রিছাং ঝরনা (খাগড়াছড়ি) ঘুরে: প্রায় ২৫ হাত উঁচু পাহাড় থেকে গলিযে পড়া ‘রিছাং ঝরনা’র হিমশীতল জলের পরশ পাহাড়ি পথের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয় যে কারোরই। ঝরনার স্বচ্ছ শীতল জল ছোঁয়া মাত্রই যেনো গায়ে শরীর টেনে ধরে ভিজিয়ে দেয়।
অথচ এই পর্যটকরাই রিছাং ঝরনার বুক প্রতিনিয়ত কলুষিত করে চলেছেন নিজেরই অজান্তে। ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন ঝরনার স্বাভাবিক গতিপথ। এ যেন প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’।
রিছাং ঝরনা ঘুরে দেখা যায়, স্বচ্ছ জলে শরীর জুড়িয়ে পর্যটকরা যখন ফিরে যাচ্ছেন তখন ফেলে যাচ্ছেন সঙ্গে আনা বোতল, চিপসসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেট। পানিতে ভাসতে থাকা দু’একটি বোতল এ সময় দৃষ্টিগোচর হয়। কিছদূরে একই পথ ধরেছে আরেকটি পানির বোতল।
এর একটু সামনেই দেখা মিললো বিচিত্র দৃশ্যের। যা দেখে যে কারোরই প্রথমে মনে হবে রোদে কাপড় শুকাতে দেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
ঝরনা দেখে বেরিয়ে যেতে চোখে পড়লো বেশ কয়েকটি প্যান্ট ঝুলে আছে আড়াআড়ি পড়ে থাকা গাছের উপর। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব কাপড় রিছাং ঝরনা দেখতে আসা পর্যটকদেরই, নিশ্চিত করে বলা যায়। যা একদিকে ঝরনার সৌন্দর্যকে ম্লান করছে, অন্যদিকে কলুষিত করছে পরিবেশ।
শুধু তাই নয়, চোখে পড়েছে উল্টে থাকা স্যান্ডেল, গামছা। মূল ঝরনার আশেপাশেও এমন অপ্রয়োজনীয় বস্তু উপস্থিত।
ঝরনা দেখতে আসা পর্যটকরা মনে করেন, এসব কাজ আমাদের রূচিহীনতার পরিচয়। প্রকৃতির এসব উপাদানকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব।
খাগড়াছড়ির আলুটিলা পযর্টন কেন্দ্র পেরিয়ে সামান্য পশ্চিমে মূল সড়ক থেকে উত্তরে অবস্থান রিছাং ঝরনা। মারমা ভাষায় ‘রি’ শব্দের অর্থ ‘পানি’ আর ‘ছাং’ শব্দের অথ ‘গড়িয়ে পড়া’। এই অর্থে রিছাং ঝরনা মারমাদের কাছে ‘তেরাং তৈকালাই’ ঝরনা হিসেবেও পরিচিত।
** রিছাং রোমাঞ্চ!
** মেঘের ভেলায় ভেসে মেঘ-পাহাড়ের দেশে
** ঝালেই পাহাড়িদের পছন্দ ‘সুমরিচ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৬
জেডএস