রাঙামাটি থেকে: রাঙামাটির দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম ঝুলন্ত ব্রিজ। অনেকে এটাকে এ জেলার ‘সিম্বল’ হিসেবে মনে করেন।
বর্তমানে ঝুলন্ত ব্রিজ পানির নিচে থাকায় দর্শনার্থীদের টিকেট কাটতে হয় না। স্বাভাবিক সময়ে ২০টাকার টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয়। প্রবেশ করে সিঁড়ি দিয়ে ধাপে ধাপে নেমে ঝুলন্ত সেতুর কাছে যেতে হয়। লেকের পানি বেড়ে যাওয়ায় মনোমুগ্ধকর এ সেতুটিটি এখন ৫ ফিট পানির নিচে।
তবে ইঞ্জিনচালিত বোট দিয়ে পার হয়ে সেতুর ওপাশে পার্কে যাওয়া যায়। জনপ্রতি আসা-যাওয়া মিলে খরচ পড়তে ২০ টাকা। পার্কের ওই স্থানটা থেকে লেকের ভেতর উঁচু-নিচু পাহাড়গুলো দেখতে অন্য রকম আকর্ষণীয় মনে হবে পর্যটকদের কাছে।
পার্কে বসে পর্যটকরা লেকের অপরূপ-মনলোভা দৃশ্য দেখতে পারবেন। বিশেষ করে পড়ন্ত বিকেলে লেকেরে স্বচ্ছ জলরাশিতে সূর্যের ঝিকিমিকি খেলা এবং দূরের পাহাড়-মেঘের মিলন সবার মন ভোলাবে।
পার্কের ভেতরে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বোতল-প্লাস্টিকে ময়লা-আবর্জনা। রয়েছে ভ্রাম্যমাণ হকারদের উৎপাত। পার্কটি পর্যটন করপোরেশনের অধীনে হলেও এখানে নেই কোনো ব্যবস্থাপনা। সচেতনতার অভাবে এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সুন্দরর একটা পরিবেশ ময়লা আবর্জনায় নষ্ট হচ্ছে।
এখানে এসে কোনো ময়লা ফেলার ঝুড়ি বা ডাস্টবিন চোখে পড়েনি। নির্দিষ্টস্থানে ময়লা ফেলার জন্য নেই কোনো লিখিত নির্দেশিকা। অনেক পর্যটক পরিত্যাক্ত বোতল এবং বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের প্যাকেট লেকের পানিতে ফেলছেন। এতে করে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি লেকে পানিতে মাছের অভয়াশ্রমেরও ক্ষতি হচ্ছে।
আর পার্কে ভেতরে গরু-ছাগলের আধিক্য পর্যটকদের আরেক বিরক্তির কারণ। সেখানে সেখানে গরু-ছাগলের বিষ্টা এবং তাদের উৎপাতে বিরক্তি প্রকাশ করেন পর্যটকরা।
এখানে আসা পর্যটকরা ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ ঝুলন্ত সেতুতে দেখে যেমন মুগ্ধ হন তেমনি এসব অব্যবস্থাপনা দেখে বিরক্তও হন বটে।
পার্কে ‘জিরান ড্রিংস কর্নার’ নামে পর্যটন করপোরেশনের একটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। ঘুরতে আসা পর্যটকরা চাইলে বিভিন্ন রকমের কোমল পানীয় এবং পণ্য কিনতে পারবেন। সেখানে এক কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেলে, পর্যটন করপোরেশন থেকে কয়েকমাসে একবার এসে পার্কটি পরিষ্কার করা হয়। তবে এবার ঝুলন্ত ব্রিজ অনেকদিন পানির নিচে থাকায় লোকজন পরিষ্কার করতে আসতে পারনেনি।
পার্কের শেষপ্রান্তে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন পাহাড়ি এবং উপজাতীয় নারীরা। এখানে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চাদর-শাল, আচার, হাতে তৈরি ব্যাগসহ বার্মিজ জিনিসপত্র। এখন পর্যটক মৌসুমে না হওয়া বেচা-বিক্রি ভাল না। তবে মৌসুমে তাদের বেচা-বিক্রি ভালই হয় বলে জানা গেছে।
কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থাপনা এবং পর্যটকদের সচেতনতাই পারে এ পার্কের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করতে। কর্তৃপক্ষ যদি যথাযথ পর্যটক বান্ধব পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করে তাহলে আরও বেশি পর্যটক এখানে আসবে। এমনটা জানালেন এ পার্কে ঘুরতে আসা বেশ কয়েকজন পর্যটক।
** মেঘ-পাহাড়ের অকৃপণ সৌন্দর্যের আধার খাগড়াছড়ি
** পর্যটকদের কাছে খাগড়াছড়ির ফল-সবজির কদর
**অনাবিল শান্তি শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
এসএইচ