ঢাকা: সারা দেশের মাংসপ্রেমীদের কাছে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার খাসির মাংসের এক বিশেষ চাহিদা আছে। কুষ্টিয়ার কালো জাতের দেশি জাতের ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ কেবল মাংসের স্বাদের জন্যই নয়, বিখ্যাত তার মোলায়েম সুন্দর চামড়ার জন্যও।
ঈদ- কোরবানি বা যেকোনো উৎসব-অনুষ্ঠানে ক্রেতার এ চাহিদাকেই কাজে লাগান ছাগল ব্যবসায়ীরা।
ঢাকার একমাত্র স্থায়ী পশুর হাট গাবতলীতে গিয়ে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা সারা দেশ থেকে ছাগল কিনে এনে রাজধানীতে তা কুষ্টিয়ার ছাগল হিসেবে বিক্রি করেন। তবে এতে তারা কোনো অন্যায় দেখেন না। এটি কোনো ধরনের প্রতারণা নয় বলেও দাবি ব্যবসায়ীদের।
গাবতলী হাটের স্থায়ী ছাগল ব্যবসায়ী আকতার হোসেনের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। কিন্তু সবার কাছে তিনি নিজের বাড়ি হিসেবে পরিচয় দেন ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ ছাগলের জন্য বিশেষ প্রসিদ্ধ মেহেরপুরের।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘এতে অন্যায় কিছু নেই। সবাই মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গার খাসি খোঁজেন। অন্য জেলার খাসি তারা কিনতে চান না। এ কারণে আমরাও কৌশল নিয়েছি। সারাদেশ থেকে ছাগল কিনি, কিন্তু কুইষ্টের কইয়েই বেঁচি। ’
ছাগল ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সাধারণত বৃহত্তর কুষ্টিয়ার ছাগলের মতোই একই মান রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাগুরা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের ছাগলের। এসব অঞ্চলের খাসির মাংসের মান ও স্বাদ কাছাকাছি। কিন্তু কুষ্টিয়ার না বললে ক্রেতারা তা কিনতে চান না। যে কারণে আমাদেরও মিথ্যা বলতে হয়’।
তিনি বলেন, ‘এমনিতেই বর্তমানে দেশে আসল দেশি ছাগলের সরবরাহ কমে গেছে। সবখানেই ছাগলচাষিদের ক্রস ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে উদ্ভাবিত শংকর জাতের কান লম্বা ছাগলের যোগান বেড়েছে। চাষীরা অধিক লাভের কারণেই ক্রস ব্রিডিং জাতের ছাগল পালন করছেন। এ পার্থক্যটা কিন্তু ক্রেতারা বুঝতে পারছেন না। তারা হাটে এসেই কেবল কুষ্টিয়ার ছাগল খোঁজেন। কিন্তু কোনটা কিনছেন, এটা বুঝতে চান না’।
ছাগল ব্যবসায়ী আকতার জানান, বর্তমানে হাটে দেশি জাতের এক কেজি খাসির মাংসর দাম সাড়ে ছয়শ’ টাকা পড়ছে। অন্যদিকে ক্রস ব্রিডিং কান লম্বা খাসির মাংসের দাম পড়ছে ছয়শ’ টাকা। ছাগির দাম পাঁচশ’ টাকার কম।
কোরবানিতে এ দাম বাড়তে পারে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৬
আরএম/এএসআর