খাগড়াছড়ি থেকে: পার্বত্য অঞ্চলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে কাপ্তাই হ্রদের ওপর তৈরি ঝুলন্ত সেতু।
আরেকটি ঝুলন্ত সেতু রয়েছে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ঘেঁষা লেকের ওপরে, যার সৌন্দর্য ও পারিপাশ্বির্ক প্রকৃতিও কম আকর্ষণীয় নয়।
পর্যটকদের মন কাড়তে পারে এ সেতুটিও। কিন্তু এটি নিয়ে প্রচারণার তেমন কোনো উদ্যোগ বা তাগাদা নেই সংশ্লিষ্টদের।
অথচ জিরাফ গলার মতো উঁচু এ ঝুলন্ত সেতু, লেকপাড়ের গোলাকার ঘর, পদচারী সেতু এবং মুক্তিযু্দ্ধের ভাস্কর্য মিলে পুরো এলাকাটিই হতে পারতো রামগড় তথা খাগড়াছড়ি জেলার একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট।
২০০৬ সালের ২২ অক্টোবর তখনকার পাবর্ত্য বিষয়ক মন্ত্রী এর উদ্বোধন করেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকশ’ গজ দীর্ঘ লেকটির একপাশে রামগড় গার্লস স্কুল। একটু এগোলে পদচারী সেতু। সেটি পার হলে অফিসার্স ক্লাবের বিপরীত দিকে শুরু হয়েছে ঝুলন্ত সেতুতে ওঠার পথ। সেতুর প্রবেশ মুখে নির্মিত দু’টি সুউচ্চ জিরাফের গলায় তারের রশি বেধে সেতুর গায়ে আটটি করে ১৬টি টানা দেওয়া হয়েছে। জিরাফ সেতুর পাটাতন কাঠের তৈরি। দুই পাশের দু’টি লম্বা রেলিং স্টিলের তৈরি।
আরও পড়ুন- রেল স্টেশনে বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি
লেকের পাড়ে বসার জন্য সিমেন্টের তৈরি কাঠের চেয়ার টেবিল ও ছাতা বানানো। পাশেই কাচঘেরা ও টাইলস বসানো গোলাকৃতির একটি ঘর। সেটি পরিত্যক্ত। ভেতরে ঢুকে দেখা গেলো, ভাঙা কাচ, নোংরা মেঝে।
স্থানীয়রা জানালেন, এটা গোল ঘর। লেকের ওপর জিরাফ গলা সেতুর পাশে এটি রেস্টুরেন্ট হিসেবে বানানো হয়। কিন্তু পরে আর এ প্রকল্প গতি পায়নি। তবু বিকেল ও ছুটির দিনে মানুষজন আসেন। পিকনিক পার্টিও হয় হরহামেশা।
লেকের তিন পাশে তিনটি ঘাট রয়েছে। আছে একটি সরুঘাটও।
লেকপাড় ধরে এগোলে পর্যায়ক্রমে পড়বে মুক্তিযুদ্ধের স্তম্ভ, ম্যুরাল ও শহীদ মিনার। সেগুলোতে ভাস্করের নাম নেই। ম্যুরালে ধারাবাহিকভাবে ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ, বিজয় মিছিল ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
গোল ঘরে রেস্টুরেন্ট চালু করে প্রকল্পের সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
কাপ্তাইয়ের সেতু যারা দেখেছেন, তারা রামগড় ঝুলন্ত সেতুও দেখে ও পায়ে হেঁটে পার হয়ে চোখের তৃপ্তি মেটাতে পারেন।
বোনাস হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত রামগড় ব্যাটালিয়ন পরিদর্শনও করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৬
এসআর/আরএইচএস/এএসআর