সাজেক থেকে ফিরে: মেঘ পাহাড়ের মিলন মেলা দেখতে চলে আসুন রাঙামাটি জেলার সাজেক ইউনিয়নে। যেটাকে সাজেক ভ্যালি নামে সবাই জানেন এবং চিনেন।
প্রকৃতির অপরূপ লীলায় মেঘ এবং পাহাড়ের সঙ্গে মিলন দেখতে পাবেন সাজেক ভ্যালিতে। উঁচু-নিচু পাহাড়ের পরতে পরতে রয়েছে সৌন্দর্য। পাহাড়ের সবুজ গাছ আর মেঘ দেখলে যে কারো চোখ ধাঁধিয়ে দেবে।
তবে সাজেক যেতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে পর্যটকদের। বিশেষ করে যখন পাহাড় ঘেষে এঁকে বেঁকে উঁচু নিচু রাস্তা। কখনও মনে হবে এই বুঝি শত ফুট নিচে পাহাড়ের খাদে পড়ে গেলাম।
প্রকৃতির এই সৌন্দ্যর্য উপভোগ করতে যারা মনস্থির করেছেন, তারা ঘুরে আসতে পারেন সাজেক। ভাবছেন সাজেক যাবো কীভাবে। চিন্তা নেই খাগড়াছড়ি জেলার শাপলা চত্বরে গেলেই দেখা যাবে সারি সারি জিপ, চান্দের গাড়ি, সিএনজি। দরদাম করে গ্রুপ করে ঘুরে আসা যায় সাজেক। শাপলা চত্বর থেকে সাজেক ভ্যালির দূরত্ব ৬৭ কিলোমিটার।
খাগড়াছড়ি জেলা জিপ মালিক সমিতির চার্ট অনুযায়ী পিকআপ ভ্যান দিনে গিয়ে দিনে ফিরলে ৫ হাজার ১০০ টাকা। আর যদি সাজেকে রাত্রি যাপন করেন তাহলে ভাড়া গুনতে হবে ৭ হাজার ১০০ টাকা। এক পিকআপে যাওয়া যায় ১০ জন।
আর যারা জিপে চড়ে যেতে চান তাদের ভাড়া হিসেবে গুণতে হবে ৪ হাজার ৬০০ টাকা। কেউ যদি রাত্রি যাপন করেন তাহলে ভাড়া হবে ৬ হাজার ৬০০ টাকা।
এছাড়া সিএনজি দিনে গিয়ে দিনে আসলে খরচ পড়বে ৩ হাজার টাকা। আর রাত্রি যাপন করলে পড়বে ৪ হাজার ৫০০ টাকা।
সাজেকে থাকতে চাইলে সাজেক রিসোর্ট, আলো রিসোর্ট, নিরিবিলি রিসোর্টসহ বেশ কিছু রিসোর্ট রয়েছে। এসব রিসোর্ট আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখতে হয়। আবার সাজেক গিয়েও রিসোর্ট ভাড়া পাওয়া যায়।
সাজেক যাওয়ার পথে কবাখালী বাজারে চাইলে কেউ হালকা নাস্তাও করে নিতে পারেন। কবাখালীতে কয়েকটি ছোট ও মাঝারি আকৃতির রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
সাজেক ভ্যালির পথেই দেখা যাবে হাজাছড়ি ঝর্ণা, কাচালং ব্রিজ।
খাগড়াছড়ি জিপ মালিক সমিতির লাইনম্যান সুমন বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, 'কেউ চাইলে ফোনেও বুকিং দিতে পারে। আমরা এখান থেকে সাড়ে ৭টায় সবগুলো গাড়ি ছেড়ে যায়। কেউ আগে থেকে বুকিং দিলে গাড়ি পেতে সহজ হয়। আর যদি কেউ এখানে এসে গাড়ি নেয় সেটাও করতে পারবেন।
এসব গাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার বাঘাইহাট নামক স্থানে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করতে হয় সেনাবাহিনী অনুমতির জন্য। বাঘাইহাটে সেনাবাহিনীর চেক পোস্টে গিয়ে গাড়ির চালক এবং পর্যটকদের গ্রুপের একজনের নাম লিপিবদ্ধ করতে হয়। সেখান থেকে গাড়ির সিরিয়াল নম্বর দেওয়ার পর সকাল সাড়ে ১০টায় সেনাবাহিনীর অনুমতিতে ছুটে চলে পর্যটকদের গাড়ি। আবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ফিরতি ট্রিপেও সেনাবাহিনীর অনুমতির দরকার হয়।
এক যুগ আগেও নিরাপত্তার অভাবে সাজেকে সেভাবে যেতেন না পর্যটকরা। এখন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পর্যটকদের সেখানে যাওয়া অনেকটাই সহজ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৬
এসএম/বিএস