থা করেছে মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান রবি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে স্টেশনের নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই তৈরি করা হয়েছে পানির সুব্যববস্থা। রয়েছে মুসল্লিদের জন্যে অজুর ব্যবস্থাও। সেখানে বসার জন্য করা হয়েছে টুল। জায়গাটাও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
যাত্রীদের সুবিধার্থে রয়েছে পানির গ্লাসও। অনেককে পানি পান করতেও দেখা গেলো। কেউ আবার বোতল কিংবা পাত্রে করে পানি ভরে দৌড়ে ট্রেন ধরছেন। গ্লাসে লাগানো রয়েছে শিকল, যাতে হারিয়ে না যায়।
স্টেশনের দোকানি ও হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মূলত সবার জন্য এ পানির ব্যবস্থা করা হলেও তা পান ও ব্যবহার করেন হকার, স্টেশনের বসবাসকারী ভাসমান মানুষজন ও অল্পসংখ্যক যাত্রী।
তবে পোস্টারিং বা স্টেশনের বিভিন্ন অংশে ডিজিটাল কম্পিউটার মনিটরের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো গেলে রবির বিনামূল্যে যোগান দেওয়া এ খাবার পানি সর্বসাধারণের আরো বেশি উপকারে আসতো।
এমনটাই মনে করেন, স্টেশনের পশ্চিম দিকের পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কর্মচারী জাকির। তিনি জানান, ওয়াটার এইডের সহায়তায় রবির সরবারহকৃত এই পানির কথা নিয়মিত যাতায়াতকারী যে যাত্রীরা জানেন, তারা এখান থেকেই পানি নেন। কিন্তু অনেকেই এটার কথা জানেন না। আবার জানলেও পানি কতটা বিশুদ্ধ তা নিয়ে সন্দিহান থাকেন অনেকে।
রবির পানির ট্যাপের পাশে কিছু সময় দাঁড়িয়ে দেখা গেলো, অনেকেই বোতল ভর্তি করে পানি নিচ্ছেন। পানির কলের দেয়ালে কিছু তথ্য লেখা রয়েছে। সেখান থেকে জানা গেলো স্টেশনে আগতদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতেই এটা করা হয়েছে। দেশের শকতরা ১৩ ভাগ মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানি থেকে বঞ্চিত। ফলে ট্রেন যাত্রীদের পানীয় জল সরবারাহ ও বিশুদ্ধ পানি পানের সুযোগ বাড়াতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রবি ও ওয়াটার এইডের এ জনসেবামুখী উদ্যোগ।
স্টেশনের নিরাপত্তা কর্মী ও হকারদের মত, স্টেশনের বিভিন্ন অংশে এ পানির প্রচারণামূলক পোস্টার থাকলেই দোকানিদের গলাকাটা ব্যবসা বন্ধ হবে। সেইসঙ্গে বিশুদ্ধ পানি পাবেন যাত্রী ও স্টেশনে আগত মানুষজন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
এসআর/আরআই