ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ভোটের-কথা

দক্ষিণাঞ্চলে শিল্প-বাণিজ্যের বিকাশ চান ভোটাররা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৮
দক্ষিণাঞ্চলে শিল্প-বাণিজ্যের বিকাশ চান ভোটাররা ...

বরিশাল: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশের সব রাজনৈতিক দল নেমে পড়েছে নির্বাচনী মাঠে। দল ও জোটের নানান সমীকরণের পাশাপাশি চলছে দলীয় মনোনয়নের কার্যক্রম। 

আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র কয়েকদিনের মধ্যেই প্রচার-প্রচারণা আর নানান প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের দুয়ারে যাবেন প্রার্থীরা। প্রার্থীর ব্যক্তি প্রতিশ্রুতির সাথে সাথে থাকছে দলীয় নির্বাচনী ইশতেহার।

আর ইশতেহারকে ঘিরে থাকে ভোটার ও প্রার্থীদের নানান জল্পনা-কল্পনা। ভোটাররা চান ইশতেহারে তাদের চাওয়া-পাওয়ার প্রধান্য দেবে দলগুলো।

বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চাই রাজনীতি স্থিতিশীল হোক। সন্ত্রাস, নৈরাজ্যবাদ বন্ধ হোক। দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ সর্বদা বজায় থাক। বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীদের নিরাপদ পরিবেশ দেওয়ার জন্য নানান উদ্যোগ নিয়েছে। আগামীতেও ব্যবসার নিরাপদ পরিবেশ থাকবে, এমন প্রতিশ্রুতি ইশতেহারে থাকবে বলে আশা করছি।

এ কথায় সুর মিলিয়ে বরিশাল কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল বাংলানিউজকে বলেন, নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থান ব্যবস্থার সংকট রয়েছে। শিল্প-বাণিজ্যের বিকাশ ঘটনোর মধ্য দিয়েই কর্মসংস্থানের সংকট নিরসন করা সম্ভব। পাশাপাশি শিক্ষায় আধুনিক, প্রযুক্তি নির্ভর, কর্মমুখী, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আনা প্রয়োজন। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু হবে না, শিক্ষাকে জাতীয়করণ করতে হবে।  

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে আমরা চাই- দেশে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট, প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি ব্যবস্থা, খনিজ সম্পদ দেশীয়ভাবে আহরণ করে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা, পুরোনো চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করা এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বে প্রত্যেক নাগরিকের চিকিৎসা নিশ্চিত করা, সুশাসন নিশ্চিত করা, দুর্নীতি সমূলে উৎপাটন করা। কোন এলাকায় এককভাবে নয়, অগ্রাধিকার বেসিসে সুসম উন্নয়ন বজায় রাখা, ধনী-গরিবের ব্যবধান কমিয়ে আনা, মনন বিকাশে সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে রাষ্ট্রীয়ভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ থাকুক। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে এগুলো সম্ভব হবে না।

সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র জিয়াউল করিম মিনার বলেন, ইশতেহার মানেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি। অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলে উন্নয়ন চলমান রয়েছে, যা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাটাই আমাদের জন্য ইশতেহারে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিশ্রুতি হওয়া উচিত।  
তিনি বলেন, তারপরে যদি বলতে হয়, তবে সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে বিশেষ করে সরকারি চাকরিতে আবেদন ফি বেকারদের কাছে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। তাই এটা সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেওয়া, সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা বৃদ্ধি করার বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক প্রথা, এসিড নিক্ষেপ এবং নারী ও শিশুপাচার রোধে কঠোর কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত  অর্থাৎ সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডমুক্ত একটি দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী মাঠে ভোট চাইতে নামা উচিত।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমজি কবির ভুলুর মতে, ইশতেহারের আগে উচিত সৎ-নিষ্ঠাবান ও  দেশপ্রেমিকদের দলীয় প্রার্থী করা। যারা নিজের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে হলেও দেশের স্বার্থে কাজ করবে। যারা দেশকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করবে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়ন চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম আর্থ সামাজিক মুক্তি , চেয়েছিলাম শৃঙ্খলা এবং সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত দেশ। স্বাধীনতার পর বহু বছরে না পেলেও এখন দেশ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। চাই এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা এগিয়ে যাক।  

বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও চারুকলার সদস্য নজরুল বিশ্বাস বলেন, যে ইশতেহার বাস্তবে রূপ নেবে, ইশতেহার বাস্তবায়ন হবে- রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সেই ইশতেহার চাই।

তিন বলেন, বরিশাল একসময় শস্যভাণ্ডার হিসেবে সমাদৃত ছিলো। কিন্তু কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে যাচ্ছে, বরিশালে সেই শস্য ভাণ্ডারে রূপ দেয়ার জন্য এ অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক  ইশতেহার প্রয়োজন।

পাশাপাশি এ অঞ্চলে শিক্ষিতের হার বেশি, সেই হিসেবে প্রায় প্রতি ঘরেই বেকার তরুণরা রয়েছে। যাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, এ ক্ষেত্রে ইশতেহারে বরিশাল অঞ্চলে শিল্প-বাণিজ্যের ওপর ইশতেহারে জোর দেবে রাজনৈতিক দলগুলো, এমন প্রত্যাশা করেন নজরুল বিশ্বাস।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।