ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

বান্দরবানে আমের ফলনে খুশি নন চাষিরা, আশাবাদী কৃষিবিভাগ 

কৌশিক দাশ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩
বান্দরবানে আমের ফলনে খুশি নন চাষিরা, আশাবাদী কৃষিবিভাগ 

বান্দরবান: বান্দরবানে মৌসুমের শুরুতে গাছে গাছে পর্যাপ্ত আমের মুকুল দেখা দিলেও অনাবৃষ্টি আর তীব্র তাপদাহের কারণে মুকুল ঝরে যাওয়ায় অনেক বাগানে পর্যাপ্ত আম নেই, আর এমন আবহাওয়ার কারণে অনেক বাগানের আম এবার পচে ঝরে পড়েছে। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন আমচাষিরা।

 

বান্দরবানের স্থানীয় আমের জাত রাংগোয়াই, এছাড়া আম্রপালি আমের খ্যাতি দেশজুড়ে। প্রতি বছর বান্দরবানের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত আম চলে যায় দেশের নানা প্রান্তে। বসন্তে মুকুলে মুকুলে ভরে গিয়েছিল প্রত্যেকটি বাগান। গাছে গাছে আমের মুকুলের সমারোহ দেখে আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। কিন্তু মৌসুমের প্রথমে অনাবৃষ্টি আর তীব্র তাপদাহে আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অনেক বাগানে আম ধরলেও পরে ঝরে পড়েছে গাছ থেকে।  

কয়েকটি বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান সদরের ফারুকপাড়ায় বেশ কিছু আম বাগান রয়েছে। তবে গাছে আম তেমন নেই। গাছে পর্যাপ্ত আম না থাকায় এবার লোকসান হবে বলে জানান আমচাষিরা। বাগানের আম বিক্রি করে আম চাষিদের বাগান পরিচর্যার খরচ উঠবে না বলে ধারণা করছেন অনেকে।  
বান্দরবানের ফারুকপাড়ার আমচাষি জেমস বম বাংলানিউজকে জানান, এ বছর গাছে আম ধরেছে কম। তার ওপর সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচণ্ড গরমে অনেক আম ফেটে গেছে। গত বছর আম বিক্রি করে ভালো দাম পেলেও এ বছর লাভ বেশি হবে না।  

আমচাষি ইমানুয়েল বম বাংলানিউজকে বলেন, আমার নিজস্ব দুই একর জমিতে আম বাগান রয়েছে, এ বছর আম পরিমাণে অনেক কম পাব। গত বছর বাগান বিক্রি করে ভালো দাম পেয়েছি। কিন্তু এ বছর ফলন কম হওয়ায় আমাদের এলাকার অধিকাংশ আমচাষি লোকসানের শঙ্কা করছেন।  

আমচাষি নুহই বম বাংলানিউজকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বাগানে আম কম পাব। বাগানে দেশি জাত, রাঙোয়া এবং আম্রপালি চাষ করেছি। ঝড়ে কাঁচা আম পড়েছে অনেক। কাঁচা আম মণ প্রতি ২০০-৩০০ টাকায় ও ভালো আম মণ প্রতি ৭০০-৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।  

তবে বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে ভিন্ন কথা, এখানকার তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে বান্দরবানে ৯৮০৯ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হয়েছিল। আর উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ১১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন আম। এ বছর উৎপাদন বেড়ে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  
এদিকে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে প্রথম দিকে আমের ফলন কিছুটা কম হলেও তেমন বড় ধরনের ক্ষতি হবে না বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।  

বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক এম এম শাহ নেয়াজ বাংলানিউজকে জানান, বান্দরবানের আম সারাদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর বান্দরবান থেকে ফরমালিনমুক্ত প্রচুর আম কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন। তিনি বাংলানিউজকে আরও বলেন, বান্দরবানে দিন দিন আমের আবাদ বাড়ছে আর এ বছর এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। এ বছর প্রচুর আমের মুকুল এসেছিল। তবে এপ্রিল মাসের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় কিছু কাঁচা আম ঝরে পড়েছে, যা চাষিরা বিক্রি করেছেন।  

তিনি আরও বলেন, আমের আবাদ বাড়াতে কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। আর আগামীতেও এমন সহায়তা অব্যাহত থাকবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩ 
এসআই 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।