কিন্তু, ঘর সামলাতে আওয়ামী লীগ কতটা সফল হয়েছে- তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়: এ আসনে বিগত নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা বলে, ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’ অন্তরায় না হলে দল আরও এগিয়ে যেতো। গত চার মেয়াদ ধরে কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন বর্তমান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী একেএম মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক।
দলের সব সফলতা ছাপিয়ে বারবার ভোটারদের পোড়াচ্ছে মোস্তাকের ‘উদাসীনতা’। কট্টর লাঙ্গল প্রেমিকদের মুখেও শোনা যাচ্ছে, ‘অন্য দলকে ভোট দেওয়ার প্রশ্নই আসে না- লাঙ্গলেও ভোট দেবো না’।
আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের শঙ্কা, পরিশ্রমের ফসল এবার ঘরে উঠবে তো? নানা অসন্তুষ্টির পরও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নুরুন্নবী চৌধুরী খোকন আশাবাদী, জোটে না গিয়েও আওয়ামী লীগ যদি যোগ্যপ্রার্থী মনোনীত করে- এ আসন হাতছাড়া হবে না। আসন্ন নির্বাচনে দলের চেয়ে ব্যক্তিকে বেশি প্রাধান্য দেবে জনগণ- মাঠের চিত্র তাই বলে, যোগ করেন তিনি।
জোটের অতীত ইতিহাস সাফল্যের, আর আমাদের সীমাবদ্ধতা আন্তঃদ্বন্দ্ব। আওয়ামী লীগ যদি নিজস্ব প্রার্থী দেয়, তবে প্রথমে লক্ষ্য রাখতে হবে স্থানীয় নির্বাচনের চিত্র যেনো ফের দেখা না যায়।
গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে- ইতোমধ্যে এ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা, নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক প্রধান, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান উজ্জ্বল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় নেতা ওসমান গণি, নুরুন্নবী চৌধুরী খোকন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসলাম হোসেন সওদাগরকে নিয়ে এখনই বিভক্ত হয়ে গেছেন কর্মীরা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট রশিদ আহমেদ, এছাড়াও মনোয়ন না পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপি প্রার্থী সাইফুর রহমান রানার সম্ভাবনাও ছোট করে দেখছেন না তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তারা মনে করছেন, দলীয় কোন্দল বিএনপি’র জন্য ‘সাপে বর’ হতে পারে।
সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন। আওয়ামী লীগের থানা কমিটির মোট পদ সংখ্যা ৬৬টি। এসব পদে থাকা ৫০ জনই শিক্ষক, ফলে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে সাংগঠনিক কাজে কমই সময় পান তারা।
অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মন্দের ভালো’। আরও যোগ করেন, একেবারে ভালো নেতা-কর্মী যে উঠে আসছে না- তা নয়।
প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। আমাদের হাত ধরেই নতুন প্রজন্মের নেতা আসার কথা। জেলা পর্যায় থেকে যখন কমিটি করে দেওয়া হয় এবং সাধারণ মানুষ আমাদের প্রশ্ন করে, তখন উত্তর দেওয়ার কিছু থাকে না।
** ‘অ্যালা মানুষ দেখি ভোট দেমো! আর মার্কা দেইকপার নই’
** কুড়িগ্রাম-২: জাতীয় পার্টির দুর্গ আ’লীগের দখলে
** শক্ত অবস্থানে আ’লীগ, সুযোগের অপেক্ষায় বিএনপি
** এ ‘লং’ জার্নি বাই ‘দ্রুতযান এক্সপ্রেস’
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
এসএইচ/ জেডএম