সাজেক থেকে ফিরে: একটি পাহাড় ঘিরে তিনটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক ইউনিয়নের এই পাহাড়ের নাম কংলাক।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সাজেক ভ্রমণকালে কথা হয় মনিন অনিন্দ্র ত্রিপুরার (৭০) সঙ্গে। পাকিস্তান আমল থেকেই এই পাহাড়কে ঘিরে তাদের বসবাস।
কংলাককে সিপ্পু চূড়াও বলে থাকেন স্থানীয়রা। এই পাহাড় ঘেঁষেই তাদের আবাস। হাজার ফুটের ঊর্ধ্বে এই পাহাড় বেয়ে প্রতিদিন মনিন অনিন্দ্র ত্রিপুরা ১৫ কি.মি. দূরের মাচালং বাজারে আসা যাওয়া করেন জীবনের তাগিদে।
পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জুম চাষ (সমন্বিত চাষ) করছেন আদি এই বাসিন্দারা। একখণ্ড জমির ভেতর ধান, হলুদ, আদা, শসা, মরিচ, কলা, কমলা লেবু, গেন্ডারি হরেক রকম শস্য ও ফল উৎপাদন করছেন এসব পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী।
কংলাক পাহাড়ের চূড়ায় কিছু পাথর রয়েছে। সেসব পাথরে সনাতন ধর্মের প্রয়াত খ্যাতিমান লোকের নাম খোদাই করে লেখা আছে। এটি তাদের বংশ পরিচয় বহন করে।
সাজেক ভ্যালির কংলাক পাহাড়ে ৪০টি পরিবার বসবাস করছেন বলে জানান মনিন অনিন্দ্র ত্রিপুরা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এই পাহাড়ে ৪০টি পরিবারের মধ্যে ৩০টি পরিবারই হচ্ছে ত্রিপুরাদের। বাকি ১০টির মধ্যে পাংখোয়া ও চাকমা সম্প্রদায়।
জীবন অনিন্দ ত্রিপুরা আরও বলেন, আমরা এখানে তিনটি সম্প্রদায় বসবাস করলেও কখনো ফ্যাসাদ বাঁধেনি। আমরা শান্তিতেই আছি। আগে তো এখানে লোকজন আসতো না, এখন নিরাপত্তা থাকায় প্রতিদিন অনেক লোক এখানে আসে। ট্যুরিস্ট এলে আমাদের আয়ও বেড়ে যায়।
কংলাক পাহাড় বা সাজেক ভ্যালির নিকট দূরত্বে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই এখানকার পরবর্তী প্রজন্ম এখনও শিক্ষার দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
দেশি-বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে যারা পাহাড় দেখতে ভালোবাসেন তারা চাইলে এই কংলাক পাহাড়টি দেখে আসতে পারেন। হাজার ফুট উচ্চতার এই পাহাড়ে উঠলে ভারতের মিজোরাম রাজ্য দেখা যায়।
** সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি সাজেক যাবেন যেভাবে
বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৪
এসএম/এমজেএফ/