ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

যান্ত্রিক নগরের বুকে সূর্যমুখীর বাগান

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
যান্ত্রিক নগরের বুকে সূর্যমুখীর বাগান

খুলনা: দূর থেকে তাকালেই মনে হবে বিশাল হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে আসলেই দেখা যাবে নীল আকাশের সঙ্গে হলুদ সূর্যমুখীর মায়াবী রূপ।

বাতাসে দোল খেয়ে ফুলগুলো যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করার। ইট-পাথরের এ শহরে অপরূপ এমন সৌন্দর্যে সেজেছে খুলনা মহানগরীর নুরনগর এলাকার বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সংলগ্ন বাগান।

বিস্তৃত সূর্যমুখী বাগানের ফুলগুলো পথচারীদের কাছে টানছে। সূর্যমুখীর এ বাগান ঘিরে চলছে দর্শনার্থীদের আনন্দ উৎসব। বাগানে গেলে মৌমাছির গুঞ্জনে এক মোহনীয় পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। শুধু স্থানীয় নয় বাগানটিকে এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিনই নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

প্রায় ১০ বিঘা জমি জুড়ে তৈরি হয়েছে অভাবনীয় এক মনজোড়ানো সৌন্দর্য। সকালে সূর্যের দিকে মুখ করে ফুটে থাকা ঘন ফুলের সমারোহ বিকেলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আকর্ষণ সৌন্দর্য প্রকৃতি প্রেমী ও সৌন্দর্যপ্রেমীদের টেনে আনছে। ফুলের বাগানের ভিতরে ছবি ও সেলফি তুলতে বাগান মালিককে দিতে হচ্ছে ২০ টাকা।

বাবার সঙ্গে সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে আসা মুবাশ্বির আল নাফি বলেন, সূর্যমুখী ফুলের কথা শুনে দেখতে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে। মাঠভরা সূর্যমুখী ফুল দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। একসঙ্গে এত সূর্যমুখী ফুল আগে কখনও দেখিনি।

নুরনগর এলাকার বাসিন্দা টুম্পা জানান, গত কয়েক বছর এ এলাকায় সূর্যমুখী চাষ হয়। প্রকৃতির শোভাবর্ধনকারী এ সূর্যমুখী এবার ব্যাপক ফুল হয়েছে। যার কারণে এ বাগানে এসে অনেকেই নিজে, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারসহ ছবি তুলছেন। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ফলে বাগানের ছবিতে এখন ফেসবুক ভাইরাল। এইসব পোস্ট দেখে সৌন্দর্য প্রেমীরা এখানে দল বেঁধে আসছেন এবং অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

সূর্যমুখী চাষি আসাদুজ্জামান বলেন, পরিত্যাক্ত সরকারি ৩ বিঘা জমিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সূর্যমুখী চাষ করেছি। সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বিপুল মানুষ আসছে এখানে।

তিনি জানান, এলাকায় তিনি ছাড়াও জাহাঙ্গীর হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম, তুহিন শেখ, মোতালেব হোসেন, মাহফুজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন সূর্যমুখীর চাষ করেছেন।  

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রশান্ত মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, তেল যেন বিদেশ থেকে আমদানি করতে না হয় সেজন্য সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। সে দিন বিবেচনা করে পরিত্যক্ত জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। নগরীর নুরনগরে সরকারি পরিত্যাক্ত প্রায় ১০ বিঘা জমিতে স্থানীয় কৃষকদের সূর্যমুখী চাষের জন্য বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। আরবিএস-২২৭ হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে এখানে। বাম্পার ফলনও হয়েছে। নগরীর মধ্যে এমন মনলোভা দৃশ্য দেখতে মানুষ আনছেন। গত বছরও লাগানো হয়েছিল তবে এবার ফলন বেশি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী বীজ পুষ্টির একটি মহান উৎস এবং অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। যার কারণে শহরের মধ্যে বেশ কিছু পরিত্যাক্ত জমিতে এবার সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে।

যেভাবে যাবেন: নুরনগর গিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সংলগ্ন এলাকার সরকারি পরিত্যাক্ত জমিতে এ সূর্যমুখীর বাগান। খুলনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের বিপরীতে বাগানের অবস্থান। নগরীর যে কোনো স্থান থেকে এখানে আসা যায়। এছাড়া ছাচিবুনিয়া, আড়ংঘাটা বাইপাসের পাশে, রূপসা বাইপাস সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি স্থানে সূর্যমুখীর বাগান রয়েছে। যেখানে গেলেই দেখা মিলবে অপরূপ ফুলের সমারহ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
এমআরএম/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।