সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মহাজোটের আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টির শওকত চৌধুরীকে সমর্থন দেয় আওয়ামী লীগ। তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকায় কাঙ্খিত কোনো উন্নয়ন করতে পারেননি।
নির্বাচনী এলাকার ভোটাররা বলছেন, এখানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ভালো। নিয়মিত দলীয় কার্যক্রম চলে, দলের নেতাকর্মীরাও সক্রিয়। অন্যদিকে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে বেশ দুর্বল, কার্যক্রম নেই বললেই চলে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলও রয়েছে। জনপ্রিয়তা হারিয়েছে জাতীয় পার্টিও।
ফলে এবার আওয়ামী লীগ ভালো প্রার্থী দিলে সহজেই বিজয়ী হয়ে আসবে বলেই মনে করছেন ভোটাররা।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীও রয়েছেন একাধিক। তাদের মধ্যে সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, শ্রমিক নেতা মুকসুদুল মোমিন ও অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকন প্রার্থী হতে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ব্যারিস্টার মোকসেদুল ইসলাম ও ইঞ্জিনিয়ার সেকেন্দার আলীও ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন চান।
তবে মানুষের বক্তব্য হচ্ছে, যাকেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিক না কেন, তিনি যেন যোগ্য প্রার্থী হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
অন্যদিকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের পর সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জে বিএনপিকে মাঠে দেখা যায়নি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল হাবিব দুলুর উপস্থিতিতে সৈয়দপুরে একটি কর্মসূচি দেওয়া হলেও দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পণ্ড হয়। এ সময় দুলু লাঞ্ছিত হন বলেও জানা গেছে। কিশোরগঞ্জেও বিএনপির নেতাকর্মীরা নিস্ক্রিয় বলে জানান সাধারণ মানুষ।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন- বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার ও সৈয়দপুর বিএনপির সভাপতি আব্দুল গফুর সরকার। কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীনও মনোনয়ন চাইতে পারেন।
সৈয়দপুরে আগে ভালো অবস্থানে ছিলো জাতীয় পার্টি। দলের এমপি থাকা সত্বেও এখন আর সে অবস্থা নেই। কিশোরগঞ্জেও দলটির কোনো কার্যক্রম নেই। এর জন্যও এমপি শওকত চৌধুরী দায়ী এবং তার কারণেই জাতীয় পার্টি জনপ্রিয়তা হারিয়েছে বলে মনে করেন লোকজন।
সৈয়দপুর বাজারের মুদি দোকানদার দুলাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখানে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অবস্থাই ভালো। দলীয় কার্যক্রম নিয়মিত হয়, জনপ্রিয়তাও আছে। বিএনপি-জাতীয় পার্টির কোনো কার্যক্রম নেই। আগামী নির্বাচনে সব দলই প্রার্থী দিলেও আওয়ামী লীগই জয়লাভ করবে’।
তার মতে, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে এ আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলো। যিনি এমপি হয়েছেন, তিনি কোনো কাজই করেননি। এখানে আওয়ামী লীগেরই এমপি থাকা দরকার’।
কিশোরগঞ্জ বাজারে বসে উপজেলার দক্ষিণ রাজিব গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো ভোট দিলাম জাতীয় পার্টিকে। কিন্তু এমপি শওকত কোনো কাজই করেন না। তিনি তো এখানে আসেনই না। আওয়ামী লীগ সরকারে আছে। আগামী নির্বাচনে যদি ভালো প্রার্থী দেয়, তিনিই এমপি হবেন। সরকার অনেক কাজ করছে, এ এলাকায়ও কাজ হবে’।
সৈয়দপুরের ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানও বলেন, ‘এখানে রাজনৈতিক কার্যক্রম যা আছে, আওয়ামী লীগেরই। বিএনপি নিষ্ক্রিয়। জাতীয় পার্টির এমপি থাকলেও কোনো কাজ নেই। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি। এবার প্রার্থী দিলে আওয়ামী লীগেরই জেতার সম্ভাবনা বেশি’।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৭
এসকে/এএসআর
** অভিযোগের শেষ নেই শওকত চৌধুরীর বিরুদ্ধে