ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

ভরা মৌসুমে পর্যটক টানছে পাহাড় ঘেরা খাগড়াছড়ি

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
ভরা মৌসুমে পর্যটক টানছে পাহাড় ঘেরা খাগড়াছড়ি  ছবি: শামীম মজুমদার

খাগড়াছড়ি থেকে: পৌনে সাত ঘণ্টার যাত্রা শেষে ঘড়ির কাঁটায় তখন সময় ঠিক সকাল ছয়টা। সেতু পেরিয়ে বাস এসে থামলো খাগড়াছড়ি পৌরসভার সামনে।

সূর্য তখন উঁকি দিচ্ছে সবুজ-শ্যামল পাহাড় ঘেরা শহর খাগড়াছড়ির আকাশে।

ঢাকা থেকে আমাদের বহনকারী পরিবহনের পূর্বে অন্য বাসের যাত্রীরা এসে বসে আছেন যাত্রী ছাউনির নিচে। বেশ-ভূষা দেখেই মনে হচ্ছে তারা সবাই পর্যটক।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) ভোরের নিরবতা ভেঙে খাগড়াছড়ি সেতু পেরিয়ে পৌরসভার সামনে একে-একে থামছে আরও বড়-বড় যাত্রী ভর্তি বাস। ঢাকা থেকে আসা তাদের বেশির ভাগই ঘুরতে আসা।

ঢাকা থেকে আমাদের বহন করা বাস ‘সেন্টমার্টিনস পরিবহন’র সুপারভাইজর মামুন যাত্রাপথে আলাপচারিতায় বাংলানিউজকে জানাচ্ছিলেন, এটা ভরা পর্যটন মৌসুম। গত কয়েক দিন থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে পর্যটকদের সংখ্যাই বেশি।

স্থানীয় একটি সংগঠনের ডাকে খাগড়াছড়িতে হরতাল চলায় সকাল সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত এখানকার জনপ্রিয় বাহন ‘চান্দের গাড়ি’তে পর্যটকরা বুকিং করা হোটেল বা আবাসিক স্থানে চলে যাচ্ছিলেন। এরমধ্যে দু’একটি ভ্যানে করেও যাত্রীদের বহন করতে দেখা যায়।

কয়েকজন বন্ধু ঢাকা থেকে পূজা এবং মহরমের ছুটিতে বেড়াতে এসেছেন খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য অঞ্চল। কথা প্রসঙ্গে সেন্টমার্টিনস পরিবহনের এই পর্যটক-যাত্রীদের একজন রাহাত বাংলানিউজকে বলেন, পাহাড় ঘেরা অঞ্চলের সৌন্দর্য দেখার জন্য এসেছেন তারা।

যাত্রার আগে ঢাকার কলাবাগান বাস কাউন্টারে বিভিন্ন পরিবহনের সামনে ভিড় ছিল মূলত পর্যটকদেরই বেশি। পরিবার-পরিজন এবং বন্ধ-বান্ধব নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছিলেন ভ্রমণপিপাসুরা।

এদিকে, পর্যটকদের আগমনে স্থানীয় আবাসিক হোটেল ও মোটেলগুলো ছিল পূর্ণ। খাগড়াছড়ি কোর্ট রোড সংলগ্ন হোটেল নূর’র কর্মী মো. কবীর বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের হোটেলে আর কোনো ছিট খালি নেই। গত কয়েকদিন থেকে ছিট ভাড়া নেওয়ার চাপ বেড়ে গেছে।  

প্রতিবছর এই সময় পাহাড়ি অঞ্চলে ঘুরতে আসা মানুষের সংখ্যা বেশি থাকে বলেও জানান তিনি।       

 

পাহাড়ি বনে সবুজ-শ্যামল নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরা পর্যটকদের প্রিয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে- আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, আলুটিলা রহস্যময় সুরঙ্গ, বাংলা দার্জিলিং খ্যাত সাজেক, আরেং (পর্যবেক্ষণ টাওয়ার), জেলা পরিষদ পার্ক, পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, পানছড়ি অরণ্য কুঠির, জল পাহাড়, শতায়ুবর্ষী বটগাছ, হাজাছড়া ঝরনা, রিচাং ঝরনা ও তৈদুছড়া ঝরনা।

২ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই জেলায় ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে আনন্দময় করতে তুলতে প্রকৃতি যেন আপন হাতেই গড়ে তুলেছে এই পর্যটন এলাকা।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-জাতি গোষ্ঠীর সংস্কৃতি এবং বৈচিত্র্যময় জীবনধারা পর্যটনকদের কাছে দেবে আরও বাড়তি আনন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
এমআইএইচ/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ

Veet