হাজাছড়া ঝরনা (খাগড়াছড়ি থেকে) ঘুরে: পঞ্চম শ্রেণির মুনি আলো ও লিটন, চতুর্থ শ্রেণির রিতার মত জনাদশেক পাহাড়ি শিশু ডাকছে, ‘লাঠি নেন লাঠি নেন, নইলে পড়ে যাবেন, দাম দশ টাকা’।
তাদের কথায় সায় দিয়ে লাঠি কিনছেন পর্যটকরা, ৪-৭ ফুট দীর্ঘ এই বাঁশের লাঠিগুলো পর্যটকদের সঙ্গী হয়ে যাচ্ছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের হাজাছড়া ঝরনায়।
চিকন কিন্তু কঞ্চি ছাড়া এই বাঁশগুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় ছাড়াও ছড়া অর্থাৎ পাহাড়ি পানি প্রবাহের পথে হাঁটার সঙ্গী। পা পিছলে পড়ে যাওয়া বা পানির গভীরতা মেপে যাওয়ার পথে সহায়ক এই বাঁশের লাঠি।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার সাজেক যাওয়ার পথে হাজাছড়া গ্রাম। আর সেখানেই এই হাজাছড়া ঝরনা। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সাজেক যাওয়ার পথে হাজাছড়া এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে দেখা মেলে মুলি বাঁশের লাঠি বিক্রি করা শিশুগুলোর।
পাহাড় থেকে বহু দিন আগের এই ঝরনা সাম্প্রতিককালে পর্যটকদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠে বলে জানান স্থানীয়রা। আর এখন প্রতিদিনই হাজার হাজার দর্শনার্থী সাজেক যাওয়ার পথে ঢু মারেন এইখানটায়।
শুক্রবার সকালে বৃষ্টির পর ঝরনায় যাওয়ার পথ হয়ে উঠে পিচ্ছিল-কর্দমাক্ত। ছুটির দিন হওয়ায় স্থানীয় অদ্বৈত কিন্ডার গার্টেনের খুদে শিক্ষার্থীরা পর্যটকদের জন্য বিক্রি করছিল বাঁশের লাঠি।
লাঠি বিক্রি করা মুনি আলো বাংলানিউজকে জানায়, স্কুল বন্ধ তাই নিজেদের জমির বাঁশের লাঠি নিয়ে এসেছে। বেলা সাড়ে ১০টায় এক ঘণ্টায় ৩০টির মতো বিক্রি হয়েছে।
লাঠি কিনে পর্যটকদের তা হাতে নিয়ে পাহাড়ের ঢালে ঢালে যেতে দেখা যায় ঝরনা পর্যন্ত। আর প্রায় চল্লিশ হাত ওপর থেকে পড়া ঝরনার পানির ফোটা দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে, যাতে গরমে প্রশান্তি পাচ্ছেন পর্যটকরা। স্বচ্ছ ঝরনার পানিতে গোসল করছেন তারা।
ঝরনাকে ফ্রেমে বন্দি করতে সেলফি তুলতে ভুলছেন না দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা। আনন্দ-উল্লাসে পাহাড়ি জনপদ মুখর করে তুলছেন তারা।
** পাহাড়িদের প্রিয় খাবার নাপ্পি’র সাতকাহন
** সাদা রঙের হলুদ আর আদা ফুল অনন্য, পর্যটকের কাছেও আকর্ষণীয়
** ভরা মৌসুমে পর্যটক টানছে পাহাড় ঘেরা খাগড়াছড়ি
** পাহাড়ে উদ্ভাবিত ফলের জাত ছড়াচ্ছে সারাদেশে
বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৬
এমআইএইচ/বিএস