ঢাকা: ৫ শতাংশ সুদে ঋণ কার্যক্রমের সেবা প্রকৃত চাষিদের কাছে পৌঁছে দিতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মাদ ছায়েদুল হক।
বুধবার (০৩ আগস্ট) দুপুরে ‘বাংলাদেশকে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ৫ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ কর্মসূচি মনিটরিং ও ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে নিরাপদ মাংস উৎপাদনে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কার্যক্রম’ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ সভার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মাদ ছায়েদুল হক বলেন, একটি শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য অন্য খাদ্য নয়, প্রয়োজন দুধ। আর এ দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই একটি ৫ শতাংশ সুদে ঋণ কার্যক্রম।
তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায়ই অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই এটির অপব্যবহার করেছেন। সম্পূর্ণ সেবা পৌঁছে দিতে আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। তবেই দুধ উৎপাদনে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। আমাদের সবাইকে আন্তরিক হয়ে কাজ করতে হবে’।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, এটি একটি যুগান্তকরী পদক্ষেপ। নারীর ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র্য কমাতে এটি খুবই সহায়ক। দেশের অগ্রযাত্রায় যেন আমরা পিছিয়ে না পড়ি সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সচেতন থাকতে হবে।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মাকসুদুল হাসান খান বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে কোথায় ছিলাম আর এখন কোথায় আছি- এটা তুলনা করলে আমরা বুঝতে পারবো, আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। তবে আমাদের কিছু সমস্যা আছে। সেগুলোর সমাধান করলে আরও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব’।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা ব্যাংকের যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো থেকে বের হয়ে আসার ওপর জোর দেন। তদারকির স্বার্থে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এ কর্মকর্তা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঋণ প্রদানে যেভাবে মানুষকে পাওয়া যায়, আদায়ে সেভাবে সহযোগিতা (অনেক ক্ষেত্রে) পাওয়া যায় না। তাই সঠিক চাষিকে ঋণের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায়ের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ ইউসুফ প্রমুখ।
সভায় প্রান্তিক চাষিদের জমির দলিল ছাড়া যাচাই-বাছাই করে ৫ শতাংশ সুদের ঋণ কর্মসূচিতে নিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
সভায় জানানো হয়, অনধিক তিন মাসের মধ্যে প্রজননক্ষম হতে পারে এমন বকনা বাছুর কেনার জন্য ঋণ প্রদান করা যাবে। এক্ষেত্রে দেশি জাতের বকনা বাছুরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
প্রতিটি বকনা বাছুর কেনার জন্য ৪০ হাজার টাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। একজন চাষি সর্বোচ্চ চারটি বকনা বাছুর কিনতে পারবেন।
মোট ঋণের বরাদ্দের পরিমাণ ছয় হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। বিতরণ করা হয়েছে চার হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। মোট ঋণ গ্রহণকারীর সংখ্যা চার হাজার ১২১ জন। ক্রয়কৃত বকনা বাছুরের সংখ্যা সাত হাজার ৭৫১টি। কৃত্রিম প্রজননের সংখ্যা দুই হাজার ৮৫৪টি। আর ঘাস চাষ হয়েছে ৪৫৪ একর।
সভায় কোরবানির পশুর মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা বলেন, কোরবানির পশুর প্রক্রিয়াজাতে অবহেলা করলে মাংসে জীবাণু সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৬
একে/এএসআর
** দলিল ছাড়াই প্রান্তিকদের ৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার আহ্বান