ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

রায়গঞ্জের প্রার্থীতে সিরাজগঞ্জ-৩ এর ‘ভাগ্য’

জনি সাহা, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
রায়গঞ্জের প্রার্থীতে সিরাজগঞ্জ-৩ এর ‘ভাগ্য’ রায়গঞ্জের প্রার্থীতে সিরাজগঞ্জ-৩ এর ‘ভাগ্য’

সিরাজগঞ্জ থেকে: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরগরম সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ-সলঙ্গা) আসন। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রায় একডজন ও বিএনপির চার-পাঁচজন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী। 

সর্বশেষ পাঁচটি জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে টানা দু’বার  আওয়ামী লীগ ও টানা তিনবার বিএনপির প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত টানা তিনবার সংসদ সদস্য ছিলেন প্রবীণ বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান তালুকদার।

তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রয়াত ইসহাক হোসেন তালুকদারের কাছে বিপুল ভোটে হেরে যান তিনি।  

এ আসনে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে টানা দু’বার এমপি নির্বাচিত হন গাজী ইসহাক হোসেন তালুকদার। মেয়াদের দুই বছরের মাথায় গত বছরের ০৬ অক্টোবর তার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তাড়াশ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ম ম আমজাদ হোসেন মিলন।  

দু’দলেই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রায় সবাই রায়গঞ্জের বাসিন্দা। শুধু বর্তমান এমপি আমজাদ হোসেন তাড়াশ উপজেলার বাসিন্দা। যার মাধ্যমে প্রথমবার নিজস্ব কোনো এমপি পেয়েছিলেন তাড়াশবাসী, তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তাই আগামী নির্বাচনে রায়গঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যে প্রার্থীই মনোনয়ন পাবেন, তিনিই সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের ‘ভাগ্য নির্ধারক’ হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আবার এ আসনে তাড়াশ উপজেলা থেকে দুই দলের একসঙ্গে প্রার্থী মনোনয়নের রেকর্ড নেই।
 
এ আসনের মোট ৩ লাখ ৬২ হাজার ৩১ জন ভোটারের মধ্যে রায়গঞ্জেরই আড়াই লাখের বেশি। এখানে বিএনপির শক্তিশালী অবস্থানের কারণে আগামী সংসদ নির্বাচনে শুধু রায়গঞ্জের ভোটাররাই যথেষ্ট বলেও মনে করেন রায়গঞ্জবাসী।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এক ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে শক্ত অবস্থানে থাকা প্রয়াত সংসদ সদস্য ইসহাক হোসেন তালুকদারের ছেলে ইমরুল হোসেন তালুকদার, কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট ও শিল্পপতি এ টি এম লুৎফর রহমান দিলু রায়গঞ্জের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে সুইটকে এগিয়ে রাখছেন ভোটাররা। কারণ হিসেবে অনেকে বলছেন, তিনি মাঠের নেতা। রয়েছে তৃণমূলে জনসম্পৃক্ততা, জনগণও তাকে খুব কাছ থেকে চেনেন।

 
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী টানা তিনবারের সাবেক এমপি প্রবীণ নেতা আব্দুল মান্নান তালুকদারও রায়গঞ্জের বাসিন্দা। তাই এ আসনের ভোটাররা ধারণা করছেন, সুইট ও তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
 

ভোটের মাঠে একেবারে নতুন ইমরুল হোসেন তালুকদার। যদিও নিজেকে যোগ্য প্রার্থী মনে করছেন সাবেক এমপি ইসহাক হোসেন তালুকদারের এই ছেলে। এবারই প্রথম মনোনয়ন প্রত্যাশী ইমরুলের দাবি, ‘তিন বছর ধরে মাঠে কাজ করছি। গত তিনমাসে যা তুলনামূলক বেড়েছে’।
 
তবে লুৎফর রহমান দিলুর জনসম্পৃক্ততা নেই বললেই চলে। শিল্পপতি হিসেবে তিনি ‍যতোটা সফল, মাঠে ততোটাই ব্যর্থ বলে দাবি স্থানীয়দের। যদিও নিজেকে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার দাবি করেছেন তিনি।
 
তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘রায়গঞ্জের তিন মনোনয়ন প্রত্যাশীল মধ্যে সুইট এগিয়ে। এ আসনে বিএনপি সাবেক আব্দুল মান্নান তালুকদার ও আওয়ামী লীগ সাখাওয়াত হোসেন সুইটকে মনোনয়ন দিলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। কারণ, ‘দলীয় কোন্দলে’ মনোনয়ন প্রত্যাশী তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে নীরব থাকতে পারেন।
 
সেলিম জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে মান্নান তালুকদার হেরে যায়। এবার মনোনয়ন পেলে হারার সম্ভাবনা বেশি। তাই  মনোনয়ন দেওয়ার আগে মাঠ যাচাইয়ের কথা বলেন তিনি। এক্ষেত্রে তাকে মনোনয়ন দিলে বিএনপি আসনটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে বলে দাবি তার।
 
২০০১ সালের নির্বাচনেও মনোনয়ন চাওয়া সেলিম জাহাঙ্গীর আরো বলেন, ‘গত উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আব্দুল মান্নান তালুকদার আমার বিরোধিতা করেছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দিলে আমিও তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবো’।
 
আব্দুল মান্নান তালুকদার বলেন, ‘শরীর ভালো থাকলে অবশ্যই নির্বাচন করবো। আর দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে’। ধানের শীষ এখনও তার হাতেই রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
 
তবে আসন ফিরে পেতে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেভাবে কাজ করার কথা বলেন তিনবারের এমপি প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ।
 
বিএনপির মনোনয়ন চাইতে পারেন রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি আইনুল হক, কেন্দ্রীয় গ্রাম সরকার বিষয়ক সহ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শিশিরসহ আরো কয়েকজন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
জেডএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।