ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনকেই দলের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীরা। তবে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে তীব্র বিরোধ রয়েছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলার সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিনের। এ বিরোধের কারণে গিয়াস উত্তর জেলার কমিটিতে প্রথমে যথাযথ পদ পাননি বলে জনশ্রুতি রয়েছে। পরে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপে তাকে সহ-সভাপতি করা হয়।
এরই জেরে গত উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে গিয়াসকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ফলে বিদ্রোহি প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের কেউ-ই জয়ী হতে পারেনি সেই নির্বাচনে। এরপর থেকে উভয়ের দ্বন্দ্ব আরো বাড়ে। মূলত সে কারণেই দলের সিনিয়র নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন গিয়াস। তবে শেষ পর্যন্ত দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই মেনে নেবেন তিনি।
অপরদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে তৃণমূল থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, কোন ব্যবসায়ী নমিনেশন চাইলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা প্রত্যাখ্যান করবেন। এরই মধ্যে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আমিন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। জাসাসের সাধারণ সম্পাদক শাহেদুল ইসলাম চৌধুরী ও প্রফেসর কামালও দল থেকে নমিনেশন চাইবেন।
এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ বলছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন অংশ না নিয়ে তাঁর ছেলে মাহবুব রহমান রুহেলকে প্রার্থী করতে পারেন। রুহেল উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক। তবে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ একজন নেতা জানিয়েছেন, নির্বাচন করার প্রস্তুতি এরই মধ্যে শুরু করেছেন। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমান গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
মনোনয়ন চাইবেন জানিয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, দলের জন্য আমি অনেক ত্যাগ শিকার করেছি। গতবারও নমিনেশন চেয়েছিলাম। আগামী নির্বাচনেও চাইবো। তবে দলের সভানেত্রী যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটাই মেনে নেব।
‘দলের সভানেত্রী নির্বাচনের আগে বিচার বিশ্লেষণ করে যোগ্য প্রার্থী ঘোষণা করবেন। আমাকে যদি যোগ্য মনে করেন তাহলে আমাকে দিবেন, না দিলে করবো না। ’
এদিকে সফল সংগঠক হিসেবে খ্যাতি পাওয়া নিয়াজ মোর্শেদ এলিট নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সক্রিয় থাকলেও এবার রাজনীতিতে জড়াতে চান সাবেক এই ছাত্রনেতা।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্র জীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।
দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়নে তরুণদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নমিনেশন চাইবো। দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুযোগ দিলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো।
বড় তাকিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদ এলিট ছাত্র জীবনেই বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। চট্টগ্রাম খুলশী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি, বর্ষবরণ পরিষদের সভাপতি, বাংলাদেশ দাবা ফাউন্ডেশনের চিফ কো-অর্ডিনেটরসহ (চট্টগ্রাম বিভাগ) বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
তবে নির্বাচন নিয়ে এখনি কথা বলতে রাজি হননি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি কি নির্বাচনে আসবেন নাকি তাঁর ছেলের হাতে হাল তুলে দেবেন। তা পরিবারের বাইরে গিয়ে রাজনীতিতে পোড় খাওয়া গিয়াস মনোনয়ন পাচ্ছেন, নাকি তরুণ উদ্যোক্তা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট মনোনয়ন নিয়ে এসে সবাইকে চমকে দিচ্ছেন তা দেখতে আরো কিছু দিন অপেক্ষায় থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৭
এমইউ/টিসি/জেডএম