দরিদ্র অর্ধশিক্ষিত এ যুবকটি যখন কোন কাজ না পেয়ে পথে পথে ঘুরছিলেন তখন তারই এক বন্ধু পরামর্শ দেন ফুল চাষ করার জন্য। মানিকও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে ফুল চাষ করবে, কিন্তু চাষের জন্য জায়গা কোথায় পাবে? অনুমতি নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে স্টেশনের পরিত্যক্ত জায়গাতে নানা ধরনের দেশি জাতের ফুল চাষ শুরু করেন এবং বাজারজাত করেন।
বর্তমানে বদরগঞ্জে ফুল চাষি বলতে মানিককে অনেকেই চেনেন। ফুল চাষ করে স্টেশন এলাকায় গড়ে তুলেছেন সুন্দর পরিপাটি নিজস্ব ফুলের দোকান। শুধুমাত্র ফুলের ব্যবসা করেই মানিক গ্রামে কয়েক বিঘা জমি কিনেছেন, পৌর শহরে তৈরি করেছেন বাড়ি। গাড়ি, ব্যাংক ব্যালেন্স সবই হয়েছে তার। দরিদ্র বেকার মানিক বর্তমানে সফল ফুল চাষি।
তিনি তার জমিতে গোলাপ, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ নানা ধরনের ফুল চাষ করেন।
সরেজমিন পৌর শহরের স্টেশন সংলগ্ন মানিক ফুল ঘরে গিয়ে কথা হয় সফল ফুল ব্যবসায়ী মানিকের সঙ্গে।
তিনি বলেন, একটা সময় কাজের জন্য সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি কিন্তু কোনো কাজ পাইনি। অভাবের কারণে বেশি লেখাপড়াও শিখতে পারি নাই। কীভাবে সংসার চলবে এ ভাবনায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম? পরে বন্ধুর পরামর্শে ফুল চাষ করেই আল্লাহর রহমতে আজ আমি স্বাবলম্বী। এই ফুলই আমাকে সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষিত বেকাররা অহেতুক চাকরির পেছনে না ঘুরে যদি পছন্দমত কোন কাজকে বেছে নেয় তবে আমার বিশ্বাস তারাও সফল হবে। এখন ভাল লাগছে এই ভেবে যে, আমার দোকান ও ফুলের জমিতে অনেক বেকার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। পরিশ্রম ও ইচ্ছা শক্তিই মানুষকে সফলতার দ্বার প্রান্তে নিয়ে যেতে পারে।
মানিকের প্রতিবেশী ও বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের সিনিয়র প্রভাষক সাইফুর রহমান রানু জানান, মানিককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। অনেকদিন তাকে দু-বেলা না খেয়ে থাকতে দেখেছি। তিনি খুব পরিশ্রমী ছেলে। পরিশ্রম করেই আজ তিনি এতদুর এগিয়েছেন।
বদরগঞ্জ উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় জানান, ফুল চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। মানিক এই উপজেলায় একজন সফল ফুল চাষি। মানিককে অনুকরণ করে কেউ যদি ফুল চাষে আগ্রহী হয়, আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করবো।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
আরএ